স্থিতিশীল বুদ্ধবাবু, কোভিডের কারণেই বাড়াবাড়ি বলছে উডল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ
মঙ্গলবার সকালে তাঁর ((Buddhadeb Bhattacharya)) শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে হঠাৎ ৮৮ তে নেমে যায়। এরপরই ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে।
কলকাতা: এই মুহূর্তে স্থিতিশীল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)। তবে তাঁর ফুসফুসে নানা সমস্যা ধরা পড়ছে। মঙ্গলবার প্রথম বুলেটিনে এমনটাই জানাল উডল্যান্ডস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, বুদ্ধবাবুর বুকের সিটি স্ক্যান হয়েছে। আগে থেকেই যেহেতু তাঁর সিওপিডির সমস্যা রয়েছে, সবদিক নজর রেখেই চিকিৎসা এগোবে। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎই প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন নামতে শুরু করে। চিকিৎসকরা কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। প্রথমে তাতে রাজি ছিলেন না বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। পরে পরিস্থিতির কথা বুঝিয়ে তাঁকে ভর্তি করা হয় উডল্যান্ডসে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৩২ নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েকদিন আগেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। উনি বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু ওনার অবস্থার একটু অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার হাসপাতালে আনা হয়। ওনার অক্সিজেন মাত্রা কমে যাচ্ছিল। স্যাচুরেশন লেভেল ৯০-এর নিচে নেমে যাচ্ছিল বলে জানান চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী। এরপরই একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা শুরু হয়। মেডিক্যাল বোর্ডে রয়েছেন চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী, সৌতিক পাণ্ডা, ধ্রুব ভট্টাচার্য, সোমনাথ মাইতি, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল।
কৌশিক চক্রবর্তী জানান, বুদ্ধবাবুর বুকের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। ওনার আগে থেকেই সিওপিডি রয়েছে। সে কারণে ফুসফুসে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। সেগুলি ক্রমবর্ধমান বলেই জানান তিনি। কৌশিক চক্রবর্তীর কথায়, “ফুসফুসে ওনার বেশি কিছু সমস্যা পেয়েছি। রেডিওলজিস্টের সঙ্গে কথা বলছি। এই মুহূর্তে ওনার অক্সিজেন ঘাটতি রয়েছে। আমাদের বাইপ্যাপ বা নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছে। এখন অক্সিজেন, বাইপ্যাপ, অ্যান্টিবায়োটিক চলছে। কোভিডের চিকিৎসার অন্যতম স্তম্ভ স্টেরয়েড, তাও দেওয়া হচ্ছে।” তবে চিকিৎসকরা জানান, জ্ঞান রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। কথা বলছেন তিনি। এদিন সন্ধ্যার মধ্যে বাকি রক্তের রিপোর্ট-সহ অন্যান্য পরীক্ষা করিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সমস্ত রিপোর্ট হাতে এলে আরও স্পষ্ট করে সবটা বলা যাবে।
তবে বুদ্ধবাবু যেহেতু সিওপিডির রোগী, সঙ্গে কোভিড রয়েছে, তাই কী কারণে হঠাৎ এই বাড়াবাড়ি আলাদা করে তা বলা মুশকিল হচ্ছে। রিপোর্টগুলি এলে তা স্পষ্ট করে বলা যাবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডার বক্তব্য, “আমাদের একটু সময় দিন। সামগ্রিক চিত্রটা স্পষ্ট হতে আরেকটু সময় লাগবে। প্রাথমিক ইনভেস্টিগেশন হয়েছে। এই মুহূর্তে উনি স্থিতিশীল। তবে ওনার যেহেতু সিওপিডি রয়েছে। সঙ্গে কোভিড। সুতরাং একটা সজাগ দৃষ্টি ওনার উপর রয়েছে। অনবরত পর্যবেক্ষণ চলছে।”