MGNREGA Dues: ‘রিপোর্ট খতিয়ে দেখে বঞ্চিতদের টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন’, কেন্দ্রের উদ্দেশে মন্তব্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির
Calcutta High Court: যাঁরা বৈধভাবে কাজ করেছেন, তাঁরা কেন বঞ্চিত হবেন? কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রশ্ন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানাম এদিন বলেন, "আদালত কোনওভাবেই কোনও অবৈধ কাজকে সমর্থন করে না। কিন্তু কিছু লোক তো বৈধভাবে কাজ করেছেন একশো দিনের কাজের প্রকল্পে।"
কলকাতা: একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টেও। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। যাঁরা বৈধভাবে কাজ করেছেন, তাঁরা কেন বঞ্চিত হবেন? কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রশ্ন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানাম এদিন বলেন, “আদালত কোনওভাবেই কোনও অবৈধ কাজকে সমর্থন করে না। কিন্তু কিছু লোক তো বৈধভাবে কাজ করেছেন একশো দিনের কাজের প্রকল্পে। রাস্তাও তৈরি হয়েছে। তাহলে তাঁরা কেন বঞ্চিত হবেন?”
উল্লেখ্য, রাজ্যের তরফে এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই কেন্দ্রের কাছে একটি কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেই বিষয়টিও এদিন উঠে আসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। কেন্দ্রের উদ্দেশে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য, “ওই কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট খতিয়ে দেখুন। তারপর টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।”
রাজ্যে একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে ভুয়ো জবকার্ডের একটি অভিযোগ উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রেও কারা আসল এবং কারা নকল, সেটি খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। এদিন মামলার শুনানিতে তাঁর মন্তব্য, “এখানে অনেক পচা আপেল আছে, তাই ভাল আপেল খুঁজে বের করতে হবে।” তিনি আরও প্রশ্ন করেন, “১০ ভাগ লোকের মধ্য়ে এক ভাগ লোকও যদি কাজ করে থাকেন, তাহলে তারা কেন টাকা পাবেন না?” প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, সবকিছু তো অবৈধ হতে পারে না। তিনি বলেন, “যাদের ভুয়ো জবকার্ড রয়েছে, তা টাকা পাবে না, সেটা ঠিকই। কিন্তু কারা আসল আর কারা নকল সেটাও খুঁজে বের করতে হবে।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং মন্তব্য করেছেন, একশো দিনের কাজে ভুয়ো জবকার্ডের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। একশো দিনের কাজের এই ইস্যুতে সিবিআই তদন্ত করতে চাওয়ার বিষয়টিও এদিন উঠে আসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে। কেন্দ্রের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা চাইছেন, সিবিআই অনুসন্ধান করুক। তদন্ত করুন। কিন্তু নিরীহ মানুষের টাকা কেন আটকে থাকবে?”
প্রসঙ্গত, এদিন মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী আদালতে জানান, ২০১২-২২ অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই হিসেব দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ জানান কেন্দ্রের আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, ভুয়ো জবকার্ড ও স্বচ্ছ্বতার অভাবের কারণে টাকা পাঠানো যায়নি।
সেই শুনে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই অনুসন্ধান শেষ হবে না। কেন্দ্রের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, একশো দিনের কাজে যে শ্রমিকরা কাজ করেছেন, সেই তথ্য যাচাই করে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। একইসঙ্গে রাজ্যের উদ্দেশেও প্রধান বিচারপতি বলেন, যতদিন পর্যন্ত না কেন্দ্র কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে, ততদনি রাজ্য যাতে শ্রমিকদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনা করে টাকা দেয়। আগামিকাল এই মামলার ফের শুনানি রয়েছে।