Calcutta High Court: প্রয়াত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ও ভোট দিয়েছেন! চার পুরভোটের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে হাইকোর্টে উল্লেখ করল বিজেপি
Calcutta High Court: কলকাতা পুরভোটের পর যেরকম নির্দেশ এসেছিলে, ঠিক একই রকমভাবে চার পুরসভার ভোটে যা যা ঘটেছে, তার উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
কলকাতা: ১০৮ পুরসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায় কিনা, জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিজেপির দায়ের করা মামলায় নির্দেশ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের। একই সঙ্গে দুয়ারে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান প্রকল্প ওই পুরএলাকায় বন্ধ রাখা যায় কিনা, তাও জানাতে হবে রাজ্যকে। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি। তার মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কলকাতা পুরভোটের পর যেরকম নির্দেশ এসেছিলে, ঠিক একই রকমভাবে চার পুরসভার ভোটে যা যা ঘটেছে, তার উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। মামলাকারীর আবেদন ছিল সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, একই ব্যক্তি একাধিকবার বুথে ঢুকছেন, কোনও বুথে ভোটার সংখ্যার বেশি ভোট পড়েছে, এমনকি বুথে এস জন কিংবা দুজন ভোটার রয়েছেন, অথচ শতাংশের বিচারে ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশ। এই সব বিষয়গুলি মামলাকারী এদিন আদালতের সামনে তুলে ধরেন। সেক্ষেত্রে ৪ পুরভোটের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮ পুরসভার ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানো যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখে জানাতে হবে। সর্বোপরি যাঁরা মনোনয়ন দিতে পারছেন না, তাঁরা কেন দিতে পারছেন না, সে সম্পর্কেও জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হবে, দুটো প্রকল্প কীভাবে চার পুরসভার নির্বাচনের সময়েও চলছিল? এখনও চলছে। যেখানে পুরভোট রয়েছে, সেখানে আদৌ কি এই দুটি প্রকল্প চালানো যায় কিনা?
হাতে তিন দিন সময় রয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি। বাকি ১০৮ টি পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ থাকছে কিনা, হাইকোর্ট তা জানাবে। এদিনের শুনানির সময়ে বিজেপি পক্ষের আইনজীবী রঞ্জিত কুমার সওয়াল করেন, “সব আত্মবিশ্বাস হারিয়ে গেছে। আগামী ১০৮ পুর ভোটে কীভাবে ভোট হবে? একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা পুরভোটে কী হয়েছে? ১০ ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। কিন্তু তেমনটা হল না।”
আইনজীবী অভিযোগ করেন, “দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধান প্রকল্প চলেছে। মৃত সঙ্গীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের ভোট পরে গিয়েছে। রিগিং, ভুয়ো ভোটার, ভয় ইত্যাদি রিপোর্ট হয়েছে। কমিশন কিছু বিশৃঙ্খলার কথা স্বীকার করেছে৷” এজি নিজেও চার পুরভোটে হিংসার কথা স্বীকার করেছেন। এরপরই মামলাকারীর আইনজীবী আর্জি করেন, নির্বাচন হওয়ার জায়গায় সরকার স্কিম বন্ধ করে দিক। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।
এই মামলার আরেক আবেদনকারী সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিধাননগরের বাসিন্দা। আইনজীবী সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক, তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বিধাননগরে হিংসার ঘটনা ঘটলে, ব্যক্তিগতভাবে কমিশনার দায়বদ্ধ থাকবে, সেটিও উল্লেখ করেন মামলাকারীর আইনজীবী।
এরপর কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্রা বলেন, “চার পুর সভার ভোট নির্বিঘ্নেই হয়েছে। ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে অর্থাৎ মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণে আপত্তি নেই।” পাশাপাশি এদিন রাজ্যের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়, ভোট আবহে যাঁরা নিরাপত্তা চেয়েছেন, তাঁদের সকলকেই তা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করেছে। এজি গোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০ টি অভিযোগের মাত্র ২ টি এফআইআর হয়েছে।
বুধবার সমস্ত সওয়াল জবাব শোনার পর প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ তিন দিনের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।