Jiban Krishna Saha: বিধায়ক নাকি ‘সেলসম্যান’! পুকুর ছেঁচে পাওয়া জীবনের মোবাইলের তথ্য দেখে আক্কেল গুড়ুম গোয়েন্দাদের

Jiban Krishna Saha: টাকা ফেরত দিতে বারবার ফোন করতেন চাকরি প্রার্থীরা! উত্তরে এফআইআর করার বা গ্রেফতার করার হুমকি দিতেন বিধায়ক! চ্যাট-হিস্ট্রিতে বিস্ফোরক তথ্য।

Jiban Krishna Saha: বিধায়ক নাকি 'সেলসম্যান'! পুকুর ছেঁচে পাওয়া জীবনের মোবাইলের তথ্য দেখে আক্কেল গুড়ুম গোয়েন্দাদের
সেই কথোপকথনের প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 08, 2023 | 1:28 PM

কলকাতা: বাড়ির ভিতরে তখন দুঁদে অফিসাররা। সবার চোখ এড়িয়ে বাড়ির পিছন দিকে গিয়ে পুকুরে মোবাইল ছুড়ে ফেলে দিলেন বিধায়ক। এই দৃশ্য বাংলার মানুষের মনে থাকবে বহুদিন। পাম্প বসিয়ে, পুকুর ছেঁচে ৬৬ ঘণ্টা ধরে কার্যত দক্ষযজ্ঞ চলেছিল সেই দুখানা মোবাইল খুঁজে বের করতে। জলে, পাঁকে আটকে থাকা সেই মোবাইল আদৌ কোনও কাজে লাগবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল গোয়েন্দা আধিকারিকদেরও। অবশেষে সেই মোবাইলের তথ্য এসেছে সিবিআই-এর হাতে। সেই চ্যাট দেখে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ‘সেলসম্যান’ বলেও ভুল হতে পারে।

টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। পুকুর ছেঁচে পাওয়া মোবাইলের চ্যাট খুলতেই বেরিয়ে আসছে সে সব তথ্য। সিবিআই সূত্রে যে চ্যাট হিস্ট্রির কথা জানা গিয়েছে, তা অনেকটা এরকম-

চাকরি প্রার্থী: হ্যালো স্যার শুভ বিজয়া। আপনি পুজোর মধ্যে সব টাকা ফেরত দেবেন বলেছিলেন।

জীবনকৃষ্ণ: পুজোর মধ্যে নয়। দ্বাদশী-ত্রয়োদশী-র মধ্যে টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল। তুমি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিও, আমি ট্রান্সফার করে দেব। কাল নয়, সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে ট্রান্সফার হয়ে যাবে। পেয়ে যাবে তোমার টাকা।

চাকরি প্রার্থী: ব্যাঙ্কে দেবেন?

জীবনকৃষ্ণ: হ্যাঁ ব্যাঙ্কে দেব। তোমার জন্য লোন নিতে হল। আপাতত ৬ লক্ষ দেব, বাকি টাকা পরে দেব।

চাকরি প্রার্থী: পরে কবে স্যার?

জীবনকৃষ্ণ: পরে কবে, সেটা দেখে নিচ্ছি। জায়গা-টায়গা বিক্রি হচ্ছে। ধীরে সুস্থে নিতে হবে। একবারে পারব না। আমাকে তো জানো, আমি এককথার মানুষ।

চাকরি প্রার্থী: আপনি বলেছিলেন একবারে দেবেন..

জীবনকৃষ্ণ: একবারে দেব বলেছিলাম। কিন্তু এখন কেউ শুনতে চাইছে না। সবাইকেই অর্ধেক টাকা দিয়েছি। একজন ১৭ লক্ষ পাবে, তাকে ৭ লক্ষ দিতে হবে। আসানসোল, সিউড়িতে সবাই ১৭, ১৮ লক্ষ টাকা করে পাবে। সময় লাগবে তবে দিয়ে দেব। বেশি খিটিমিটি করলে দেব না, যা পারবে করবে।

চাকরি প্রার্থী: কী আর করব স্যার, আপনি তো আছেন…

জীবনকৃষ্ণ: মার্কেটে একমাত্র আমিই দিয়েছি। আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ বলেছে, আপনি তো নিতে যাননি, আপনাকে বাড়িতে এসে টাকা দিয়েছে, আপনি চুপ করে বসে থাকুন। বেশি কিছু করবে তো আমি কিন্তু এফআইআর করে দেব।

চাকরি প্রার্থী: স্যার আমার টাকার দরকার। চারদিক থেকে প্রেশার আসছে। গ্রামের লোকেরা চারিদিকে দুর্নাম ছড়িয়ে দিচ্ছে।

জীবনকৃষ্ণ: ধৈর্য ধরতে হবে। এই নিয়ে বার বার ফোন করবে না। অ্যারেস্ট হয়ে যাবে।

এই কথোপকথন যাঁর সঙ্গে, তিনি চাকরির জন্য ১২ লক্ষ টাকা বিধায়ককে দিয়েছিলেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর। তবে, ১২ লক্ষই সর্বাধিক নয়। কেউ দিয়েছিলেন ১৭ লক্ষ, কেউ ১৮ লক্ষ। গোয়েন্দারা নয়, এ কথা বলছে খোদ বিধায়কের সেই চ্যাট হিস্ট্রি। এই কথোপথন থেকে আরও স্পষ্ট হচ্ছে যে, টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দিতে বা চাপে রাখতেও পিছপা হতেন না বিধায়ক।