Congress: ‘কর্মীদের ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত’, ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে ফের প্রাক্তনকে খোঁচা শুভঙ্ককরের?
Congress: জোটে না গিয়ে কংগ্রেস যে কোনও ‘ভুল’ করছে এদিন বারবার যেন তাই প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন শুভঙ্কর। স্পষ্ট করে বললেন, “ছ’টি উপনির্বাচনের লড়াই। নিজেদের শক্তি যাচাইয়ের লড়াই। একক শক্তিতে কর্মীরা অনেক বেশি উজ্জীবিত হয়। তাই সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
কলকাতা: বাম-কংগ্রেস জোট ভোট এলেই জোট নিয়ে শুরু হয়ে যায় চাপানউতোর। এবারও উপনির্বাচনের প্রাক্কালে তার অন্যথা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বামেরা কংগ্রেসের হাত ধরছে নাকি ধরছে না, সেদিকে পাখির চোখ ছিল রাজনৈতিক মহলের। যদিও শেষবেলায় এসে ভেস্তে গিয়েছে জোটের পরিকল্পনা। এদিকে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বারবারই ‘একলা চলো’ নীতির পক্ষেই জোরালো সওয়াল করে গিয়েছেন নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। উল্টে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বরাবরই সিপিএমের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে হাঁটার পক্ষে সওয়াল করেছেন। আসন সমঝোতার সেই ছবি দেখা গিয়েছিল শেষ লোকসভা নির্বাচনের সময়েও। কিন্তু উপনির্বাচনে এমনটা আর হল না। তাই আগামী নির্বাচনগুলিতেও বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের ভবিষ্যতে বড়সড় প্রশ্ন যে রয়েই যাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একক শক্তিতেই কংগ্রেস কর্মীরা উজ্জীবিত। তাই তাঁদের ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে এমনটাই দাবি করলেন নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
আগামী নভেম্বর মাসে রাজ্যে ছয়টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন। সেই উপনির্বাচনে একক শক্তি হিসেবে লড়াই করছে কংগ্রেস। জোট ভেঙেছে বামেদের সঙ্গে। সেই প্রসঙ্গেই এবার ফের একবার উঠে এল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে। দলের অন্দরের খবর, বামেদের সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ায় রীতিমতো উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর নেতা থেকে কর্মীরা। কেউ কেউ সরাসরি বলছেন, অন্যবারের তুলনায় এবার ফলাফল অনেক ভাল হবে। দলের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় আবার এক ধাপ এগিয়ে বামেদের কিছুটা হলেও খোঁচা দিয়ে বলেন, “এবার আমাদের ফল দেখবেন। অনেকের থেকে অনেক বেশি ভাল ফল হবে।”
আবার কতিপয় নেতা বললেন, দলকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ দলবাজি করে দলটাকে নিজের সম্পত্তি ভেবেছিলেন। কিন্তু, এবার দল একা লড়বে এবং ভাল ফল করবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার তো বলেই দিলেন, “সর্বভারতীয় স্তরে তাঁরা বা বামেরা ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আঞ্চলিক স্তরে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নিজ নিজ বৈশিষ্ট থাকে। সেইমতো তাঁরা লড়ছেন। আগামী দিন এই লড়াইয়ের উপরেই জোর দেওয়া হবে।”
একইসঙ্গে বললেন, শাসকদলের বিরুদ্ধে কোনও সংসদীয় বক্তব্য পেশ করা হবে না। বাংলার মানুষ যেটা নিয়ে বিরোধিতা করছেন সেই ধরনের বক্তব্যই প্রত্যেকে দেবেন। যা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশের মত, আসলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছুটা হলেও নরম অবস্থানই নিলেন বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। যদিও এর পাল্টা মতও উঠে আসছে।
তবে জোটে না গিয়ে কংগ্রেস যে কোনও ‘ভুল’ করছে এদিন বারবার যেন তাই প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন শুভঙ্কর। স্পষ্ট করে বললেন, “ছ’টি উপনির্বাচনের লড়াই। নিজেদের শক্তি যাচাইয়ের লড়াই। একক শক্তিতে কর্মীরা অনেক বেশি উজ্জীবিত হয়। তাই সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।” যদিও একদম শেষে শুভঙ্কর এও বললেন, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। একা একা কাজ করা যায় না। আর এখান থেকেই উঠছে প্রশ্ন। কোথাও কি নিজের অনুগতদের আবার সামনের সারিতে পেয়ে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে খোঁচা দিলেন বর্তমান সভাপতি? প্রশ্নটা ঘুরছে রাজনৈতিক মহলের আনাচে-কানাচে।