টিকা নিতে ধন্দ! অনিচ্ছুকদের ‘আর্কাইভ’ করার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য ভবনের
গত চারদিনে বাংলায় টিকাকরণের সংখ্যা ৩৭, ৩৯, ৩৮ এবং ৪৫!
কলকাতা: টিকা এসে গিয়েছে। কিন্তু তা নিতে চাইছেন না অনেকে। এই প্রেক্ষিতে করোনা টিকা নিতে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকর্মীদের চিহ্নিত করে তাঁদের ‘আর্কাইভ’ করার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য ভবন। অর্থাৎ, আর্কাইভে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের নাম আর টিকা প্রাপকের তালিকায় দেখা যাবে না।
দেশজুড়ে গণটিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে জানুয়ারি থেকে। কিন্তু গত চারদিনে বাংলায় টিকাকরণের সংখ্যা ৩৭, ৩৯, ৩৮ এবং ৪৫। রাজ্যজুড়ে করোনা টিকা কেন্দ্রের সংখ্যা ছশোর গণ্ডি ছাড়ালেও দিনের শেষে টিকাকরণের বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে রাজ্যে। অতিমারি পরিস্থিতিতে যখন সবাই টিকা কবে আসবে, সেদিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। কিন্তু বহু প্রতীক্ষিত সেই টিকা যখন চলে এসেছে, রাজ্যে টিকাকরণের এই বেহাল দশা কেন? স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এর কারণ হল কো–উইন পোর্টালের যান্ত্রিক গোলযোগ এবং টিকা নিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের অনিচ্ছা। স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ, একাধিকবার এসএসমএস পেয়েও ভ্যাকসিন নিতে টিকাকরণ কেন্দ্রে আসছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। পাশাপাশি তাঁরা টিকা নেবেন কি না, সেটাও স্পষ্ট করছেন না। এর ফলে টিকা নিতে যাঁরা ইচ্ছুক, তাঁদের কাছে মেসেজ পৌঁছচ্ছে না। ফলস্বরূপ স্বাস্থ্যকর্মীদের পরবর্তী ধাপে টিকাকরণের কাজ শেষ করতেও বিলম্ব হচ্ছে। সর্বোপরি টিকাকরণ কর্মসূচিতে অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশ পিছিয়ে পড়ছে বাংলা।
আরও পড়ুন: শুক্রবার খুলছে, সংশয় কাটিয়ে আদৌ কতটা প্রস্তুত রাজ্যের স্কুলগুলি?
এই পরিস্থিতিতে বুধবার রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির সঙ্গে একটি ভিডিও কনফারেন্স করেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। সেই বৈঠকে অনিচ্ছুকদের চিহ্নিত করে আর্কাইভ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “অনিচ্ছুকদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল। তা না হলে রাজ্যের টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় গতি আনা সম্ভব নয়। অনন্তকাল ধরে কারও জন্য অপেক্ষা করা তো যায় না!” এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত হল একবার আর্কাইভ হলে পরে ওই ব্যক্তিকে টিকা নিতে হলে আবার আনআর্কাইভ করতে হবে। আর তার জন্য তাঁকে সশরীরে স্বাস্থ্য ভবনে আসতে হবে। সেই অভিজ্ঞতা ‘সুখকর’ হবে না বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই এক সমীক্ষায় প্রকাশ হয় করোনা টিকা নিতে চাইছেন না দেশের প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ। বাকি ৬৮ শতাংশ ভ্যাকসিন নিতে চান, কিন্তু তাঁদের সিংহভাগের মনের মধ্যে আবার কাজ করছে করোনা প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা।