মিমির অভিযোগের আগেই এফআইআর! তারপরও অবাধ বিচরণ দেবাঞ্জনের, প্রশ্নের মুখে প্রশাসন

পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরের এক সপ্তাহ কী ভাবে ওই ব্যক্তি অধরা ছিল? কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ?

মিমির অভিযোগের আগেই এফআইআর! তারপরও অবাধ বিচরণ দেবাঞ্জনের, প্রশ্নের মুখে প্রশাসন
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 23, 2021 | 7:54 PM

কলকাতা: কসবার ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্পের মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেবকে জেরা করে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবাঞ্জনের ভুয়ো পরিচয়ের বিষয়টি গত ১৩ জুন পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের নজরে আসে। এরপর এফআইআর দায়ের হলেও এক সপ্তাহ দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সাংসদ মিমি চক্রবর্তী সেখানে টিকা নিয়ে সন্দেহ হওয়ার পরই পুরো জালিয়াতির পর্দাফাঁস হয়।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, গত ১৩ জুন পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের নজরে আসে, দেবাঞ্জন দেব তাঁর সই জাল করে পুরসভার আইডি কার্ড বানিয়েছেন। তাতে যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে নিজেকে দাবি করেছেন তিনি। এমনকী, একজনের আবেদনপত্রে গেজেটেড অফিসার হিসেবে সই করেছেন! সেই আবেদনপত্রের সঙ্গে নিজের আইডি কার্ডের জেরক্স জুড়ে দেন দেবাঞ্জন। সেই আবেদনপত্র কোনওভাবে পুরসভার কমিশনারের হাতে এসে পৌঁছয়। তা দেখেই চমকে ওঠেন বিনোদ কুমার।

বিষয়টি নজরে আসার পরই পুর কমিশনার কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে সবিস্তারে ঘটনাটি জানান। তারপরই গত ১৫ জুন কলকাতা পুরসভার তরফে দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু এখন পুরসভার অন্দরে প্রশ্ন, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরের এক সপ্তাহ কী ভাবে ওই ব্যক্তি অধরা ছিল? কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ?

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিয়ে তথ্য নেই পুরসভা-স্বাস্থ্য দফতরের কাছে, কসবার ভুয়ো ক্যাম্পে কী দেওয়া হল কয়েক’শ লোককে?

ভুয়ো টিকাকরণের ক্যাম্পের পর্দাফাঁসের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তবে কি টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীরাও ভুয়ো ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জন নিজেই ভুয়ো টিকা প্রদানকারীদের জোগাড় করেছিলেন। ক্যাম্পে টিকা নিতে আসা মানুষের মনে যাতে কোনও সন্দেহ তৈরি না হয়, তাও নিশ্চিত করে চেয়েছিলেন এই ভুয়ো আইএএস। তাই গোটা বিষয়টিকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে যাঁদের টিকা প্রদানের কাজে আনা হয়েছিল, তাঁদের সকলকে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের মতো করে পোশাক পরানো হয়। ঝোলানো হয় ভুয়ো আইকার্ডও। বর্তমানে টিকা প্রদানকারী সেই ভুয়ো স্বাস্থ্যকর্মীদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: কসবার সেই ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পে টিকা নিয়েই খটকা লেগেছিল মিমির! পাকড়াও ‘আইএএস’

গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একটি বিষয় পরিষ্কার হয়নি। তা হল, গত ১০ দিন ধরে যে ভ্যাকসিনগুলি এলাকাবাসীকে দেওয়া হল, বা যে ভ্যাকসিন খোদ সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নিলেন, তা আসল ছিল না নকল? কারণ, পুরসভা ও স্বাস্থ্য ভবন জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনও ভ্যাকসিন ওই ক্যাম্পে দেয়নি। ধৃত দেবাঞ্জন জানিয়েছে, বাগড়ি মার্কেট থেকে এই ভ্যাকসিন কিনেছে। ভ্যাকসিনের গুণগত মান যাচাই করতে ইতিমধ্যেই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে তবেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। তার আগে পর্যন্ত কঠিন উৎকন্ঠায় রয়েছেন ভ্যাকসিন প্রাপকরা।

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন এসেছিল বাগড়ি মার্কেট থেকে, দাবি ‘অস্কারে মনোনীত’ দেবাঞ্জনের