‘ঘোরের মধ্যে শুনলাম কারা যেন বলল টেনে বের করে আনতে হবে’, মধ্য রাতে কলকাতায় ভয়াবহ ঘটনা

Burrabazar: ভোর রাতে তিনটে নাগাদ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে বাড়িটি। বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা।

'ঘোরের মধ্যে শুনলাম কারা যেন বলল টেনে বের করে আনতে হবে', মধ্য রাতে কলকাতায় ভয়াবহ ঘটনা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 7:24 AM

কলকাতা: ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। তখন সাড়ে তিনটে হবে। আচমকাই একটা বিকট শব্দ! যেন কিছু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল। মনে হল যেন মাথার ওপর ছাদটাই ভেঙে পড়েছে। ঘুমের মধ্যে প্রথমটায় আঁচ করা সম্ভবই হয়নি। চোখ খুলতে দেখা যায়, বাড়ি নিরাপদ। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কানে ভেঙে আসে আর্তনাদ। পাড়ার অনান্য প্রতিবেশীরা তখন বাইরে ছুটোছুটি করছেন, চিত্কার করছেন। কেউ চেঁচিয়ে বলছেন. ‘টেনে বার করে আনতে হবে…’ঘরের দরজা খুলে বেরোতেই যেন সত্যি হল দীর্ঘদিনের আশঙ্কা। বড়বাজারে আবারও শতাধিক বছরের পুরনো জরাজীর্ণ এক সংস্কারহীন বাড়ি ভেঙে পড়ল আর তার অভিজ্ঞতা শোনা গেল স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়। ওই বাড়িটিতে কেউ না থাকলেও পাশের বাড়ির এক মহিলা ভিতরে আটকে পড়েছেন।

রবিবার ভোর রাতে বড়বাজারের এক নম্বহ বাবুলাল লেনের একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ে। বাড়িটি চার তলা। সেটি পরিত্যক্ত। দীর্ঘদিন তাতে সংস্কার হয় না। বাড়িটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল। রবিবার ভোর রাতে সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাড়িটির অবস্থা আরও খারাপ হয়।

ভোর রাতে তিনটে নাগাদ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে বাড়িটি। বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। বাড়িটির অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় পুরকর্তাদের নির্দেশে গত ৩-৪ বছর ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না। কারণ তখনও ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল। তারপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল। তাই প্রত্যক্ষদর্শীরা ভেবেছিলেন, বাড়ি ভেঙে পড়লেও, হতাহতের কোনও আশঙ্কা নেই।

কিন্তু ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকেই গোঙানির শব্দ ভেসে আসে স্থানীয়দের কানে। প্রথমটায় বুঝতে একটু অসুবিধা হয়। পরে বুঝতে পারেন, পরিত্যক্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ পাশের বাড়ির ওপর পড়েছে। সেখানে চাপা পড়ে গিয়েছেন এক মহিলা।

স্থানীয়রাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধার কার্যে হাত লাগান। ধ্বংসস্তূপের সরিয়ে নীচ থেকে টেনে বার করে আনার চেষ্টা করা হয় মহিলাকে। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ততক্ষণে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে।

তবে এই ঘটনায় আরও একবার আতঙ্ক ধরাল শহরের বুকে। বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে এরকম একাধিক পুরনো বাড়ি। পুরসভার রেকর্ডে শহরে বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। কিন্তু বিপজ্জনক অংশ না ভাঙার ফলে যে ঝুঁকির আশঙ্কা, তাতে পুরসভার ভুমিকা কী? প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক মহলে। সরকারি হিসেবে ৩ হাজার বলা হলেও বেসরকারি হিসেব অন্যই বলছেন বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা। তাঁদের কথায়, শহরে এমন ক’টা বাড়ি রয়েছে, তার তথ্যও নেই পুরসভার কাছে। কেউ অভিযোগ করলে তখন পুরসভা জানতে পারে যে সংশ্লিষ্ট নির্মাণটি বেআইনি। বরোভিত্তিক দল থাকলেও পুরকর্মীর অভাবে অনেক সময়েই বেআইনি নির্মাণের উপর নজরদারির কাজটা ঠিক ভাবে করা যায় না বলে পুরসভা সূত্রের খবর। আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে ভবানীভবনে তলব! প্রাক্তন দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যু মামলায় ডাকল সিআইডি