Health Commission: ২৩ দিনে রোগীকে ২৮ হাজার টাকার অন্তর্বাস পরিয়েছে হাসপাতাল, বিল দেখে কপালে হাত স্বাস্থ্য কমিশনেরও

Health Commission:পাল্টা বিবৃতি জারি করে কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করল ওই বেসরকারি হাসপাতালও।

Health Commission: ২৩ দিনে রোগীকে ২৮ হাজার টাকার অন্তর্বাস পরিয়েছে হাসপাতাল, বিল দেখে কপালে হাত স্বাস্থ্য কমিশনেরও
বেসরকারি হাসপাতালের বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 14, 2022 | 11:18 PM

কলকাতা: ২৩ দিনে ২৮ হাজার ৫০০ টাকার শুধু আন্ডারপ্যান্ট পরানো হয়েছে রোগীকে। ৯৬ হাজার টাকা অতিরিক্ত বিল করে ৮৪ হাজার টাকা ডিসকাউন্ট। মানা হয়নি অ্যাডভাইজরি‌ও। সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত  স্বাস্থ্য কমিশন।‌ পাল্টা বিবৃতি জারি করে কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করল ওই বেসরকারি হাসপাতালও। কমিশন জানিয়েছে, বছর ৫৬’র এক মহিলা ওই বেসরকারি হাসপাতালে ২৩ দিন ভর্তি ছিলেন। এরপর মারা যান তিনি। কমিশন জানায়, তাঁর কোমর্বিডিটি ছিল। তবে মূল সমস্যা যেহেতু গ্যাস সংক্রান্ত, তাই ভর্তি ছিলেন গ্যাসট্রো বিভাগে।

অভিযোগ, ৩০ মে ওই রোগীর পরিবার স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানায়, বেসরকারি ওই হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে। অভিযোগ তোলে, রোগীকে কম্বুটল ৮০০ দিতে বলেছিলেন ডাক্তার। অথচ নার্সিং কর্মী ভুল করে কম্বিউনেক্স ৮০০ নামে অন্য একটি ওষুধ রোগীকে দেন। এটা একটা কম্বিনেশন ড্রাগ। ওই রোগীর জন্য এই ওষুধ ডবল ডোজ়ের সমান ছিল। যদিও সঙ্গে সঙ্গে তা ধরা পড়ে, ভুল স্বীকারও করে নেয় হাসপাতাল। অন্যদিকে ওই রোগীর পরিবারের অভিযোগ ছিল, এমন অ্যান্টিবায়োটিক রোগীকে দেওয়া হয়েছিল, যা দেওয়া উচিৎ হয়নি। কমিশন অবশ্য জানায়, এটা তাদের বলার বিষয় নয়। তাই বলা হয়, যথাযথ জায়গায় অর্থাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে।

স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আরও কিছু ইস্যু এই কেসটায় উঠে আসে। আমরা যে কোনও কেসেই হাসপাতালের কাছে রিভিউ করতে পাঠাই। কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে যতটা মিটিয়ে নেওয়া যায়। এরপরই রোগীর পরিবার জানায়, হাসপাতাল তাদের ডেকে কিছু টাকা ডিসকাউন্ট দেবে বলেছে। আমরা সব কেসে বিল রিভিউ করি। এ ক্ষেত্রে দেখি চালাকি করে হাসপাতাল একটা বড় অঙ্কের টাকা বাড়িয়ে বলছে ডিসকাউন্ট দিয়েছে। আসলে কমায়নি। বিল বেশি করেই ওই ডিসকাউন্ট অফার।”

এরপরই ফের বিল পরীক্ষা করে হতবাক হয়ে যায় কমিশন। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পেশেন্ট ২৩ দিন ভর্তি ছিল। ১৯৭টা আন্ডারপ্যান্টের বিল করা হয়। ৬টা আন্ডারপ্যান্ট ফেরত দেওয়া হয়। মানে ১৯১টা ব্যবহার করেছে ২৩ দিনে। সঙ্গে ১৪টা ডায়াপার। নার্সিং ইনচার্জকে ডেকে পাঠাই আমরা। তাঁর যুক্তি, পেশেন্টের লুজ টুল হচ্ছিল। কিন্তু তা হলে তো রোগীকে ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন। উত্তরে ওই নার্সিং ইনচার্জ জানান, বেড সোরের আশঙ্কা থেকে আন্ডারপ্যান্ট ব্যবহার করেছেন। তাহলে ১৫০ টাকা দরে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা বিল করেছে শুধু আন্ডারপ্যান্ট। সঙ্গে ডায়াপার ধরলে ৩২-৩৩ হাজার টাকা। আমরা এটা হাইলাইট করেছি।” বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য বলা হয়েছে কমিশনের তরফে।

যদিও এ প্রসঙ্গে ওই বেসরকারি হাসপাতাল জানায়, সমস্ত কিছুই রোগীকে দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। রোগীর যে পরিমাণ আন্ডারপ্যান্ট, ডায়াপার লেগেছে, তা তাঁর শারীরিক অবস্থা ও অসুস্থতার কথা মাথায় রেখেই দেওয়া হয়েছে। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। চিকিৎসার যে প্রোটোকল তা মেনেই সমস্ত কিছু করা হয়েছে। রোগীর পরিবারের লোকজন রোগীর অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত ওয়াকিবহালও ছিলেন। রোগীর পরিবার চিকিৎসা চলাকালীন কোনওরকম আপত্তি জানাননি। হাসপাতালে রোগীকে রাখা নিয়েও কিছু বলেননি।