Cyclone Asani: দুর্যোগের মধ্যে আবার ভাসবে না তো তিলোত্তমা? পুরনিগমের বিশেষ নজর বেহালা-বডিগার্ড লাইনে
Kolkata Municipal Corporation: নিকাশি ব্যবস্থা, পার্ক এবং স্কোয়ার, আলো, বরো, সিভিল, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেলের মতো বিভাগগুলিকে জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের সময় যেভাবে করা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, সেই সব ধরনের প্রস্তুতি এই বারও নিতে বলা হয়েছে।
কলকাতা : সাগরে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। এগিয়ে আসছে পূর্ব উপকূলের দিকে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় শেষ পর্যন্ত পূর্ব উপকূলের কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু আগেভাগেই সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে কলকাতা পুরনিগম। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে, ১০ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত কিংবা নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত পুরনিগমের সমস্ত কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা, পার্ক এবং স্কোয়ার, আলো, বরো, সিভিল, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেলের মতো বিভাগগুলিকে জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের সময় যেভাবে করা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, সেই সব ধরনের প্রস্তুতি এই বারও নিতে বলা হয়েছে।
জোয়ার ভাটার সময়ে প্রয়োজন অনুসারে স্লুইস গেট বা খালের জলের বেরোনোর গেটগুলি খোলা বা বন্ধের জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে বলা হয়েছে পুরনিগমের কর্মীদের। পূর্বাভাসের কথা মাথায় রেখে বরোগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পাম্প প্রস্তুত রাখতে হবে৷ জরুরী স্থাপনার জন্য পাম্পগুলি যাতে তৈরি থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য ডিজি(পার্ক) এবং ডিজি(সিভিল)-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি হাইড্রোলিক মই,গাছ কাটার জন্য বিশেষ করাত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরনিগমের তরফে। ঝড়-বৃষ্টির সময় কোথায় জলমগ্ন হয়ে গেলে সেখানে যাতে বৈদ্যুতিক কারণে কোনও বিপদ না হয়, তা নিশ্চিত করতে ডিজি (লাইটিং) কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁকে এই বিষয়ে প্রয়োজনে সিইএসই-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে এগোতে বলা হয়েছে। পানীয় জলের সঙ্কট এড়াতে পাম্পগুলিকে সচল রাখার জন্য পোর্টেবল জেনারেটর সেট করার জন্যও বলা হয়েছে।
শহরে যাতে বেশিক্ষণ জল জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য যে সব জায়গায় জল জমে, সেই সব জায়গায় পাম্পগুলি বসছে কি না, তা দেখতে বলা হয়েছে নিকাশি বিভাগকে। বিশেষ করে বডিগার্ড লাইনে এবং বেহালার বিভিন্ন জায়গা যেখানে জল জমে, সেখানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনে যাতে পাম্প বসানো যেতে পারে, তার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কন্ট্রোল রুম ডিউটি রোস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের বিভ্রাটের কারণে পানীয় জলের সঙ্কট যাতে না হয়, এড়াতে পাম্পিং স্টেশন এবং ডিপ টিউবওয়েলগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পোর্টেবল জেনারেটর সেটগুলির রিকুইজিশন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অশনির কথা মাথায় রেখে বরো ভিত্তিক ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ১৩ জন মেয়র পরিষদ সদস্যকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ১৩ জন মেয়র পরিষদ সদস্যকে দেওয়া হল একটি বা দুটি বরোর দায়িত্ব। ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পরিষদ সদস্য অতীন ঘোষকে দেওয়া হয়েছে বরো ১ এবং ২-এর দায়িত্ব। স্বপন সমাদ্দারকে দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে বরো ৩-এর। আমিরুদ্দিন ববিকে বরো ৪-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জীবন সাহাকে বরো ৫, সন্দীপন সাহাকে বরো ৬, দেবাশিস কুমারকে বরো ৭, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়কে বরো ৮, সন্দীপ রঞ্জন বক্সিকে বরো ৯, মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বরো ১১, দেবব্রত মজুমদারকে বরো ১০ ও ১২, তারক সিংকে বরো ১৩ ও ১৪, রাম প্যায়ারে রামকে বরো ১৫ এবং অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে বরো ১৬-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি খারাপ হলে এই মেয়র পরিষদ সদস্যদের বরো অফিসগুলিতে নিশিযাপন করে পরিস্থিতি মোকাবিলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।