অনলাইনে ক্লাস চলছিল, ছেলের পরনে ইউনিফর্ম, তখনই মায়ের সঙ্গে সেই কাণ্ড! পর্ণশ্রী খুনে নয়া মোড়
Parnasree: এছাড়াও যে ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস চলছিল, সেটিও উধাও। সেই ফোনে কিছু তথ্য প্রমাণ থেকে যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
কলকাতা: পরনে তখনও ছিল স্কুল ড্রেস, গলায় টাই বাঁধা ছিল! ঠিক ওই অবস্থাতেই বিছানায় পড়ে ছিল তমজিতের দেহ। পর্ণশ্রীতে মা ও ছেলের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে। সোমবারই পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকায় একটি বহুতলে বছর চল্লিশের সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁঁর ছেলে বছর বারোর তমোজিতের গলা নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তকারীরা বলছেন এই ঘটনার পরতে পরতে রয়েছে রহস্য।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তমজিত মন্ডল স্কুল ড্রেস পরা অবস্থাতেই বিছানায় পড়ে ছিল। বিকালে আর পাঁচ দিনের মতো নির্দিষ্ট সময়েই প্রাইভেট টিউটর আসেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, তিনি গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ডাকাডাকির পর দরজাও ধাক্কান। তারপর চলে যান। প্রাথমিক অনুমান অনলাইনে ক্লাস চলাকালীন ওই ছেলেটিকে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়াও যে ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস চলছিল, সেটিও উধাও। সেই ফোনে কিছু তথ্য প্রমাণ থেকে যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পাশেই তাঁর মায়ের দেহ পড়ে ছিল। পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। ইতিমধ্যে সুস্মিতার স্বামী পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী তপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে গৃহশিক্ষককেও। গোটা ঘটনাস্থল পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার মুড়ে ফেলেছে। ফ্ল্যাটের বাকি আবাসিকদের ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে বলে খবর। গৃহকর্তাকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে খবর। তবে এই ধরনের ঘটনা কখনই এলাকায় ঘটেনি বলে দাবি স্থানীয়দের।
যেহেতু ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে খুন করা হয়েছে, এবং কোনও চিৎকার বা শোরগোল শুনতে পাওয়া যায়নি, সেই কারণে পরিচিত কেউ এই খুন করে থাকতে পারে, সেই তত্ত্বও খারিজ করে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার বাসিন্দা তপন আর পাঁচ দিনের মতো নি্দিষ্ট সময়ে ফেরেন। তপনের বয়ান অনুযায়ী, বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পড়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নিথর দেহ। সামনে গিয়ে দেখতে পান, দুজনের গলার নলি নৃশংসভাবে কেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যখন ফেরেন, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল বলেই দাবি করেন। এদিকে, যখন গৃহশিক্ষকের বয়ান অনুযায়ী, ফ্ল্যাটের দরজা ছিল বন্ধ। ফলে ধোঁয়াশা সেখানেই।
একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। যেহেতু তপনবাবুর পরিবারের সদস্য মাত্র ৩-ই ছিল, তাই চেনাশোনা কোনও ব্যক্তি ছাড়া এই ঘটনা ঘটনো একপ্রকার অসম্ভব বলেই ধারণা পুলিশের। কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা জানতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই আবাসনের সিসিটিভি অচল বলে জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। আরও পড়ুন: গলার নলি কাটা, রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা, পড়ে মা-ছেলের নিথর দেহ! নৃশংসতার চরম নজির বেহালায়