Kunal Ghosh: অধিকারী পরিবারের সাংসদকে তৃণমূলের সভায় ‘আমন্ত্রণ’ কুণালের
Kunal Ghosh: কুণাল ঘোষ টুইটারে লিখেছেন, "তিনি বরং ১৭ তারিখ কাঁথিতে ২১ জুলাই কর্মসূচির সমর্থনে দলের সভায় আসুন এবং পরের দিন দলের সিদ্ধান্ত মেনে কলকাতায় ভোট দিন।"
কলকাতা : অধিকারী পরিবারের সাংসদদের কি তৃণমূলের সভায় আমন্ত্রণ করলেন কুণাল ঘোষ? তৃণমূল মুখপাত্রের একটি টুইট থেকে তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। যদিও ওই টুইটে শিশির অধিকারী বা দিব্যেন্দু অধিকারীর নাম উল্লেখ করেননি কুণাল। তবে তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূলের থেকে নির্বাচিত কোনও সাংসদে’র কথা। আর এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। মূলত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অধিকারী পরিবারের সাংসদরা কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে যে বিস্তর জল্পনা ছড়িয়েছে, সেই সূত্র ধরেই এই ‘আমন্ত্রণ’ পাঠালেন তৃণমূল মুখপাত্র। তবে কেন হঠাৎ, তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া শান্তিকুঞ্জের সাংসদদের প্রতি এমন আমন্ত্রণ পাঠালেন কুণাল ঘোষ?
আগামী সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। জমে উঠেছে রাইসিনার রেস। কে হবেন রামনাথ কোভিন্দের উত্তরসূরি, তাই নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ধারে-ভারে অনেকটাই এগিয়ে এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। অন্তত সাংসদ ও বিধায়ক সংখ্যার তুলমূল্য হিসেবে এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে উল্টোদিকে যিনি রয়েছেন, বিরোধী প্রার্থী যশোবন্ত সিনহা, তিনিও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে প্রচার সারছেন। তিনি আবার তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। তৃণমূল শিবিরে এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে ব্যস্ততা তুঙ্গে। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের বিধায়ক – সাংসদ সকলেই রাজ্য বিধানসভাতেই ভোট দেবেন। দলের তরফ থেকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে শান্তিকুঞ্জের দুই সাংসদের কাছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে কোনও নির্দেশ দলের তরফে যায়নি বলেই সূত্রের খবর।
শুনলাম @AITCofficial থেকে নির্বাচিত কোনো MP বলেছেন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকেই ভোট দেবেন, কিন্তু দিল্লি গিয়ে গোপন ব্যালটে দেবেন। তিনি বরং 17/7 কাঁথিতে 21 জুলাই কর্মসূচির সমর্থনে দলের সভায় আসুন এবং পরদিন দলের সিদ্ধান্ত মেনে কলকাতায় ভোট দিন। না হলে বুঝব মিথ্যা।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 15, 2022
তবে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে চান। দিব্যেন্দু অধিকারীও ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, দলের থেকে তিনি কোনও নির্দেশ পাননি এবং সেই সময় তিনি দিল্লিতে থাকবেন। তাই সংসদ ভবনেই ভোট দেবেন তিনি। তবে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া শান্তিকুঞ্জের দুই সাংসদ কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। এবার সেই চর্চা আরও উস্কে দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একটি টুইটে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, “শুনলাম তৃণমূল থেকে নির্বাচিত কোনও সাংসদ বলেছেন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু দিল্লিতে গিয়ে গোপন ব্যালটে দেবেন।”
সেই সঙ্গে কুণাল আরও লিখেছেন, “তিনি বরং ১৭ তারিখ কাঁথিতে ২১ জুলাই কর্মসূচির সমর্থনে দলের সভায় আসুন এবং পরের দিন দলের সিদ্ধান্ত মেনে কলকাতায় ভোট দিন। না হলে বুঝব মিথ্যা।” তবে কুণাল ঘোষের এই টুইটের পর অধিকারী পরিবারের তরফে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উল্টে কুণাল ঘোষকে তাঁর পরামর্শ, “এর আগে যখন সারদায় জেলে ঢুকেছিলেন, তখন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে যে ধরনের মন্তব্য করেছিলেন, তার জন্য নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চান।”
উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে শুধুমাত্র অধিকারী পরিবারের সাংসদদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের অবস্থান ঘিরেই নয়, এর পাশাপাশি আরও কয়েকজনকে নিয়েও চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। যেমন, কিছুদিন আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অর্জুন সিং। তবে তিনি এখনও সাংসদ পদ ছাড়েননি। অর্থাৎ, খাতায় কলমে তিনি এখনও বিজেপির টিকিটে জয়ী সাংসদ। সে ক্ষেত্রে তিনি কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়েও চর্চা চলছে। পাশাপাশি, মুকুল রায় – যাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এত বিতর্ক, তিনিই বা কাকে ভোট দেবেন, তাও রয়েছে আতসকাচের তলায়।