Weather of Bengal: ৮ দিন ধরে গজগমনে নিম্নচাপ! পড়শি ভাসছে, এ বার বিপদ বাংলার?

Weather of Bengal: ১৬ অগস্ট বাংলা-বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। প্রাথমিক পূর্বাভাস ছিল, নিম্নচাপ খানিকটা শক্তি বাড়িয়ে বাংলার দিকে সরে আসবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২২ অগাস্ট পর্যন্ত নিম্নচাপের শক্তি বাড়েনি, বাংলার দিকেও সরে আসেনি।

Weather of Bengal: ৮ দিন ধরে গজগমনে নিম্নচাপ! পড়শি ভাসছে, এ বার বিপদ বাংলার?
কী বলছে হাওয়া অফিস? Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2024 | 10:13 PM

কলকাতা: প্রকৃতির রোষে বিপদে বাংলাভাষীরা! ত্রিপুরা ভাসছে। বাংলাদেশ ভাসছে। এ বার দুর্যোগের মুখে দক্ষিণবঙ্গ। ভিলেন ৮ দিন ধরে গজগমনে চলা নিম্নচাপ! ধীরগতির সেই নিম্নচাপ টিমে নতুন সঙ্গীও পেয়েছে! শুক্রবারই বঙ্গোপসাগরে জন্ম হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্তের। সবমিলিয়ে, সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। অর্থাৎ, কোথাও কোথাও দিনে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। একই পূর্বাভাস ঝাড়খণ্ডেও। দামোদর উপত্যকায় অতিবৃষ্টি মানেই দক্ষিণবঙ্গের বিপদ অনিবার্য। আশঙ্কা বাড়িয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। আপাতত প্রাথমিক পর্যায়ের বন্যা সতর্কতা জারি করে ৩৬ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ছে ডিভিসি। বৃষ্টি বাড়লে সতর্কতার রং বদলাবে, জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়বে। উদ্বেগ সেখানেই। 

১৬ অগস্ট বাংলা-বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। প্রাথমিক পূর্বাভাস ছিল, নিম্নচাপ খানিকটা শক্তি বাড়িয়ে বাংলার দিকে সরে আসবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২২ অগাস্ট পর্যন্ত নিম্নচাপের শক্তি বাড়েনি, বাংলার দিকেও সরে আসেনি। নড়াচড়া যেটুকু, সেটা সামান্যই। ১৭ থেকে ১৯ অগস্ট পর্যন্ত দক্ষিণ বাংলাদেশের উপর ঠায় দাঁড়িয়েছিল নিম্নচাপ। ২০ অগাস্ট নিম্নচাপ সরে মধ্য বাংলাদেশের উপর। ২১-২২ অগাস্ট অবস্থান ছিল উত্তর বাংলাদেশের উপর। ২৩ অগাস্ট অর্থাৎ শুক্রবার তুলনায় গতি বেড়েছে নিম্নচাপের। বাংলাদেশ ছেড়ে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বাংলার উপর সরেছে নিম্নচাপ। এ বার আরও পশ্চিমে সরে যাওয়ার পালা। অর্থাৎ, এখনই নিঃশেষ নয়, আরও দীর্ঘায়ু হবে নিম্নচাপ।

দীর্ঘায়ু নিম্নচাপ! খানিকটা হলেও অস্বাভাবিক। নয়াদিল্লি মৌসম ভবনের আবহবিদ রাজেন্দ্র জেনামনি বলছেন, ”জুলাই-অগাস্ট মাসে সাধারণ নিম্নচাপের আয়ু গড়ে ৩-৪ দিন হয়। যদি না গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।” এ বার অন্যথা হল কেন? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের ব্যাখ্যা, ”বাধা ছিল, তাই নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগর থেকে বেশি দূরে সরতে পারেনি। জলীয় বাষ্পের জোগান থাকায় দুর্বলও হয়নি।” কেমন সেই বাধা? হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের মন্তব্য, ”বায়ুমণ্ডলের মধ্য ও উপরের স্তরের বাতাসের প্রবাহ অনুকূল ছিল না। ফলে বাংলাদেশের উপরেই দীর্ঘদিন আটকে ছিল নিম্নচাপ। পশ্চিমী অক্ষরেখার বাধাও ছিল। তাই দ্রুত বাংলাদেশ থেকে বাংলার দিকে সরে আসতে পারেনি।”

নিম্নচাপ বাংলাদেশের উপর ঠায় দাঁড়িয়ে থাকায় পড়শি দেশে একটানা বৃষ্টি হয়েছে। ফুলেফেঁপে উঠে দু’কূল ভাসিয়েছে একাধিক নদী। নিম্নচাপের অবস্থান এমন ছিল, বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা-পুবালি বাতাস ক্রমাগত ত্রিপুরা, মেঘালয়, অসমেও ঢুকেছে। পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে বৃষ্টি নামিয়েছে জোলো বাতাস। সক্রিয় বর্ষা, নাগাড়ে বৃষ্টি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ত্রিপুরার। 

এরই মধ্যে আবার নতুন ঘূর্ণাবর্ত! আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে সিঁদুরে মেঘ। বিপদ আরও এক জায়গায়। অগাস্টের শুরুতে ডিভিসির জলে ভেসেছিল হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান। সেই বৃষ্টির আগে নদী, নালা, খাল বিল অনেকটাই শুকনো ছিল। ফলে জল ধরার ক্ষমতা বেশি ছিল। এখন অগাস্টের শেষ পর্বে মাটির জলধারণ ক্ষমতা কমেছে, নদী-খাল-বিলও টইটম্বুর। ফলে ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ালে বিপদ এড়ানো মুশকিল।