Mamata Banerjee: ‘বাংলায় পারলে ভারতেও পারি’, তবে কি এবার মমতার নজরে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি?
Mamata Banerjee: অন্য রাজ্যেও খাতা খুলতে চাইছে তৃণমূল। ২৮ অক্টোবর গোয়া যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিলিগুড়ি: একুশের ‘খেলা’ জিতে এবার যে লক্ষ্য দিল্লি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) তা আগেও বুঝিয়েছেন। তবে সোমবার প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়েও একটা ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁর পুঁজি। তাতে ভর করেই দিল্লির মসনদের দিকে এগোতে চাইছে দল। যদিও এ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক কটাক্ষও আসতে শুরু করেছে বিরোধীদের তরফে। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী যেমন মমতাকে বলেছেন, ‘মোদীর দালাল’। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আবার প্রতিক্রিয়া, রাজ্য তো তলানিতে চলে গিয়েছে। ধ্বংসের মুখে। আবার প্রধানমন্ত্রিত্ব?
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমিও সাতবারের সাংসদ ছিলাম। চার দফায় মন্ত্রিত্ব সামলেছি। খনি, যুব, রেলের মতো মন্ত্রক সামলেছি। আমি প্রতি ভোটে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি।” কংগ্রেসের হাতে যে মমতা বিজেপি বিরোধী জোটের ব্যাটন ছাড়বেন না পুজোর আগেই স্পষ্ট করে বলেছিলেন তিনি।
সোমবারও তাঁর বক্তব্যে উঠে এল সে প্রসঙ্গ। কংগ্রেস এত বছর ক্ষমতায় থেকেও কী করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল নেত্রীর চ্যালেঞ্জ, “আমি কংগ্রেসকে বলতে চাইব, অনেকটা সময়ই তোমরা পেয়েছ। দশ, কুড়ি বছর ধরে তোমরা কী করেছ? তোমরা কিছু করোনি বলেই তো বিজেপির সঙ্গে লড়তে আমাদেরই বাইরে যেতে হয়েছে। আমরা বাংলায় যদি পারি, তা হলে আমরা ভারতবর্ষেও পারি।”
কংগ্রেস-সহ মমতা-বিরোধীরা বলছে নেতৃত্বের টক্করে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের ভিতকেই নড়বড়ে করছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সাফ কথা, “বিজেপির ভয় বিরোধীরা একজোট না হয়ে যায়। ২০১৪ সালে তাদের ভাগ্যে ভোট ছিল ৩১ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হল ৩৭ শতাংশ। ৬৩ শতাংশ ভোটের মালিক বিরোধীরা। তাই নরেন্দ্র মোদীর একটাই রণকৌশল, বিরোধী জোট না না তৈরি হতে দেওয়া। তার জন্য কী করতে হবে? দালাল ধরতে হবে। অন্যতম দালালের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদির কোনও ভয় নেই। কলকাতা দিদির, দিল্লি মোদীর। এটাই চুক্তির সারাংশ।”
বিজেপি অবশ্য এসব কথা মোটেই আমল দিচ্ছে না। বরং তারা এই সব কথা থেকে দূরেই থাকতে চায়। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্য তো তলানিতে চলে গিয়েছে। রাজ্যের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিজ্ঞতা সত্যিই আছে। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে কি না তা আমার জানা নেই।”
অন্য রাজ্যেও খাতা খুলতে চাইছে তৃণমূল। ২৮ অক্টোবর গোয়া যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুনিয়ে রেখেছেন, “তিন মাসের মধ্যে গোয়ায় জোড়া ফুল ফুটবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
এরপর নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতেও যাবেন মমতা। সোমবার শিলিগুড়িতে এসে তৃণমূলে যোগ দেন উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠীর পরিবারের দুই সদস্য রাজেশপতি ত্রিপাঠী ও ললিতেশপতি ত্রিপাঠী। তাঁদের পাশে নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজেশজী, ললিতজী যখন কর্মসূচি রাখবেন, আমাকে পাঠাবেন আমিও নিশ্চয়ই যাব। অভিষেকও যাবে।”
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, যে ভাবে ভিন রাজ্যগুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল ঝাঁপাচ্ছে, তাতে একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট দিল্লির রাজনীতিতে প্রভাব বাড়াতে চাইছে ঘাসফুল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সির দিকেও কি নজর মমতার?