Anubrata Mondal: অনুব্রতর স্ত্রীর চিকিৎসায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছেন কারা? হিসেব দেখে চোখ কপালে CBI আধিকারিকদের
Cattle Smuggling Case: গরু পাচারের টাকাই কি ঘুরপথে হাসপাতালে দিয়েছেন ওই সব ব্যক্তি বা সংস্থা? সেই প্রশ্নই সামনে আসছে।
সিজার মণ্ডল, কলকাতা: ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রী ছবি মণ্ডলের। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। গরু পাচার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সেই চিকিৎসার খরচ সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। প্রয়াত ছবি মণ্ডলের ক্যান্সারের চিকিৎসার বিপুল খরচ নাকি অনুব্রত দেননি! দিয়েছেন কোনও তৃতীয় ব্যক্তি বা সংস্থা। কেন অন্য কোনও ব্যক্তি লক্ষ লক্ষ টাকা দিলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
সিবিআই-এর হাতে যে তথ্য এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ছবি মণ্ডলের ক্যান্সারের চিকিৎসা চলে নিউটাউনের টাটা ক্যান্সার হাসপাতালে। সিবিআই সূত্রে খবর, সেই চিকিৎসার জন্য মোট খরচ হয় ২ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। হাসপাতাল থেকে পাওয়া পেমেন্টের রসিদ দেখে কার্যত তাজ্জব গোয়েন্দারা।
তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে খরচের প্রায় সবটাই বহন করেছে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান। মোট খরচের মধ্যে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে চেকের মাধ্যমে। বাকি ১৮ লক্ষ ১১ টাকা দেওয়া হয়েছে নগদে।
আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আমোদপুরের চালকল মালিক রাজীব ভট্টাচার্যের নাম। ছবি মণ্ডলের চিকিৎসার জন্য তিনি দিয়েছিলেন ৭৮ লক্ষ টাকা। সে টাকা দেওয়ার কথাও স্বীকারও করেছিলেন তিনি।
এছাড়াও, ২০১৯ সালে ‘মেসার্স মা কালী ট্রেডার্স’ নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ছবি মণ্ডলের চিকিৎসা খাতে হাসপাতালে দিয়েছিলেন ৩৪ লক্ষ টাকা। ‘আকাশ কনস্ট্রাকশন’ নামে একটি সংস্থা দিয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা। মেসার্স SBGITI নামের আর একটি সংস্থা দিয়েছে ৮ লক্ষ টাকা। ‘হাতে কলমে শিক্ষা কেন্দ্র’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দিয়েছে ৪ লক্ষ টাকা। সঞ্জীব মজুমদার নামে এক ব্যক্তি ২ দফায় দিয়েছেন সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা।
মোট ১ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে এভাবেই, যা দিয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থা। সিবিআই-এর দাবি, ছোট অঙ্কে আরও বেশ কিছু ব্যক্তি ছবির চিকিৎসার টাকা দিয়েছেন।
মজার বিষয় হল, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে অনুব্রত, মেয়ে সুকন্যা এবং স্ত্রী ছবির সরকারিভাবে মিলিত আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ৯১৪ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সম্মিলিত আয় ছিল ২ কোটি ২৯ লক্ষ ৩ হাজার ৪৯২ টাকা। অর্থাৎ মণ্ডল পরিবারের হাতে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যে ছিল না এমনটা নয়। তাহলে অন্যদের থেকে কেন টাকা নিতে হল? সেটাই সিবিআই আধিকারিকদের মূল সন্দেহের কারণ। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই সব সংস্থা বা ব্যক্তিরা হয় কেষ্টর বেনামি টাকা ঘুরপথে দিয়েছেন চিকিৎসার খরচ হিসেবে অথবা গরু পাচারের প্রোটেকশন মানি ঘুরপথে ঢুকেছে চিকিৎসা খাতে।