Na Bollei Noy: পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি? কোনও পড়ুয়া যদি শিক্ষককে যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করে? যে কথা ‘না বললেই নয়’

Na Bollei Noy: যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা তো যোগ্য নন। যোগ্যতা না থাকলে তাঁরা কী শেখাবেন স্কুলে? অযোগ্যদের হাতে একটা প্রজন্ম তৈরি হবে? ছাত্র-ছাত্রীরা সন্দেহের চোখে দেখবে, তাঁদের শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে?

Na Bollei Noy: পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি? কোনও পড়ুয়া যদি শিক্ষককে যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করে? যে কথা ‘না বললেই নয়’
না বললেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 28, 2022 | 5:02 PM

কলকাতা: কথায় বলে যে দেবতা যে ফুলে সন্তুষ্ট। শুধু কি ফুল? নৈবেদ্যও কি সমান জরুরি নয়? মানে, ঈশ্বরভেদে ভোগেরও তো উনিশ-বিশ আছে। যে দেবতা যে ভোগে সন্তুষ্ট তাই দিয়েই তুষ্ট করতে হয়। নিত্য পুজোয় অবশ্য শুধু বাতাসা বা নকুলদানা দিলেও চলে। কিন্তু স্পেশাল অকেশনে চাই, স্পেশাল ভোগ, পঞ্চব্যঞ্জন সহ। জায়গামতো ঠিক ঠিক জিনিসটা দেওয়া চাই। এই যেমন, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি আর স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরিতে একই টাকা দিলে চলত না। যেমন চাকরি, তার তেমন রেট। সেই রেট জোগাড় করতে গিয়ে অনেকেই ঘটি-বাটি বেচেছিলেন। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও স্কুলে পড়াতে ঢুকে গিয়েছেন, ঈশ্বর থুড়ি নেতাদের আশীর্বাদে। নেতাদের দরাজ দিল, তাঁরা যেমন হাত পেতে টাকা নিয়েছেন, তেমনই চাকরিও দিয়েছেন। নেতারা এতটা মানবিক যে, বেআইনি চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বাঁচাতে তাঁরা এখন মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেন এত দরদ? 

যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা তো যোগ্য নন। যোগ্যতা না থাকলে তাঁরা কী শেখাবেন স্কুলে? অযোগ্যদের হাতে একটা প্রজন্ম তৈরি হবে? ছাত্র-ছাত্রীরা সন্দেহের চোখে দেখবে, তাঁদের শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে? ভাববে যে, তাঁরা পিছনের দরজা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছেন কি না? মাধ্যমিকের সিলেবাসে উলঙ্গ রাজা কবিতা পড়ে, কোনও পড়ুয়া যদি তাঁর, স্যার বা ম্যাডামকে জিজ্ঞাসা করে, আপনার কাপড় কোথায় মানে আপনার যোগ্যতা কি? তাহলে, মানসম্মান থাকবে? আর সরকারই বা কেমন? বেআইনি ভাবে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের বেআব্রু করে দিলেই তো হয়। অযোগ্যদের খুঁজে বের করতে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছে যখন, তখন নেতাদের কাছে নিশ্চয়ই ডেটাবেস আছে? সেটা মিলিয়ে আবর্জনা বিদায় করলেই তো হয়! তা না করে, শিক্ষা দফতর এই পুজোর সময় মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে আরও ভার বাড়িয়ে দিল? 

একে জগদীপ ধনখড় রাজ্যে নেই। এখন যিনি রাজ্যপাল সেই লা গণেশন রাজভবনের বাইরে ত্রিভূবনের বিষয় নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামান না। কাজেই, পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে উদ্বোধক এখন বাড়ন্ত। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপ্যাধ্যায়কেই সবাই ভরসা করছেন। কলকাতা থেকে জেলা, যত পুজোর ফিতে তাঁকে কাটতে হচ্ছে, তাতে তো গিনেস বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডসে নাম উঠে যেতে পারে। একটা সময়, মুম্বই থেকে ফিল্মস্টার, স্পোর্টসস্টারদের এনে পুজোর উদ্বোধন হত। খোলামকুচির মতো টাকা খরচ হত। কিন্তু এবছর তারকারি কি আকাল পড়িয়াছে? তারকাদের পিছনে ঢালার মতো টাকা পয়সা নিয়ে কি টানাটানি আছে? সোর্স অফ ইনকামে টান পড়লে যা হয়, তাই হচ্ছে? কয়লা থেকে বালি, গরু থেকে চাকরি, সব ইনকামের সোর্স তো এখন তদন্তকারীদের আতস কাচের নীচে। অবস্থা এমন, লোকাল নেতা বা বিধায়কদের ওপরও কেউ ভরসা করছেন না। চারদিকে এত কেলেঙ্কারি,সিবিআই, ইডি, পুলিশ বা সিআইডি যখন তখন যেভাবে ধরপাকড় করছে। তাতে উদ্ধোধক হিসেবে যে নেতাকে বাছা হল, উদ্বোধনের আগে তিনি যদি গারদে চলে যান, তখন তো উদ্বোধনটাই মাটি! তাই, পুজো কমিটিগুলির সব রাস্তা ওই রোমের দিকে। মানে কালীঘাটের দিকেই। মুশকিল হচ্ছে, মমতা ব্যানার্জি নিজে যতটা ইমেজ সচেতন, ততটা তাঁর দলের অনেক নেতাই নন। এই ধরুন মানিক ভট্টাচার্য। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তা না করে, তদন্তের মুখোমুখি হলেই হতো। মানকিবাবুকে নিয়ে তাঁর বিধানসভা এলাকার ভোটাররা যা বলছেন, শুনলে কানে হাত চাপা দিতে হবে। আপনাদের মানিকবাবুর মতো নেতাদের কীভাবে দেখছে মানুষ। যেটুকু শোনাব, তার থেকে অনেক বেশি শোনাতে পারব না। কারণ, সেই সমস্ত বক্তব্য চালাতে হলে, সারাক্ষণ বিপ বিপ দিতে হবে। তাই, যতটুকু কথা আজ বলার মতো, সেগুলোই বলব। অধিকাংশই স্পষ্ট কথা তাই মানিকবাবুদের তেঁতো লাগতে পারে। কিন্তু কথাগুলি আমাদের আজ না বললেই নয়। ‘না বললেই নয়’। টিভি নাইন বাংলায়, রাত ৮.৫৭।