RG KAR Hospital: শুধু একটা কেমো.. ২ হাসপাতাল ঘুরে আরজি কর-এর বাইরে ৭টা রাত কাটালেন মখজুল
SSKM: কিন্তু এত কিছুর পরও বদলাল কি চিত্র? জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার। কলকাতা থেকে কলকাতাতেও রেফার। আর এই নীতির জেরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের।
কলকাতা: রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতাল থেকে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলিতে রেফার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি,এসএসকেএম-এ (SSKM) রোগী ভর্তি করাতে না পেরে ‘অগ্নিশর্মা’ হয়েছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে পিজির ‘বেহাল পরিকাঠামোর’ কথাও। কিন্তু এত কিছুর পরও বদলাল কি চিত্র? জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার। কলকাতা থেকে কলকাতাতেও রেফার। আর এই নীতির জেরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাসিন্দা মখজুল শেখ। গত বছরের শেষে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর মুর্শিদাবাদ থেকে এসএসকেএম হয়ে বর্তমানে আরজিকর হাসপাতালের রোডিয়ো থেরাপি বিভাগের রোগী মখজুল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের বক্তব্য, সেখানে ক্যানসার পরিষেবা দেওয়ার জন্য তিন দিন বর্হিবিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা রয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন ডে-কেয়ারে কোমো থেরাপি দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। তাহলে সাগরদিঘি থেকে ক্যানসার চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসতে হবে কেন? মখজুল শেখ বলেন, “আমায় বলা হল কলকাতায় চলে যান। আমি প্রথমে পিজি-তে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ঘুরে-ঘুরে এখানে এসেছি।”
মখজুলের কলকাতায় এসে কি কোনও লাভ হল? তাঁর অভিযোগ, চার মাস ধরে এসএসকেএম-এর রেডিয়ো থেরাপি বিভাগে চক্কর কেটে শুধু একের পর এক পরীক্ষা করা হয়েছে। শেষে পরিকাঠামোর তুলনায় রোগীর চাপ বৃদ্ধির জেরে এসএসকেএম থেকে পাঠানো হয় আরজিকর-এ। মখজুল শেখ বলেন, “চার মাস ঘুরেছি। খালি রক্ত পরীক্ষা। এমআরআই করো। অমুক করো…তমুক করো…আমায় ওষুধ কিছুই দেয়নি।”
গত সোমবার (১৫ মে ২০২৩) আরজিকর-এ আসেন মখজুল শেখ। আরজিকর থেকে বলা হয় মঙ্গলবার হবে ব্লাড টেস্ট এবং বুধবার হবে কেমো। এরপর মঙ্গলবার যখন স্লিপ নিয়ে রক্তপরীক্ষা করাতে যান, অভিযোগ, কর্মীরা সেই সময় বলে দেন দুপুর ১২টা বেজে গিয়েছে আর পরীক্ষা করা যাবে না। তাই বুধবার হল না কেমো। ফলে সাতদিন ধরে হাসপাতালের বাইরে পড়ে রয়েছেন মখজুল শেখ।
আরজিকর কর্তৃপক্ষের দাবি, সেন্ট্রাল ল্যাবের পাশাপাশি বর্হিবিভাগে বিকেল চারটে পর্যন্ত রক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মখজুল শেখদের বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সেই দাবি মিলছে কই?
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার গভীর রাতে রোগী ভর্তি করাতে না পেরে এসএসকেএমের উপর ক্ষোভ উগরে দেন মদন মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে রবিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে বেড না পাওয়া শুভদীপ পালকে। মঙ্গলবার যদিও শুভদীপের মৃত্যু হয়। তবে সেই সময় এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,”এখানকার স্বাস্থ্য কর্মীরা দাঁতে-দাঁত চেপে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন।” তবে শুভজিৎ হোক বা মফজুল এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বক্তব্যের সঙ্গে যে বাস্তবের মিল নেই আরও একবার কার্যত তা স্পষ্ট হল।