কমিশনের রিপোর্টে একাধিক ‘বিরোধিতা’, হলফনামা আকারে হাইকোর্টকে জানাবে রাজ্য

Post Poll Violence: অভিষেক মনু সিংভি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে একাধিক বিরোধিতা রয়েছে।

কমিশনের রিপোর্টে একাধিক 'বিরোধিতা', হলফনামা আকারে হাইকোর্টকে জানাবে রাজ্য
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 22, 2021 | 7:55 PM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে হলফনামা দেবে রাজ্য। আগামী ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যের বক্তব্য হলফনামা আকারে জানাতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এদিন ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দাখিল করা রিপোর্টের অ্যানেক্সার রাজ্যকে না দেওয়ার বিষয়েই মত পোষণ করলেন বিচারপতি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির মত, এই অ্যানেক্সারে ধর্ষণের ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে। তা কোনও ভাবেই প্রকাশ্যে আনা যাবে না। সে কারণেই তা দেওয়া হচ্ছে না।

আদালতের নির্দেশ মতোই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্প্রতি ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেখানে রাজ্যের একাধিক বিধায়ক-মন্ত্রীকে কুখ্যাত দুষ্কৃতীর আখ্যাও দেওয়া হয়। অ্যানেক্সারে বিস্ফোরক দাবি করা হয় কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে। সেই রিপোর্ট নিয়েই এদিনের মামলার শুনানি ছিল। রাজ্যের হয়ে এই মামলায় সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভি। রশিদ মুনির খানের হয়ে ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। অভিযোগকারীদের তরফে আইনজীবী ছিলেন মহেশ জেঠমালানি, প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। মানবাধিকার কমিশনের তরফে ছিলেন আইনজীবী সুবীর সান্যাল।

এদিন এজলাসে এজি প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে জানান, ‘১৫ জুলাই আমরা রিপোর্ট হাতে পেলাম। সেখানে দেখা গেল একটা অ্যানেক্সার আমাদের দেওয়া হয়নি। যোগাযোগ করা হলে আমাদের বলা হয় আপনার নির্দেশ ছাড়া দেওয়া হবে না।’ এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ধর্ষণ বিষয়ে উল্লেখ আছে সেখানে। তাই পাবলিক করা যাবে না। তাই দেওয়া হয়নি।’ এরপরই এজি সওয়াল করেন, ‘আমরা কোথাও পাবলিক করছি না।’ কপিল সিব্বাল বলেন, ‘কপি ছাড়া কী ভাবে উত্তর দেওয়া হবে।’ এরপরই হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল বলেন, ‘বাকি বিষয়ে উত্তর দিন। ওটা না দিলেও হবে।’

প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল এই কপি দিতে আপত্তি জানান। এরপরই অভিষেক মনু সিংভি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে একাধিক বিরোধিতা রয়েছে। তাই সেই অংশ না পেলে অসুবিধা হবে। কমিশনের রিপোর্টের যৌক্তিকতা নিয়ে এদিন আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় রাজ্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিন্দল বলেন, যার যা হলফনামা দেওয়ার ২৬ জুলাই দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দেন, ধর্ষণ সংক্রান্ত কোনও তথ্য রাজ্যকে দেওয়া হবে না। ২৮ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে।

অন্যদিকে এদিনই কাঁকুড়গাছির শীতলাতলা লেনের বাসিন্দা নিহত অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের অটোপসির রিপোর্টের ডিভিডি জমা পড়ে আদালতে। আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, নিহত অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।

প্রসঙ্গত গত ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন কাঁকুড়গাছির শীতলাতলা লেনের বাসিন্দা অভিজিৎ সরকারের দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার প্রথম থেকেই অভিযোগ করে এসেছিল, এটি সাধারণ খুন নয়, রাজনৈতিক হিংসার জের। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়, বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা অভিজিৎকে বেধড়ক মারধর করে। গলায় তার পেঁচিয়ে ও পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় অভিজিৎকে। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির বুথ কর্মী অভিজিৎ বিজেপি-র ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। এরপর অভিজিৎ সরকারের দাদা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে ভ্যাকসিন’! বাড়িতে বসেই টিকা হরিদেবপুরে, জানাজানি হতে তৃণমূল নেতা বললেন ‘আমি অনুতপ্ত’