Priyanka Sau: প্রিয়ঙ্কা এখন ম্যাডাম প্রিয়ঙ্কা, পোস্টারের বদলে হাতে চক-ডাস্টার
Priyanka Sau: প্রিয়ঙ্কা সাউর বাড়ি ঢাকুরিয়ায়। তবে ১৬ নভেম্বর থেকে তিনি ম্যাডাম প্রিয়ঙ্কা। এবার থেকে সোম থেকে শনি প্রিয়ঙ্কার দিনের ৬ ঘণ্টা কাটবে বাঘাযতীন বালিকা বিদ্যালয়ে।
সুমন মহাপাত্র
কলকাতা: চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের দাবিতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। রাজপথে বারবার নেমে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাইমারি থেকে আপার প্রাইমারি, গ্রুপ সি থেকে এসএলএসটি, সব ধরনের চাকরিপ্রার্থীরাই নিজেদের দাবি ছিনিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। তবে ইতিমধ্যেই ‘হকের’ চাকরি পেয়েছেন বেশ কয়েকজন। আদালতের (Court) নির্দেশে চাকরি (Jobs) দেওয়া শুরু হয়েছিল ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের মাধ্যমে। তারপর ববিতা সরকার। এবার চক-ডাস্টার হাতে তুলে নিলেন প্রিয়ঙ্কা সাউ (Priyanka Sau)।
প্রিয়ঙ্কা সাউর বাড়ি ঢাকুরিয়ায়। তবে ১৬ নভেম্বর থেকে তিনি ম্যাডাম প্রিয়ঙ্কা। এবার থেকে সোম থেকে শনি প্রিয়ঙ্কার দিনের ৬ ঘণ্টা কাটবে বাঘাযতীন বালিকা বিদ্যালয়ে। অবশেষে পোস্টারের বদলে তাঁর হাতে উঠেছে চক-ডাস্টার। ম্যাডাম প্রিয়ঙ্কা বুধবার যোগ দিলেন কাঙ্ক্ষিত স্কুলে। তবে সহজে মেলেনি এই ‘হকের’ চাকরি। আইনি লড়াই হাতে এনে দিয়েছে এই সুযোগ। অনেকের থেকে বেশি নম্বর, তালিকায় উঁচুতে নাম, তবু নিয়োগ দুর্নীতির আঁচড়ে তাঁর আগেই চাকরি বাগিয়েছেন ‘অযোগ্যরা’। আদালতে সেই যুক্তি তুলে ধরতেই মিলল ফয়সালা।
বিচারপতির নির্দেশে পড়ুয়াদের মুখে ম্যাডাম ডাক শুনলেন প্রিয়ঙ্কা সাউ। গান্ধী মূর্তিতে অন্যদের মতোই ৬০০ দিনের লড়াই লড়ছিলেন। কিন্তু স্বল্প দিনেই তিনি টের পান, শুধু আন্দোলনে খুলবে না চাকরির তালা। এরপর চাবি খুঁজতে বিচার ব্যবস্থার শরণাপন্ন হন তিনি। বিচারপতির নির্দেশে বৈঠকে বসেন এসএসসি ও প্রিয়ঙ্কার মামলাকারী আইনজীবী। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্থির হয় চাকরি পাবেন ঢাকুরিয়ার এই আন্দোলনকারী।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে প্রিয়ঙ্কাকে চারটি স্কুল দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে একটি বেছে নিতে হত। সেইমতো বাবা মা-স্বামীকে নিয়ে স্কুলে যোগ দিলেন প্রিয়ঙ্কা। জীবনে প্রথম দিন যখন স্কুলে গিয়েছিলেন, তখনও তাঁর সঙ্গী ছিলেন বাবা মা। তাই বুধবার জীবনের এই সফলতার মুহূর্তেও তাঁর সঙ্গী মা-বাবাই। বাবা অসুস্থ, তবু মেয়ের দাবি ফেলতে পারেননি। মেয়ের কথাতেই খড়দহ থেকে ছুটে এসেছেন বাঘাযতীনে। মেয়ে অবশেষে ‘হকের’ চাকরি পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত মা। তাঁর কথায়, “মেয়ে সবসময় কাঁদত। কেঁদে বলত মা কী হবে? আমি বলতাম তুই কেস কর, সব ঠিক হবে।” শেষ পর্যন্ত সব ঠিক হল, প্রিয়ঙ্কা চাকরি পেয়েছে। তাই তো অসুস্থ বাবাও ছুটে এসেছেন মেয়ের আনন্দকে চাক্ষুষ করতে। বাবা এতটাই অসুস্থ যে মুখে কথা আটকে যায়, তবু তিনি বলছেন, “মেয়ের দাবির কাছে হার মানলাম। আসতেই হল।” যাঁরা এখনও গান্ধী মূর্তিতে অবস্থানে বসেন, তাঁদের উদ্দেশে প্রিয়ঙ্কার বার্তা, “যেভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা অভাবনীয়। তাই এতদিন লাগল চাকরি পেতে। যাঁরা এখনও আন্দোলন করছেন, তাঁদের বলব আইনি পথে লড়ুন।”