Ratan Tata: ‘ট্রিগারে চাপটা দিয়ে দিয়েছিলেন মিস ব্যানার্জি’, সিঙ্গুর-পর্বের পর বলেছিলেন রতন টাটা
Ratan Tata: ঘটনার বছর তিনেক পর ফের কলকাতায় আসেন রতন টাটা। তবে অন্য এক অনুষ্ঠানে। সেটাই ছিল টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর শেষ বার্ষিক সাধারণ সভা। শহরের পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক শেষে সেদিনও তাঁর গলায় আবেগ ঝরতে শোনা গিয়েছিল।
কলকাতা: টাটা যখন বাংলায় কারখানা গড়তে ব্যস্ত, তখন বোধহয় রতন টাটা কল্পনাও করেননি যে শেষটা এমন হবে। দীর্ঘ আন্দোলন, বিক্ষোভ, দফায় দফায় বৈঠক, মামলা-মোকদ্দমার পর ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে সিঙ্গুর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেয় টাটা গোষ্ঠী। বাংলার মাটিতে ন্যানো গাড়ি তৈরি করার স্বপ্ন আর সত্যি হয়নি তাদের। প্রকল্প চলে যায় গুজরাটে, তবে সিঙ্গুরের ‘দুঃখ’ অনেকদিন পর্যন্ত ভুলতে পারেননি তিনি। টাটা গোষ্ঠীর তৎকালীন চেয়ারম্যান। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ট্রিগারে চাপ দেন মিস ব্যানার্জি।’
বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, মিস ব্যানার্জিই তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর থেকে কারখানা সরিয়ে কৃষকদের জমি ফেরানোর আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন মমতাই। তাঁর সেই আন্দোলনকে বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন টাটা।
তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনদের সঙ্গে বৈঠক করার পর রতন টাটা বলেছিলেন, ‘দু বছর আগে আমি বলেছিলাম, কেউ যদি আমার মাথায় বন্দুক ঠেকায়, তাহলে হয় তাকে বন্দুক সরিয়ে নিতে হবে নাহলে ট্রিগারে চাপ দিতে হবে। আমি মাথা সরাব না। আমি মনে করি ট্রিগারে চাপটাই দিয়েছেন মিস ব্যানার্জি।’ আক্ষেপের সঙ্গে জানিয়েছিলেন সিঙ্গুর ছাড়ার কথা।
এই ঘটনার বছর তিনেক পর ফের কলকাতায় আসেন রতন টাটা। তবে অন্য এক অনুষ্ঠানে। সেটাই ছিল টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর শেষ বার্ষিক সাধারণ সভা। শহরের পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক শেষে সেদিনও তাঁর গলায় আবেগ ঝরে পড়েছিল।
সিঙ্গুর প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “সিঙ্গুর নিয়ে রাগ নেই। বরং কিছু করতে না পারার দুঃখ আছে। ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বন্ধুত্বপূর্ণ হলে আবার বিনিয়োগ হবে।” বক্তব্যের শেষ অংশে রতন টাটা আরও বলেছিলেন, “সিঙ্গুর মামলা এখনও বিচারাধীন। আদালতের রায় যাই হোক না কেন আমরা তাকে সম্মান জানাই। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইচ্ছের ওপর পুরোটাই নির্ভর করছে। কে বলতে পারে হয়ত একদিন পশ্চিমবঙ্গের কোথাও একটি টাটা মোটরস-এর কারখানা হবে। কে বলতে পারে হয়ত আমাদের একদিন স্বাগত জানানো হবে।”
এবার চলে আসা যাক ২০২২ সালে। উত্তরবঙ্গ সফরে আচমকাই সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায় সিঙ্গুর প্রসঙ্গ। তিনি বলেছিলেন, “আমি টাটা-কে তাড়িয়ে দিইনি। সবাই বাজে কথা বলছে। টাটা-কে তাড়িয়েছে সিপিএম।”