Sampriti Flyover: উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষিত হল এই উড়ালপুলে!

Kolkata: সরকারের পক্ষ থেকে উড়ালপুলে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।  একইসঙ্গে ওই  উড়ালপুলে অন্যান্য ট্রাফিক সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

Sampriti Flyover: উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষিত হল এই উড়ালপুলে!
উড়ালপুলে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 31, 2021 | 12:44 PM

কলকাতা: সাম্প্রতিককালে একের পর এক পথদুর্ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  অবশেষে সম্প্রীতি উড়ালপুলে (Sampriti Flyover) দুর্ঘটনা এড়াতে  পণ্যবাহী গাড়ি ও  লরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনওভাবেই সম্প্রীতি উড়ালপুলে  ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে না।

কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটির পর্যবেক্ষণ 

কেএমডিএ-র তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ ডিসেম্বরের প্রশাসনিক বৈঠকে সম্প্রীতি উড়ালপুলের সেতু-স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই, সরকারের পক্ষ থেকে উড়ালপুলে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।  একইসঙ্গে ওই  উড়ালপুলে অন্যান্য ট্রাফিক সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ

মূল কলকাতার সঙ্গে বাটানগর ও বজবজ সংযুক্তকারী এই  উড়ালপুল বরাবরই দুর্ঘটনাপ্রবণ বলেই পরিচিত। তাই, ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে ঝুঁকিও বেশি। সবদিক থেকে চিন্তা করেই কেএমডিএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে সম্প্রীতি উড়ালপুল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাস উড়ালপুলে একের পর এক দুর্ঘটনার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রশাসনিক বৈঠকেই ইঙ্গিত মেলে, পরবর্তীতে সম্প্রীতি উড়ালপুল ধরে বড় পণ্যবাহী গাড়ি বা লরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অবশেষে সেই সিদ্ধান্তই সত্যি হল।

সম্প্রীতি উড়ালপুলে দুর্ঘটনা

কিছুদিন আগেই, তারাতলা থেকে বজবজে যাওয়ার পথে  সম্প্রীতি উড়ালপুলে দুর্ঘটনায় এক শিশু-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়। ২টি বাইকের মধ্যে রেষারেষির সময়ই এই দুুর্ঘটনা। উল্টো দিক থেকে আসা একটি বাসে আচমকাই ধাক্কা লাগে ওই চার বাইক আরোহীর। তাতে গুরুতর জখম হন চারজন। আহতদের দ্রুত বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। একজন হাত-পা ভেঙে গিয়ে গুরুতর আহত হন। সেই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। যে উড়ালপুলে বাইক ওঠারও নিয়ম নেই, সেভাবে বাসও ওঠে না সেখানে কী করে আইন ভেঙে ওই উড়ালপুল ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। তদন্তে নামে মহেশতলা থানার পুলিশ।

কেন তৈরি হল এই উড়ালপুল?

আগে, বাটানগর ও বজবজকে কলকাতার সঙ্গে যুক্তকারী বজবজ ট্রাঙ্ক রোড প্রয়োজনের তুলনায় সংকীর্ণ হওয়ায় সবসময় যানজট লেগেই থাকত। তাই সমস্যা সমাধানের জন্য বাটানগর উড়ালপুল নির্মাণের কথা ভাবা হয়। সেই  উড়ালপুল নির্মাণের কথা ঘোষণা হয় ২০১৪ সালে। সরকারি তথ্য বলছে, ২০১১ সালে তৎকালীন জওহরলাল নেহেরু জাতীয় নগর নবায়ন মিশনকে এই উড়ালপুল তৈরির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। এরপর ২০১৫ সালে উড়ালপুলটির নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

প্রাথমিকভাবে উড়ালপুলটি নির্মাণের জন্য খরচ ধরা  হয়  প্রায় ২৫৫ কোটি টাকা। ষার মধ্যে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা দেওয়া হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে, বাকিটা দেয় নির্মাণ সংস্থা। ২০১৮ সালে উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে দেখা যায়, উড়ালপুল বানাতে খরচ পড়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। দুই লেনের  ৭.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তা রাজ্যের দীর্ঘতম উড়ালপুল। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে উড়ালপুলটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: গৌতম-ই আস্থা তৃণমূলের, হতে পারেন মেয়র পদপ্রার্থীও