প্রাইমারি টেটের নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট
টেটে (TET) অস্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী। তারই প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ।
কলকাতা: ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেটের (Primary TET) নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চ সোমবার এই নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। অস্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ।
গত ১১ ডিসেম্বর নবান্ন থেকে ১৬ হাজার ৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিনই জানিয়েছিলেন, দ্রুততার সঙ্গে প্যানেল তৈরি করা হবে। সেইমতো ২৩ ডিসেম্বরে জারি হয় বিজ্ঞপ্তি। গত ১০ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া। এরপরই রেকর্ড কম সময়ের মধ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয় মেধাতালিকা। নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয়। কিন্তু এরইমধ্যে নিয়োগ তালিকা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে।
এদিন আদালত জানিয়ে দিল, এই মামলার নিষ্পত্তি যতদিন না হচ্ছে তত দিন পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। চার সপ্তাহ পর ফের শুনানি হবে। অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তে যেমন বড় ধাক্কা, তেমনই ভোটের আগে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারেরও।
আরও পড়ুন: অভিষেকের শ্যালিকার বাড়িতে সিবিআই, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
মামলাকারীদের বক্তব্য, এমন অনেক প্রার্থীর কাছে নিয়োগপত্র গিয়েছে, যাদের নাম মেধাতালিকাতে ছিল না। এর বাইরেও একাধিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে এই তালিকা ঘিরে। এরপরই আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়। এর ফলে যাদের কাছে নিয়োগপত্র পৌঁছেছে, সেগুলিও এখন কার্যকর হবে না বলেই জানিয়েছে আদালত। মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে পারবে পর্ষদ।
এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এই রাজ্য সরকারের মাথা থেকে পা পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরা। কোনও পরীক্ষার ব্যবস্থা করে না, পরীক্ষা হলে ফল প্রকাশ হয় না। যদিও বা হয় তা নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আসলে চাকরি দিতে পারবে না বলেই এই দুর্নীতির আশ্রয়।”
এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে এক হাত নিয়েছেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “গত ১০ বছর ধরে এই সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। বহু ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে। দুর্নীতিতে ভরা এই সরকার নিজেদের লোককে চাকরি দিতে গিয়ে বেনিয়মে ভরিয়ে দিয়েছে। এর দায়িত্ব তো শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি কী ব্যবস্থা করেছেন যে এমন ত্রুটিপূর্ণ ফল বের হচ্ছে। আপনাদের কি কোনও নিয়ম নীতির বালাই নেই?”