RG Kar Medical College: রাতভর অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ, ফের উত্তপ্ত আরজি কর মেডিক্যাল
Student Protest: শুক্রবার মাঝরাতে রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের উপস্থিতিতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মধ্যে ঘণ্টা তিনেকের আলোচনা চলে।
কলকাতা: ফের উত্তপ্ত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (RG Kar Medical College) চত্বর। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে দফায় দফায় বিক্ষোভে সরগরম হয়ে ওঠে শুক্রবারের রাত। ওই রাতেই প্রায় তিন ঘণ্টা দু’ তরফে আলোচনায় বসে। কিন্তু তার পরও কাটেনি জট। ছাত্র বিক্ষোভের জেরে সরগরম আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই গভীর রাত অবধি আটকে থাকেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ঘেরাও ওঠে।
শুক্রবার মাঝরাতে রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের উপস্থিতিতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মধ্যে ঘণ্টা তিনেকের আলোচনা চলে। সমাধান সূত্র বেরিয়ে গিয়েছে এবং পড়ুয়ারা সন্তুষ্ট বলে রাত আড়াইটে নাগাদ বেরিয়ে যান রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়। কিন্তু চেয়ারম্যানের সেই বক্তব্য মানতে নারাজ বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। দাবি না মানায় ও আলোচনায় কোনও রকম সমাধান সূত্র না মেলার দাবি তুলে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের গাড়ির সামনে ফের অবস্থান-বিক্ষোভে বসে পড়েন বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা।
বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কিছু বাইরের লোক। পড়ুয়ারা দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা সভা চলাকালীন অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যানের সামনে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও কারা এই বহিরাগত তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিকবার ছাত্র ছাত্রীরা সরব হন। তাঁরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখান। মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে পোস্টারও পড়ে। যেখানে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি করা হয়। সেই ঘটনা ঘিরে সেখানকার এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠকে অসুস্থ হয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি পর্যন্ত হতে হয়। এই টানাপোড়েনের প্রসঙ্গে এসএসকেএমে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকেও উঠে আসে। কী নিয়ে আরজি করে গোলমাল, কেন দিনের পর দিন এই অশান্তি চলছে তা নিয়ে কথাও হয়।
একাধিক দাবি-দাওয়াকে কেন্দ্র করে গত অগস্ট মাসে একবার আরজি করের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। সেই সময় কোনও মতে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা পড়লেও সম্প্রতি আবার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ শুরু হয় হাসপাতালে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত পোস্টার দেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে লেখা সেই পোস্টারগুলি খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠ।
সূত্রের খবর, এরপরই সঞ্জয় বশিষ্ঠকেও ঘেরাও করা হয়। তিনি সুগারের রোগী। জলও পর্যন্ত খেতে পারেননি বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে এমারজেন্সি এবং পরে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন। ১২ দফা দাবিতে চলা আন্দোলনে হস্টেল সমস্যার বিষয় যেমন ছিল, তেমনই ছিল চিকিৎসক পড়ুয়াদের হেপাটাইটিস বি টিকাকরণ না হওয়া, কলেজ চত্বরে ছাত্র-ছাত্রীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং সর্বোপরি হস্টেল কমিটি গঠন নিয়ে চিকিৎসক পড়ুয়াদের অসন্তোষ।
এরই মধ্যে গত মাসের শেষে আরজি করের ডেপুটি সুপারকে বদলি করে দেওয়া হয়। ডেপুটি সুপার পদে থাকা সুপ্রিয় চৌধুরীকে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে ডেপুটি সিএমওএইচ-২ পদে বদলি করা হয়। অন্যদিকে তাঁর জায়গায় আনা হয় ত্রিদিব মুস্তাফিকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রুটিন বদলি বললেও, ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য ছিল, লাগাতার ছাত্র আন্দোলনের জেরেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তাতেও যে বিক্ষোভের আঁচ প্রশমিত করা গেল না শুক্রবার রাতের ঘটনা সে ছবিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: কলকাতা পুলিশে চাকরির আবেদন করতে পারবেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও