কলকাতায় শুধু টিকার অভাবই নয়, এবার টান পড়েছে সিরিঞ্জের ভাঁড়ারেও

Covid vaccine: আগেরবার যখন এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল তখন স্বাস্থ্য ভবনের থেকে অনুদান চেয়ে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ ১৯০০০০ সিরিঞ্জ কেনা হয়েছিল।

কলকাতায় শুধু টিকার অভাবই নয়, এবার টান পড়েছে সিরিঞ্জের ভাঁড়ারেও
ফের করোনা টিকার রফতানি শুরু করেছে ভারত (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 13, 2021 | 9:45 PM

কলকাতা: এবার নতুন সঙ্কটের মুখে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ (KMC)। সূত্রের খবর, ভ্যাকসিনের পাশাপাশি অভাব সিরিঞ্জেরও। আগেরবার যখন এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল তখন স্বাস্থ্য ভবনের থেকে অনুদান চেয়ে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের তরফে ১৯০০০০ সিরিঞ্জ কেনা হয়েছিল। কিন্তু খোদ পুর প্রশাসকের অভিযোগ, এখন খোলা বাজার থেকে সিরিঞ্জ তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে ক্ষেত্রে সরকারের পাঠানোর উপরই পুরোপুরি নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে।

সিরিঞ্জ সঙ্কট প্রসঙ্গে কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সিরিঞ্জের আমাদের কাছে খুব অভাব। প্রায় নেই বললেই চলে। অদ্ভূত জিনিস যে, স্থানীয় যারা সিরিঞ্জ ম্যানুফ্যাকচারার, তাদের কাছ থেকেই কেন্দ্র সিরিঞ্জ তুলে নিয়েছে। তাদের অর্ডার দিয়েও সিরিঞ্জ পাচ্ছি না। আমি ১ লক্ষ সিরিঞ্জের অর্ডার দিয়ে রেখেছি। স্পষ্ট বলেছি, প্রয়োজনে দিন রাত কাজ কর। কিন্তু আমার সিরিঞ্জ চাই।”

এই মুহূর্তে কলকাতা পুরসভার হাতে কোভ্যাকসিন রয়েছে ৯০০০ ডোজ়। কোভিশিল্ড আছে ১৫০০০ ডোজ়। যা দিয়ে শুধুমাত্র মঙ্গলবারটা চালানো যাবে। যদি এদিন আবার ভ্যাকসিন না আসে, সে ক্ষেত্রে ফের অপ্রতুলতা তৈরি হবে। তবে স্বাস্থ্য ভবনের খবর, রবিবার ১০ লক্ষ কোভিশিল্ডের ডোজ় আসার কথা ছিল। তা না আসায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সোমবার পূর্বাঞ্চলের কেন্দ্রীয় স্টোর জিএম‌এসডি থেকে ৩ লক্ষ ১০ হাজার কোভিশিল্ড মিলেছে। মঙ্গলবার আর‌ও ৩ লক্ষ ৯০ হাজার কোভিশিল্ড কেন্দ্র পাঠাবে। তবে তাতেও সঙ্কট মিটবে না বলেই স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর।

কোভিড থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় ভ্যাকসিন। একদিনে এক কোটির বেশি টিকা দিয়ে নজির গড়েছে ভারত। কিন্তু এই টিকাকরণের পথেই গলদ রয়েছে বহু। গলদ থাকলে, লড়াই ঠিক ভাবে হবে কি না সে প্রশ্নও তো থেকেই যায়। ব্রহ্মাস্ত্র করোনার টিকা। ৭৫ কোটি ডোজ় প্রয়োগ করে বিশ্বে নজির গড়েছে ভারত। তিন দিন প্রয়োগ হয়েছে ১ কোটিরও বেশি ডোজ়। বড় সাফল্য বটেই। অঙ্ক কষে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী এ বছরই সমস্ত প্রাপ্ত বয়স্ককে টিকা দিতে গেলে প্রতিদিন ১ কোটি ডোজ় প্রয়োগ করা দরকার। কিন্তু তা যে হচ্ছে না বাস্তবে।

কো-উইনের তথ্য বলছে, গত ২৭ অগস্ট ১.০৮ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। ২৯ অগস্ট টিকা পেয়েছেন ৩৩ লক্ষ মানুষ। ৩১ অগস্ট ১.৪১ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। ৩ সেপ্টেম্বর টিকা পেয়েছেন ৬১.৮ লক্ষ মানুষ। ৬ সেপ্টেম্বর সংখ্যাটা ১.১৯ কোটি।

একই ছবি বাংলাতেও। ২৩ অগস্ট টিকা পেয়েছেন ৫.২৭ লক্ষ মানুষ। ২৯ অগস্ট ২.৯ লক্ষ জন। ৩১ অগস্ট সংখ্যাটা ছিল ১৩ লক্ষ, ৪.৬ লক্ষ টিকা নিয়েছেন ১ সেপ্টেম্বর, ৫ সেপ্টেম্বর টিকা পেয়েছেন ১.৮ লক্ষ জন।

৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাব বলছে দেশের ৫৭ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক টিকার একটি ডোজ় পেয়েছেন। কিন্তু দেশের গড়ের থেকেও বাংলা পিছনে। একটি ডোজ়ের প্রাপক দেশে ৫৭.৩ শতাংশ। উত্তর প্রদেশে ৪৫.৯ শতাংশ। এরপর বাংলার স্থান, ৪৫.১ শতাংশ। ঝাড়খন্ডে ৪৩.৫ শতাংশ। টিকাকরণের শুরুতে ডোজ় প্রয়োগে চার নম্বরে ছিল বাংলা। ক্রমে সাত নম্বরে নেমেছে রাজ্য। বাংলার আগে আছে রাজস্থান, কর্ণাটক, মধ্য প্রদেশের মতো কম জনসংখ্যার রাজ্য রয়েছে।

আরও পড়ুন: চিঠি গেল সিবিআই-ইডির দফতরে, ২২ সেপ্টেম্বর ‘হাজিরা’ দিতে হবে বিধানসভায়