Nusrat Jahan: নুসরতের ‘কীর্তি’ আগেই জানত গড়িয়াহাট থানা, তবুও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ

Nusrat Jahan: প্রতারিতদের অভিযোগ, তাঁরা প্রথমেই গড়িয়াহাট থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁদের অভিযোগ নেওয়াই হয়নি। পরে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। জানা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) গড়িয়াহাট থানাকে দিয়ে আর্থিক প্রতারণার মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়েছিলেন।

Nusrat Jahan: নুসরতের 'কীর্তি' আগেই জানত গড়িয়াহাট থানা, তবুও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
নুসরত জাহানImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2023 | 3:43 PM

কলকাতা: ব্যাঙ্ককর্মীদের ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ। সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ এখন বাংলার রাজনীতির হট টপিক! তদন্তে নেমে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এখন নয়, অনেক দিন আগে থেকেই এই প্রতারণার মামলার ছানবিন শুরু হয়েছিল। নুসরতের এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিল রাজ্য প্রশাসনও। এমনকি নুসরতের বিরদ্ধে তদন্তে নেমে অভিযোগের সত্যতাও খুঁজে পেয়েছে কলকাতা পুলিশ। তারপরও নেওয়া হয়নি কোনও ব্যবস্থা।

প্রতারিতদের অভিযোগ, তাঁরা প্রথমেই গড়িয়াহাট থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁদের অভিযোগ নেওয়াই হয়নি। পরে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। জানা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) গড়িয়াহাট থানাকে দিয়ে আর্থিক প্রতারণার মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়েছিলেন। অভিযোগ গ্রহণ করতে বাধ্য হয় গড়িয়াহাট থানা। অনুসন্ধান রিপোর্ট গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে জমা পড়ে। সেই রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রতারিত ব্যাঙ্ক কর্মীদের অভিযোগের সত্যতা হয়েছে। প্রতারিতরা সোমবারই নুসরতের বিরুদ্ধে ইডি-র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

‘সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’র ডিরেক্টর ছিলেন রাকেশ সিং, নুসরাত জাহান, রূপলেখা মিত্র-সহ মোট ৮ জন। অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে চলতি বছরের গত ৩০ জানুয়ারি ৬ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলিপুর আদালত অভিযুক্ত সংস্থার আট জনকে ২৩ শে ফেব্রুয়ারির দিন হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও নুসরত জাহান সেই সমনে হাজিরা দেননি। ৫ এপ্রিল নুসরাত আদালতে নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন জানান, সশরীরে তাঁর পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তিনি ব্যস্ত। তিনি একজন সংসদ। তিনি বছরের বেশি সময় দিল্লি থাকেন। এছাড়াও কলকাতার বাইরে থাকেন। তার আইনজীবী হাজির থাকবেন।

ওই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারক স্পষ্ট নির্দেশ দেন পরবর্তী শুনানি র দিন ২৭ এপ্রিল তাঁকে সশরীরে হাজির হতে হবে। কিন্তু তারপরেও হাজির হননি নুসরাত। তবে এই মামলায় আদালতের নির্দেশে রাকেশ সিং-কে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল।

অর্থাৎ নুসরতের বিরুদ্ধে আগে থেকেই তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। রাজ্য প্রশাসন গোটা বিষয়টিই জানত। কারণ জয়েন্ট সিপি ক্রাইমের নির্দেশে গড়িয়াহাট থানার সাব ইন্সপেক্টর গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া চালিয়েছিলেন। অনুসন্ধানের রিপোর্টেও স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। তারপরও কেন কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি? কীভাবে আদালতের সমন এড়ালেন নুসরত। প্রশ্ন উঠছে, কেন প্রতারিতরা দ্বারস্থ হওয়া মাত্রই অভিযোগ গ্রহণ করল না গড়িয়াহাট থানা? কলকাতা পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তাদেরই একাংশের ইঙ্গিত, সেখানে নুসরত জাহানের নাম থাকাতেই প্রথমটায় অভিযোগ নিতে ইতঃস্তত বোধ করেছিল থানা। পরে আদালতের নির্দেশ এফআইআর নেওয়া হয়।

রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিরাট দুর্নীতি। ওই বয়স্ক লোকরা আমার কাছে এসেছিলেন। সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে ওই সাংসদ যুক্ত। ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা একটা ফ্ল্যাটও কিনেছেন, বয়স্ক লোকগুলোর টাকা ডাইভার্ট করে। সব নথি আমাদের কাছে রয়েছে।”

নুসরতের পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাট নিয়ে প্রতারিতদের আইনজীবীর বক্তব্য, “আসল দলিলগুলো ব্যাঙ্কের কাছে জমা দেয়। সেই দলিলগুলো এখনও আছে। কিন্তু নুসরত সার্টিফায়েড কপি বার করে জমিগুলো রিসেল করে দেয়। নুসরত নিজেই ১ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়ি করেছেন। সেই টাকা আইওবি-র অ্যাকাউন্ট থেকেই এসেছে। অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাকাউন্টের টাকা থেকে চেক দিয়েছেন।”

তবে এসবের পরেও নুসরতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আমল দিতে চাইছে না তৃণমূল। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি এসব ব্যাপার বিশ্বাসও করি না। আমি মনে করি না নুসরত এই ধরনের কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত। আমি টিভিতে দেখেছি ব্যাপারটা। নুসরতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। নুসরত আমাকে বলেছে, আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি।”