দলত্যাগ নিয়ে ‘নীতিকথা’ দিলীপের; ‘ভোটের আগে মনে ছিল না?’ চরম কটাক্ষ ব্রাত্যর
এখনও বিজেপিতে (BJP) সুনীল মণ্ডলের মত সাংসদ রয়েছেন, যিনি তৃণমূলের টিকিটে জেতা। অন্যদিকে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও ছেলে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী শুধু আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যাননি, ওই অবধিই।
কলকাতা: রাজনীতির ধরনই এমন। জিতলে হাততালি পাওয়া যায় প্রচুর। কিন্তু হারলে চরম কটাক্ষ ছাড়া আর কিছুই জোটে না। দিলীপ ঘোষদের (Dilip Ghosh) এখন প্রতি মুহূর্তে কটাক্ষের বাণে বিঁধে চলেছেন তৃণমূল নেতারা। মুখ খুললেই একেবারে রে রে করে উঠছেন পাল্টা। দলত্যাগীদের নিয়ে ফেসবুকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দল ছাড়াকে অভ্যাস বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। এবার দিলীপকে বিদ্রুপের সুরে পাল্টা দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দমদমের তৃণমূল বিধায়কের কথায়, “এটা নির্বাচনের আগে মনে ছিল না। যখন উনি দলত্যাগীদের নিচ্ছিলেন। আজকে হঠাৎ মনে পড়েছে।”
রাজনৈতিক মহলের একাংশের পর্যবেক্ষণ, মুকুল রায়ের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পর থেকেই দলত্যাগ নিয়ে নানা নীতিকথা শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের মুখে। কেউ বোঝাচ্ছেন, এক দলের হয়ে জিতে অন্য দলে যাওয়াটা কতটা অনৈতিক, কেউ আবার বলছেন রাজ্যে এবার দলত্যাগ বিরোধী আইন আনার ব্যবস্থা করা হবে। অথচ একুশের বিধানসভা ভোটের আগে এই বিজেপি শিবিরেই ভিড়েছিল শাসকদলের টিকিটে জয় পাওয়া একের পর এক বিধায়ক। দু’ একজন বাদে বাকিরা বিধায়ক পদ নিয়েই পদ্মশিবিরে ঢুকে পড়েছিলেন। এখনও বিজেপিতে সুনীল মণ্ডলের মত সাংসদ রয়েছেন, যিনি তৃণমূলের টিকিটে জেতা। অন্যদিকে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীও শুধু আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যাননি, ওই অবধিই। তাঁর ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারীরও একই অবস্থান।
— Dilip Ghosh (@DilipGhoshBJP) June 13, 2021
একুশের ভোটে চরম বিপর্যয়ের পর সেই বিজেপি থেকে যখন দলে দলে লোকজন বেরিয়ে আসতে চাইছেন তখন দলত্যাগ নিয়ে কঠিন শব্দ শোনা যাচ্ছে দিলীপ ঘোষ, জয়প্রকাশ মজুমদার এমনকী শুভেন্দু অধিকারীর গলাতেও। দিলীপ ঘোষ শনিবারই টুইটারে লেখেন, ‘দল ছাড়াটা এখন একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সেই লোকেদের উপর নির্ভর করে যারা রক্ত দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছে। বিজেপিতে থাকতে হলে ত্যাগ তপস্যা করতে হবে। যারা শুধু ক্ষমতা ভোগ করতে চান, তারা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। আমরাই রাখব না।’
রবিবার দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, “এটা নির্বাচনের আগে মনে ছিল না? যখন উনি দলত্যাগীদের নিচ্ছিলেন তখন মনে ছিল না? আজকে হঠাৎ মনে পড়েছে? এখন ওনারা দলটা কী ভাবে সামলাবেন, বাংলায় দলটা কী ভাবে টেকাবেন ঠিক করুন।”
আরও পড়ুন: মাকে হারালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শোক জানাতে নাকতলার বাড়িতে অভিষেক
অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “দিলীপ ঘোষ যা বলেন অবান্তর কথা। দিলীপ ঘোষ তো বলেছিলেন স্ট্রেচারে করে সবাইকে বাড়ি পৌঁছতে হবে। বলেছিলেন জেলে দিয়ে দেবেন, সেখানে বউ বাচ্চার মুখ দেখতে পারবে না। হেরে গিয়ে দিব্যি চায়ে পে চর্চা করে বিবৃতি দিচ্ছেন। ওঁর এতটুকুও লজ্জা লাগল না বলতে, ‘২০০ পার বলে ৭৭-এ এসে ঠেকে গিয়েছি’। উনি পদত্যাগ করছেন না কেন?”