Tv9 Bangla Reporter attacked: অ্যাম্বুলেন্সের দালালচক্রের পর্দাফাঁস! নিগৃহীত টিভি ৯ বাংলার প্রতিনিধি ও ক্যামেরা ম্যান
Malda: একজন গরীব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে এসে তার হাতে লম্বা বিল ধরিয়ে দেওয়া হল। আর তারপর গোটা বিষয়টিকে ঢাকতে রটিয়ে দেওয়া হল যে কন্যা সন্তান হওয়ায় তার বাবা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আর এই ঘটনার খবর প্রকাশ করতে গিয়ে মার খেতে হল আমাদের সাংবাদিককে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
খবরের সূত্রপাত হয় মালদায়। গত ৩ ডিসেম্বর মালদার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কন্য়া সন্তানের জন্ম দেন এক প্রসূতি। সেই সময় হাসপাতালের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্যই তাঁর স্বামী ও পরিবার তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই মিথ্যা প্রমাণিত হয় সেই ঘটনা। সত্যি ঘটনা সামনে আনে টিভি ৯ বাংলা। দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরামে পৌঁছায় টিভি ৯ বাংলার প্রতিনিধি রূপক সরকার। সেখানেই ওই মহিলার বাড়ি।
তখন ওই মহিলা জানান যে, কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য নয়, হাসপাতালের আকাশ সমান বিল মেটাতেই ভিনরাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছেন তাঁর স্বামী। মহিলার বয়ান অনুযায়ী, তারা প্রথমে মালদায় সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলেন গাড়িটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই নার্সিংহোমে ভর্তি করতে কারণ এখানকার পরিষেবা ভালো।
ওই সময় কোনও কিছু বিচার না করেই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ওই মহিলা। এরপর আইসিইউ-তে তাঁর বিল হয় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এত টাকা দেখেই আকাশ ভেঙে পড়ে অসহায় ওই পরিবারের মাথায়। গরিব মানুষ কোথা থেকে পাবেন এত টাকা? এরপর মহিলার স্বামী মোট কুড়ি হাজার টাকা জমা দিয়ে বেরিয়ে যান বাকি টাকা রোজগার করতে।
এই ভাবে কেটে যায় প্রায় কুড়ি দিন। এদিকে, মহিলার অভিযোগ হাসপাতালের আয়ারা তাঁকে বোঝাতে শুরু করেন যে কন্যা সন্তান হওয়ার জন্যই তার স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
সূত্রের খবর, এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবে খবর পায় যে এতদিন রোগীকে হাসপাতালে রাখায় তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল ভাঙচুর করতে আসছে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই সত্বর তারা যোগাযোগ করে পুলিশের সঙ্গে। পাশাপাশি মকুব করে দেয় রোগীর তিন লাখের বিল। ছেড়ে দেওয়া হয় মহিলাকে। মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশের সহায়তায় মহিলা পৌঁছায় বাড়িতে।
কিন্তু দিনাজপুরের দুস্থ আদিবাসী প্রসূতিকে কেন নিয়ে আসা হল মালদার ওই বেসরকারি হাসপাতালে? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই ঝুলি থেকে বেরিয়ে এল বিড়াল। জানা গেল, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার লাগাম ছাড়িয়ে নার্সিংহোমের ক্ষপ্পরে পড়ল আদিবাসী পরিবার।
এই বিষয়ে জখম হওয়া আমাদের প্রতিনিধি শুভতোষ ভট্টাচার্য জানান, “মালদায় রমরমিয়ে চলছে দালাল চক্র। যারা এই ভাবে অ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস্থ রোগীদের বিভিন্ন কারসাজি করে বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে দেন। আর তারপরই সেই নার্সিংহোম আকাশ সম বিল করে রোগীর পরিবারের হাতে ধরিয়ে দেয়। এই সকল বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর আমরা যখন বেসরকারি ওই হাসপাতালটিতে পৌঁছালাম সেই সময় হাসপাতালের স্টাফ সেজে থাকা দুষ্কৃতী আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের ক্যামেরা ম্যানের ক্যামেরা হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বেধড়ক ভাঙচুর করে তাঁকে। আমি বাঁচাতে গেলে আক্রমণ করা হয় আমাকেও। এই দুষ্কৃতীদের যে খবর আমরা পেয়েছি তা হল এরা বিভিন্ন সমাজ বিরোধী কাজের সঙ্গে সরাসরি লিপ্ত।”