TV9 Explain: DA বাকি ৬ লক্ষ পর্যন্ত, ৩৪-এর বদলে জুটেছে ৩! কর্মীদের লড়াই আর কতদিন?

DA Case: আদালত তিনবার কড়া নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্য সরকার বকেয়া ডিএ মেটায়নি। দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীরা। এবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য।

TV9 Explain: DA বাকি ৬ লক্ষ পর্যন্ত, ৩৪-এর বদলে জুটেছে ৩! কর্মীদের লড়াই আর কতদিন?
বকেয়া ডিএ নিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মীরা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 22, 2022 | 2:11 PM

মহার্ঘ ভাতা নিয়ে সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের লড়াই চলছে। গত কয়েক বছরে বারবারই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার তা কানে তোলেনি বলেই অভিযোগ। বকেয়া বাড়তে বাড়তে যখন ৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে, তখন সরকারি কর্মীদের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৩ শতাংশ। যে ভাতাকে কর্মীদের অধিকার বলে উল্লেখ করেছে আদালত, সেই ভাতা দিতে কেন এত অনীহা রাজ্যের? উচ্চ থেকে উচ্চতর আদালতে আর কতদিন ধরেই বা চলবে এই লড়াই?

ঠিক কত মহার্ঘ ভাতা বকেয়া আছে?

সরকারি কর্মী সংগঠনের তরফ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০-তে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু হিসেব অনুযায়ী পাওয়ার কথা ছিল ৩৪ শতাংশ। সুতরাং ৩১ শতাংশ বকেয়া আছে।

শতাংশের হিসেব কষলে দেখা যাবে, একজন গ্রুপ ডি কর্মীর পাওয়ার কথা কমপক্ষে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, একজন গ্রুপ সি কর্মীর পাওয়না আছে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্টের ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, হেড অ্যাসিস্ট্যান্টের ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও সেকশন অফিসারের প্রায় ৬ লক্ষ টাকা এরিয়ার হিসেবে পাওয়া উচিত। বর্তমানে কেন্দ্রের তুলনায় ৩১ শতাংশ কম ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।

কতবার কড়া নির্দেশ দিয়েছে আদালত?

একবার নয়, একাধিকবার এই মহার্ঘ ভাতা নিয়ে মামলা হয়েছে। প্রথমে ২০১২ সালে এই মামলা হয় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে (স্যাট)। ২০২০ সালের ২৬ জুলাই স্যাট নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে ৬ মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মামলা পৌঁছয় হাইকোর্টে। রাজ্য সরকার স্যাটের নির্দেশ বাতিলের আর্জি জানায়। সেবারও রাজ্যের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার যে ধাক্কা খেল আদালতে, তা প্রথম নয়। তিন বার রাজ্যের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বারবারই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ডিএ সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য।

কোন যুক্তিতে রাজ্য বলছে ডিএ বাকি নেই?

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ডিএ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেব করেই রাজ্য বলছে, কোনও ডিএ বাকি নেই। সম্প্রতি হাইকোর্টে পুজোর অনুদান সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনটাই দাবি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, সুপারিশ অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলেও আগের যা বকেয়া আছে, তা মেটানো হয়নি।

কেন পুনর্বিবেচনার কথা বলেছিল রাজ্য?

রাজ্যের দাবি, মামলায় কিছু ভুল-ভ্রান্তি আছে। সেগুলোই ফের বিবেচনার কথা বলা হয়েছিল। কী সেই ভুল? তামিলনাড়ুর একটি মামলা সহ বিভিন্ন মামলায় উদাহরণ উল্লেখ করে, রাজ্য দাবি করেছে আর্জি সঠিক ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।

কী হবে রাজ্যের পরবর্তী পদক্ষেপ?

কলকাতা হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ দিতেই হবে রাজ্য সরকারকে। বৃহস্পতিবার কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পর এবার রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন, অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, শীর্ষ আদালতে নিজেদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে চায় রাজ্য।

সুপ্রিম কোর্টেও লড়তে প্রস্তুত বিরোধীরা, কী বলছেন বিরোধীরা?

কনফেডারেশন অব স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, আদালতে সময় নষ্ট বলে কিছু হয় না। বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে লড়াই করতে রাজি তাঁরা। রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে গেলে, সেখানেও লড়াই করার প্রস্তুতি রয়েছে তাঁদের।

এদিনের রায় প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনই বলেননি যে ডিএ দেওয়া হবে না। আগেও তিনি এ ব্যাপারে যা বলেছেন, তাই করেছেন।’ তবে আপাতত এটি বিচারাধীন বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে ফিরিয়ে দিয়েছে। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘খেলা মেলা করবেন ভাল কথা। কিন্তু যাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন, তাঁদের কথাও বিবেচনা করা উচিত। আশা করছি সুপ্রিম কোর্টেও হেরে যাবে।’