বছর ১৩ পার, টাটাকে বাংলায় ফেরাতে চান পার্থ

Tata West Bengal: যে সংস্থার কারখানা উচ্ছেদ করে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সংস্থার থেকেই এখন বিনিয়োগ টানার আগ্রহ দেখাচ্ছে সেই তৃণমূল সরকার।

বছর ১৩ পার, টাটাকে বাংলায় ফেরাতে চান পার্থ
অলংকরণ-অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 19, 2021 | 7:32 PM

কলকাতা: প্রায় ১৩ বছর আগের কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলনের জেরে বাংলা ছেড়ে গুজরাটে চলে গিয়েছিল টাটা। সেই আন্দোলনে মমতার সর্বক্ষণের সঙ্গী মুকুল রায়ের মতো নেতাকেও পরবর্তী সময়ে বলতে শোনা যায়, ‘সিঙ্গুর আন্দোলন ভুল ছিল’। তৃণমূল তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর আসনে বসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ বার টাটাকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। যে সংস্থার কারখানা উচ্ছেদ করে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সংস্থার থেকেই এখন বিনিয়োগ টানার আগ্রহ দেখাচ্ছে সেই তৃণমূল সরকার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন পার্থ।

ভারী শিল্প না হলে বড় আকারে কর্মসংস্থানের আশা পশ্চিমবঙ্গে নেই। চুপিসাড়ে এ কথা এক লপ্তে স্বীকার করেন শাসকদলের নেতা নেত্রীরাও। তৃতীয় তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার আগে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উদ্দেশ্যে দ্রুত অন্তত দু’টি বড় মাপের শিল্প রাজ্যে আনতে চান পার্থবাবু। যার মধ্যে টাটা অন্যতম সংস্থা হতে পারে, এমন সম্ভবনার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পার্থ বলেন, “আমাদের কখনই টাটার সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না, আমরা ওদের সঙ্গে লড়াইও করিনি। দেশে এবং বিদেশে, টাটার নাম অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে নেওয়া হয়। সিঙ্গুর কাণ্ডের জন্য টাটাকে দোষ দেওয়া যায় না। সমস্যাটা বাম শাসিত সরকারের জোরপূর্বক জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ছিল। বাংলায় বিনিয়োগ করার জন্য আমরা সর্বদা টাটাকে স্বাগত জানাই।”

রাজ্যে টাটা আরও বড় বিনিয়োগ করতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা গিয়ে পার্থর গলায়। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে ইতিমধ্যেই টাটা মেটালিকা, টিসিএস এবং একটি টাটা সেন্টার রয়েছে। কিন্তু টাটা যদি চায় বড় মাপের প্রস্তুতকারী শিল্প নিয়ে আসতে, সে ক্ষেত্রেও আমাদের কোনও সমস্যা নেই। রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সচিব সম্প্রতি আমায় জানিয়েছেন, টাটা আরেকটি সেন্টার তৈরির আগ্রহ দেখিয়েছে।” রাজ্য সরকারের তরফেও বিনিয়োগের জন্য সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যে শিল্পমন্ত্রী।

রাজ্যে যথেষ্ট পরিমাণ ভারী শিল্পের উপস্থিতি না থাকার কারণে অধিকাংশ সময়ই তৃণমূল নেত্রীর সিঙ্গুর আন্দোলনকেই দায়ী করেন বিরোধীরা। এমনকী, তৃণমূলের একাংশের নেতাদেরও ঘনিষ্ঠ মহলে একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছে, টাটা না গেলে এ রাজ্যে আরও শিল্প আসত। তবে যে পক্ষ যাই বলুক, সিঙ্গুরের জমিতে তৃণমূল নেত্রীর এই আন্দোলন এবং অনশন কোনও ভাবেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। কিন্তু ক্ষমতায় আসার জন্য যে আন্দোলনকে সিঁড়ি হিসেবে তৃণমূল ব্যবহার করেছিল, সেটাই এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসকদলের জন্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যতদিন না টাটাকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, ততদিন যে ‘শাপমুক্তি’ হবে না, সেটা হয়তো বুঝতে পারছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদীকে ‘বাংলাদেশি’ মন্ত্রীর পরিচয় করাতে দেবে না তৃণমূল

COVID third Wave