Duare Sarkar: দুয়ারে সরকারে কাজ করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা, স্কুলের দুয়ারে তাহলে কারা?

KMC: কলকাতা পুরনিগমের কর্মিবর্গ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মী সঙ্কটের কারণে অন্য কোনও বিভাগ থেকে কর্মী নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Duare Sarkar: দুয়ারে সরকারে কাজ করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা, স্কুলের দুয়ারে তাহলে কারা?
স্যানিটাইজেশনের কাজ খতিয়ে দেখছেন মালা রায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 15, 2022 | 5:47 PM

সায়ন্ত ভট্টাচার্য: অঙ্গনওয়াড়ি থেকে আপার প্রাইমারি পর্যন্ত সমস্ত স্কুলই খুলে যাচ্ছে (School Reopen) বুধবার থেকে। সেইমতো রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরও তৎপর। স্বাভাবিকভাবেই একইসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের (KMC) প্রাথমিক স্কুলগুলিও খুলতে চলেছে। কলকাতায় মোট ১৭৫ টি স্কুল ভবনে সকাল-দুপুর মিলিয়ে মোট ২৪১টি স্কুল চলে। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরাজি এবং ওড়িয়া মাধ্যমের স্কুল রয়েছে কলকাতা পুরনিগমের অন্তর্গত। প্রায় ১৮ হাজার পড়ুয়া রয়েছে। প্রি- প্রাইমারি থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়ুয়ারা এই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা। স্কুল খোলার নির্দেশ জারি হওয়ার পর থেকেই পুরসভার সবক’টি স্কুলভবন স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তুমুল তৎপরতা। তবে স্কুল খোলার নির্দেশের পর সঙ্কট তৈরি হয়েছে অন্য জায়গায়। কারণ, সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar)। যেখানে কলকাতা পুরনিগমের শিক্ষক-শিক্ষিকাকে যুক্ত হওয়ার জন্য কার্যত অলিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৬০০ জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ১৩০ জন অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষক- শিক্ষিকারা যদি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে যান, তাহলে স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করাবেন কারা? পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের থেকে কি সরকারি প্রকল্প বড় হয়ে দেখা দিল?

কলকাতার ক্ষেত্রে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে পুরনিগমের স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। পুরসভার প্রায় সব চুক্তিভিত্তিক এবং স্থায়ী শিক্ষক শিক্ষিকা গতবার থেকে এই কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। পুরসভার প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, গতবার করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ ছিল। যে কারণে স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকতে পেরেছিলেন। কিন্তু এবার তো স্কুল খোলার নির্দেশ রয়েছে। তাহলে তাঁরা কীভাবে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন? এও প্রশ্ন উঠেছে, পুরনিগমের অন্যান্য বিভাগ থেকে কেন পর্যাপ্ত কর্মী নেওয়া হচ্ছে না দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে?

কলকাতা পুরনিগমের কর্মিবর্গ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মী সঙ্কটের কারণে অন্য কোনও বিভাগ থেকে কর্মী নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্কুল খুলছে বুধবার থেকে। এই অবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা কীভাবে দুয়ারে সরকার ও স্কুলের ক্লাস একসঙ্গে চালাবেন, তা নিয়ে নিঃসন্দেহে ধোঁয়াশা থাকছে। সূত্রের খবর, এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের কর্মিবর্গ বিভাগ পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে একটি রিপোর্টও দিয়েছেন। কিন্তু এত জটিলতা থাকা সত্ত্বেও বিকল্প কোনও পথ এখনও পুরসভা বের করতে পারিনি বলেই সূত্রের খবর। তবে রোটেশন পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে রাখা যায় কি না সেটাই চিন্তাভাবনা করছে পুর প্রশাসনের কর্তারা।

যদিও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম মঙ্গলবার মুদিয়ালি দুয়ারে সরকার কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে বলেন, কোনও সমস্যা হবে না। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঠিকভাবেই দুয়ারের সরকার কর্মসূচিতে যুক্ত করা হবে। স্কুল বন্ধ রেখে বা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঢেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই প্রকল্পতে নিয়ে যাওয়া হবে না। পুরনিগমের চেয়ারপার্সন মালা রায়েরও দাবি, কোনও স্কুল বন্ধ থাকবে না। সঠিকভাবে দায়িত্ব দিয়ে স্কুল চালানো হবে। যাতে কোনও জায়গাতেই স্কুল চালানোর ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব না হয় তা নজরে রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, মেয়র কিংবা চেয়ারপার্সনের দাবি এবং বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন চিহ্ন রয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: SSC Group C Recruitment: স্কুলের চাকরিতে বড় ধাক্কা! গ্রুপ সি নিয়োগেও সিবিআই অনুসন্ধান কলকাতা হাইকোর্টের!