Na Bollei Noy: ডিএ একজন কর্মীর প্রাপ্য, কোর্ট বারবার বললেও কেন সহজে মানতে পারছে না সরকার? যে কথা ‘না বললেই নয়’
Na Bollei Noy: আজ থেকেই পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়ে গেল। তা বলে কি রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ না পাওয়ার আক্ষেপ মিটে যাবে?
ভাল-মন্দ যা ঘটুক। সত্যকে সহজ করে নিতে বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু বাস্তবে সত্যকে অত সহজ করে নেওয়া সহজ না কি? যেমন ধরুন ডিএ (DA) মানে মহার্ঘ ভাতা কর্মচারীদের হকের পাওনা, এটা একেবারে নির্জলা সত্যি। আদালত বারবার সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। সাল, মাস, তারিখ গুনে বললে, ছ-ছটা বছর ধরে বলছে। বারবার আদালত রাজ্যের সরকারকে সত্যিটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকার সত্যিটাকে সহজ করে নিতেই পারছে না।
অথচ দেখুন এরাজ্যের সরকার কী ভীষণ মানবিক! মেলা-খেলাতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচা হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সরকারি টাকায় বিশ্ববাংলার লোগো বসানো হয়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে মাসে ৫০০ টাকা হলেও দেওয়া হয়। কন্যাশ্রী,যুবশ্রী, ওমুক শ্রী, তমুক শ্রী-র জন্য দরাজ হস্তে দান করে রাজ্য।
অথচ যত সমস্যা ডিএ-র টাকা দিতে! কেন বলুন তো? নিজের কর্মচারীকে হকের পাওনা দিতে কীসের সমস্যা? কেন বারবার আদালতে দৌড়াচ্ছে রাজ্য সরকার? ভোট প্রচারে তৃণমূলই তো বলে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পাশে থাকে তাদের সরকার। তাহলে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের কেন চাতকের মতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে? ভাতা দিয়ে বেশি ভোট টানা যায় বলে? সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিলে বেশি মানুষকে সন্তুষ্ট করা যায় বলেই কি?
আজ থেকেই পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়ে গেল। তা বলে কি রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ না পাওয়ার আক্ষেপ মিটে যাবে? যে চাকরিপ্রার্থীরা এই ভরা আশ্বিনেও হকের চাকরির জন্য রাস্তায় বসে আছেন? পুজো উদ্বোধন হচ্ছে বলে কি তাঁরা আনন্দে ভাসবেন? ডিএ এবং যোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট একদম সময় বেঁধে দিয়েছে। তারপরও কি ইগো ঝেড়ে ফেলে রাজ্য সরকার আদালতের কথা শুনবে?
সন্দেহ নেই রাজ্যের শাসক দল হিসেবে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। ১১ বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমন ব্যাড প্যাচ কখনও দেখেনি তারা। কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারিতে মুখ পুড়ছে। আদালত ধমক দিচ্ছে। বিচারপতি প্রকাশ্যে সরকারের প্রতিনিধি এবং শাসক নেতাদের সমালোচনা করছেন। রাজ্যের মানুষ সব দেখছে প্রাক্তন মন্ত্রী, হেভিওয়েট নেতা, প্রাক্তন আমলা, বর্তমান উপাচার্য লাইন দিয়ে জেলে যাচ্ছেন। লোকে হাসাহাসি করছে। তাতে কি তৃণমূলের কিছু যায় আসে? মনে হচ্ছে, যায়ে আসে।
একা হয়ে পড়ছে বুঝতে পেরেই তৃণমূল সন্ধিতে রাজি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। দেখুন, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে যদি আজকেই রাজ্যে ভোট হয়, তাহলে তৃণমূল ২০১১ সালের মতো বিপুল সমর্থন নিয়ে ফিরবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু যদির কথা নদীতে। রাজ্যে এখন পঞ্চায়েত ভোট ছাড়া কোনও ভোট নেই। তারপর, লোকসভা ভোট। সেই ভোট দেশের সরকার নির্বাচনের। ২০২৪ সালের দিকে তাকিয়ে কি জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের ইগো বিসর্জন দিতে চাইছে তৃণমূল? তাই কি শরদ পাওয়ারের মাধ্যমে সনিয়া গান্ধীর কাছে, সন্ধি প্রস্তাব পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বিপদে পড়েই বন্ধু খুঁজছেন তাঁরা? এসব নিয়ে অনেক কথা, যে সব কথা না বললেই নয়। না বললেই নয়, দেখবেন টিভি নাইন বাংলায়। রাত ৮.৫৭ থেকে।