Group D: মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘণ্টা বাজাবে কে? ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর ছাঁটাইয়ে উঠছে প্রশ্ন
Group D: গ্রুপ ডি কর্মীরা স্কুলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে বলতে গিয়ে একাধিক স্কুলের শিক্ষকই বলছেন, ওনারা না থাকলে পড়ুয়াদের সবসময় নজরে রাখা, বিভিন্ন কাজে সমস্যা তো হবেই।
কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে গ্রুপ ডির (Group D) ১৯১১ জন কর্মীর। শুক্রবার আদালত এই নির্দেশ দেওয়ার পরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে ১ হাজার ৯১১ জনের নামের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এই চাকরি বাতিলের প্রভাব স্কুল পরিচালনায় কতটা পড়বে, তা নিয়েও ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠছে। যে ১ হাজার ৯১১ জনের চাকরি বাতিলের কথা বলা হয়েছে, সেখানে এমন স্কুলও আছে যেখানে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের সিট পড়ে। এ ধরনের পরীক্ষায় স্কুলের গ্রুপ ডি কর্মীদের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে এক ধাক্কায় প্রায় ২ হাজার গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি যাওয়া মানে স্কুলগুলিতে এই কর্মীদের জায়গা কার্যত ফাঁকা হয়ে যাওয়া। এমনও স্কুল আছে, যেখানে ১ জন মাত্র গ্রুপ ডি কর্মী কাজ করেন। ফলে নিয়োগ সুপারিশে ভুল থাকার কারণে যদি ওই ১ জন কর্মীরই চাকরি যায়, মাধ্যমিকে খাতা এগিয়ে দেওয়ার লোকও থাকবেন না স্কুলে। যদিও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলছে, উদ্বেগের কিছু নেই। সমস্যা হবে না।
বিভিন্ন স্কুলে এই গ্রুপ ডি কর্মীদের ভূমিকা বাকি শিক্ষাকর্মীদের থেকে কোনও অংশে কম নয়। স্কুলের ঘণ্টা বাজানো থেকে শুরু করে স্টাফ রুমে জল দেওয়া, ফাইল এগিয়ে দেওয়া সবই করেন তাঁরা। মাধ্য়মিকে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট কাজ থাকে তাঁদের। সেখানে এতজনের একসঙ্গে ছাঁটাই হওয়া পরীক্ষায় প্রভাব ফেলবে কি না তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদও।
যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে পর্ষদ। সূত্রের খবর, এ নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবছে তারা। কী সেই বিকল্প ব্যবস্থা? পার্শ্ববর্তী কোনও স্কুল থেকে কর্মী এনে যদি পরীক্ষা কেন্দ্রের কাজ চালানো যায়। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শুক্রবারই সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেবে মাধ্যমিক বোর্ড বা উচ্চমাধ্যমিক কাউন্সিল। ওদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। নিশ্চয়ই ওদের কোনও বিকল্প ভাবনা থাকবে। ওরা জানালে আমরা সেইমতো পরামর্শ বা গাইডলাইন দিতে পারব।”
তবে গ্রুপ ডি কর্মীরা স্কুলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে বলতে গিয়ে একাধিক স্কুলের শিক্ষকই বলছেন, ওনারা না থাকলে পড়ুয়াদের সবসময় নজরে রাখা, বিভিন্ন কাজে সমস্যা তো হবেই। এর আগে আদালতে রাজ্যের তরফেও বলা হয়েছিল, এভাবে যদি এতজনকে হঠাৎ বসিয়ে দেওয়া হয় তাহলে স্কুলের গেট খোলার লোক পাওয়া যাবে না। বহু স্কুলে ঘণ্টা বাজানোর লোকও থাকবেন না। এ্বার বোধহয় সেই অবস্থা হতে চলেছে। যদিও একাংশের মতে, নিয়োগে স্বচ্ছতাই শেষ কথা। সেটা যদি মান্যতা পেত, তাহলে এই অবস্থাই আজ হতো না। তাই সাময়িক সমস্যা হলেও তা মানিয়েই চলতে হবে।
মাধ্যমিক পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিকভাবে যেটা দেখেছি ৪০০ প্লাস স্কুল জুনিয়র স্কুল। সেগুলি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত নয়। বাদবাকি স্কুলগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। পর্যালোচনা করছি। আমি নিশ্চিত যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সে ব্যবস্থা আমরা করে নেব। ডিআই ও দফতরের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। মনে হয় না মাধ্যমিক ব্যবস্থায় তেমন প্রভাব পড়বে।”