CBI: কোন ৮৬ জন সিবিআই স্ক্যানারে? বোমা ফাটালেন সজল ঘোষ
CBI: ৮৬ জনের মধ্যে কলকাতা পুরনিগমের ১৩ জন কাউন্সিলর রয়েছেন বলে সূত্রের দাবি।
কলকাতা: সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বছর ঘুরতেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে আবারও বড়সড় অভিযানে নামছে সিবিআই। সূত্রের খবর, ৮৬ জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে নিয়োগ ‘দুর্নীতি’-যোগের সূত্র মিলেছে। এবার সেদিকেই নজর দিতে চলেছে তারা। আগামী ১০ মার্চ দিল্লিতে একটি রিভিউ বৈঠক রয়েছে সিবিআইয়ের। সূত্রের খবর, এরপরই কোন পথে তদন্ত এগোবে তা ঠিক করা হবে। এই ৮৬ জনের মধ্যে কলকাতা পুরনিগমের ১৩ জন কাউন্সিলর রয়েছেন বলে সূত্রের দাবি। একইসঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য একাধিক পুরসভা-পুরনিগম, জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন স্ক্যানারে। এই তথ্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির তরফে কলকাতার কাউন্সিলর সজল ঘোষ দাবি করেছেন, আরও আগে এটা হলে ভাল হতো। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী বলেন, বাম আমলে কাউন্সিলরদের জীবনযাপন আর বর্তমান কাউন্সিলরদের জীবনযাপনের পার্থক্যই বুঝিয়ে দেন কীভাবে কী চলছে। কংগ্রেসের কৌস্তভ বাগচীর যদিও দাবি, এসব ভোট আসলেই ভেসে ওঠে। তৃণমূলের থেকে বিজেপির আসন হাতানোর চেষ্টা বলেও দাবি করেন তিনি। তবে তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, সামনে লোকসভা ভোট। তাই এসব চলছে। তাঁর প্রশ্ন, এখনও অবধি কতগুলো মামলার সমাধান করতে পেরেছে সিবিআই, সেটা একবার বলা হোক।
এসএসসি, টেট, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি’র মতো একাধিক মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। তদন্তকারীরা প্রথম থেকেই দাবি করছেন, এই জাল অনেক দূর গড়িয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন স্তরের ‘প্রভাবশালী’ এতে জড়িয়ে। বহু হাত ঘুরে এসেছে এই নিয়োগসংক্রান্ত টাকা। নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে চাকরি গিয়েছে এমন অনেকের সঙ্গেই কথা বলেন তদন্তকারীরা। সেই জিজ্ঞাসাবাদেই এই নামগুলি উঠে আসে বলে সূত্রের খবর।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, “অনেক আগেই এটা হওয়া উচিত ছিল। এক পার্থকে গ্রেফতারের পর এত লাফালাফি হচ্ছে। কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের পার্থরা আছেন। আমি বলতে পারি বেলেঘাটা এলাকায় এক একজন কাউন্সিলরের কাছে অন্তত ১৫০-২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। আমি একজন কাউন্সিলর, আমি দায়িত্ব নিয়ে এটা বলছি।”
যদিও কংগ্রেসের মুখপাত্র-আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর বক্তব্য, “চোরদের জেল হওয়াই উচিত। কিন্তু তা তো হচ্ছে না। চোরেরা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। সিবিআইয়ের কোনও তৎপরতাই তো দেখছি না। লোকসভা ভোট আসছে। প্রেশার পলিটিক্স করে তৃণমূলের থেকে কিছু আসন নিয়ে নেওয়ার ধান্দা। আমি এটা আলাদা করে এর কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না যতক্ষণ না সব চোর ধরা পড়ছে।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এখন কাউন্সিলর তো কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে যান। সম্পত্তির কোনও অভাব নেই। বাড়ি, গাড়ি ইত্যাদি। কেন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে? রাজ্য সরকারের দফতরগুলির অপদার্থতার কারণেই সিবিআই সুযোগ পাচ্ছে। এটা তো রাজ্য সরকারেরই করা উচিত ছিল।”
যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, ৮৬ জন কেন, ৮৬০ জন হোক না তাতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু তদন্ত করবে কে? সিবিআইয়ের তদন্তে সাফল্য কতটুকু, প্রশ্ন তোলেন তিনি। শান্তনু সেনের কথায়, “রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাইজও আজ অবধি খুঁজে দিতে পারল না। তারা সিঙ্গুর, নেতাই, নন্দীগ্রাম থেকে ছোট আঙারিয়া কোনও ঘটনারই সুরাহা করতে পারেনি। তাদের নিরপেক্ষতা কী? বিজেপিতে যোগ দিলে তদন্ত হবে না। আসলে লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, তত বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলোতে ইডি, সিবিআইয়ের তৎপরতা বাড়বে। দিল্লি থেকে রিমোট কন্ট্রোলে তত ব্যবহার করা হবে। দেশের মানুষ বুঝে গিয়েছে।”