SSC: আন্দোলনের মুখই ‘অযোগ্য’ শিক্ষক! কমিশনকেই কাঠগড়ায় তুললেন ‘শিক্ষিকা’ পূর্বিতা
SSC: এদিন যাঁরা কমিশনে বৈঠকে এসেছিলেন, অনেকেই ২০১৯ সালে আন্দোলনের মুখ ছিলেন। যেমন ছিলেন পূর্বিতা।
কলকাতা: ২০১৯ সালে আন্দোলনের মুখ ছিলেন পূর্বিতা রায়। চাকরির সুপারিশ পেয়ে স্কুলে পড়াচ্ছেন তিনি। এদিকে এসএসসি (SSC) তালিকা প্রকাশ করে বলেছে ১৮৩ জন ভুল করে সুপারিশপ্রাপ্ত। সেই তালিকায় নাম রয়েছে পূর্বিতার। পূর্বিতা-সহ ১৮৩ জন সুপারিশ পাওয়ারই যোগ্য নন বলে মত স্কুল সার্ভিস কমিশনের। ১৮৩ জনের মধ্যে সবাই চাকরি করছেন এমন নয়। ৮১ জন শিক্ষক কিংবা শিক্ষিকা হয়ে গিয়েছেন। আর সেই তালিকায় নাম রয়েছে পূর্বিতার। পূর্বিতার দাবি, তিনি কোনওরকম ভুল সুপারিশের শিক্ষিকা নন। দু’টি মেধাতালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। তাই তিনি চাকরি পাওয়ার যোগ্য। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কমিশন ১৮৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে। এই ১৮৩ জনের নামই ‘ভুল সুপারিশে’র বলে জানায় কমিশন। এই ১৮৩ জনের মধ্যে ৯ জন তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে যান। হাইকোর্টের নির্দেশেই সোমবার এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এদিন যাঁরা কমিশনে বৈঠকে এসেছিলেন, অনেকেই ২০১৯ সালে আন্দোলনের মুখ ছিলেন। যেমন ছিলেন পূর্বিতা। প্রেস ক্লাবের সামনে তাঁদের আন্দোলন কোভিড পূর্ব সময়ে যথেষ্ট সাড়াও ফেলে। এরইমধ্যে পূর্বিতা চাকরি পান। পূর্বিতার দাবি, শুধু তিনি নন, অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। পূর্বিতার কথায়, “রংলি রেকমেন্ডেড মানে কখনওই অযোগ্য নয়। এর অর্থ ভুলভাবে সুপারিশ।
১৮৩ জনের মধ্যে ১১০ জন ফেল করা ক্যান্ডিডেট। ১০ জন পাশ করা ক্যান্ডিডেট। বাকি ৭৩ জনের মধ্যে অনেকের হয়ত Rank Jump হয়েছে বা অন্য কারণে রাখা হয়েছে। তারা কেউ ফেল করা বা অকৃতকার্য নন। তবে আমার তো মেরিট লিস্টে নাম আছে। দু’ জায়গায় নাম আছে। আমি কোর্টে জানিয়েছি, কেন আমাকে রংলি রেকমেন্ডেড বলা হল তা জানাতে। তাই হাইকোর্টের নির্দেশে আজ এসএসসির চেয়ারম্যানের কাছে এসেছি।”
কিন্তু কেন এত জটিলতা হল এই পূর্বিতাদের চাকরি নিয়ে? চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ অভিযোগ তোলে, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়েছে অনেককে। চাকরি প্রার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই যোগ্য নন, কিন্তু আন্দোলনের মুখ হয়ে চাকরি পেয়ে যান। এরপরই মামলার গেঁড়ো।
এদিন পূর্বিতা রায় বলেন, “২০১৯ সালের আন্দোলনে ছিলাম। কিন্তু মেধা তালিকায় নাম আছে আমার। দু’ জায়গায় র্যাঙ্ক। এসএসসি রেকমেন্ড করেছে তাই কোনও ভুল থাকলে সেটা ওরা জানে। আমার ক্ষেত্রে কোনও ভুলই নেই। আমি পাশ করা। আন্দোলনেও তো ছিলাম। তা হলে টাকা দেওয়া বা নিয়ম ভাঙার প্রশ্নই নেই। আর আন্দোলন করার ক্ষেত্রেও অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। এখানে বলা হচ্ছে কেউ চাকরি পায়নি। আড়াই তিন হাজার জনের কাউন্সেলিং হয়েছে, চাকরি পেয়েছেন। তারপরও হয়ত এসএসসির কিছু ভুল আছে। তাতে আমার কী করার।”
সোমবার সিদ্ধার্থ মজুমদার ৯ জনের বক্তব্য শোনেন। এসএসসি অবশ্য প্রাথমিকভাবে মনে করছে, তাদের ১৮৩ জনের তালিকায় কোনও ভুল নেই। অর্থাৎ ১৮৩ জনই ভুল সুপারিশে তালিকাভুক্ত। তাই তালিকায় নাম রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করছে এসএসসি। তবে অযোগ্যদের ডকুমেন্টস খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে রিপোর্ট দেবে। তারপর জানা যাবে, কী ভবিষ্যৎ হয় তাঁদের চাকরির।