Child Death: আরও ২ শিশুর মৃত্যু বি সি রায়ে, কলকাতা মেডিক্যালে আরও ১
BC Roy Hospital: জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যে শ্বাসকষ্টে মোট মৃত্যু ১২৫ জনের। এর মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের।
কলকাতা: বাচ্চাদের জ্বর, সর্দিকাশি এবং বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গিয়ে শ্বাসকষ্ট উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যমহলের। শিশুমৃত্যুও অব্যাহত। ফের বি সি রায় শিশু হাসপাতালে (BC Roy Hospital) শিশুমৃত্যু। বি সি রায় শিশু হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকালে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। বয়স ৯ মাস ১৪ দিন। রাজারহাটের বাসিন্দা ছিল সে। জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এনআইসিইউয়ে ২২ দিন ধরে ভর্তি ছিল শিশু। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় তার। এর আগে বুধবার রাতে এই হাসপাতালেই রুদ্রাংশু কুমার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। বয়স ৯ মাস। ফুলবাগানের বাসিন্দা ছিল সে। জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে রবিবার ভর্তি করা হয় তাকে। বুধবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয় বুধবার রাতে। বয়স ১ বছর ২ মাস। নদিয়ার ফুলিয়ার বাসিন্দা ছিল। গত ৪ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছিল। এরপর এখানে চিকিৎসা চলে। বুধবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হয় তার।
জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যে অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী শ্বাসকষ্টে মোট মৃত্যু ১২৫ জনের। এর মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। এছাড়া আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ একাধিক হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর খবর আসছে। তবে সর্দিকাশি, জ্বর বা শ্বাসকষ্টে শিশুমৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি কারণও উল্লেখযোগ্য। প্রথমত, বিসি রায় শিশু হাসপাতালের উপর একটা চাপ রয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য যে হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে এই সমস্ত উপসর্গ নিয়ে শিশু গেলে, বড় অংশকে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে হাসপাতালের পরিকাঠামোর উপর একটা চাপ পড়ছে।
দ্বিতীয়ত, রেফার সমস্যা এ ক্ষেত্রে একটা বড় চেহারা নিচ্ছে বলে মত চিকিৎসকমহলের। যখন শিশুদের রেফার করা হচ্ছে, তাদের শারীরিক অবস্থা কেমন থাকছে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে। শিশুকে কি স্থিতিশীল করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে নাকি তৎক্ষণাৎ বিসি রায় শিশু হাসপাতাল হোক বা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন না যে শিশু শ্বাসকষ্ট বা জ্বরের ধকল নিয়ে এতটা পথ আসছে, তার জন্য পরবর্তী লড়াই কঠিন হয়ে উঠছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এইসব কারণগুলি অনুঘটকের কাজ করছে শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “যেখানে ৩ জন মারা যেত তা এখন গড়ে ৪ হয়েছে। খুব যে মৃত্যু বেড়েছে তাও নয়। রেফারও আগে যতটা হতো, এখন কমের দিকে আছে। আমরা জেলাতেও অনেক বেড চালু করেছি। এসএনসিইউয়ে মনিটর, ভেন্টিলেটর দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তা আশ্বাস দিয়েছে, করোনার সঙ্গে যখন লড়াই করে জেতা গিয়েছে, এ লড়াইয়েও জয় আসবে নিশ্চিত। তবে একের পর এক শিশু মৃত্যুর খবরে বুক ভাঙছে পরিবারগুলোর। তাদের একটাই আর্তি, জেলার হাসপাতালগুলোর জন্য আরও কড়া হোক স্বাস্থ্য দফতর। পরিকাঠামো বাড়ানো হোক, যাতে এভাবে রেফার না করে দিতে হয়।