AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পাঠক বলছি: মদন মিত্রকে কেউ সে দিন বহিরাগত বলেননি…

গৌতম চট্টোপাধ্যায় অনেক যুগ আগেই বলেছিলেন, পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে বোকা বাক্সতে বন্দি হয়ে যাচ্ছে।

পাঠক বলছি: মদন মিত্রকে কেউ সে দিন বহিরাগত বলেননি...
গ্রাফিক্স: অভিক দেবনাথ
| Edited By: | Updated on: Mar 23, 2021 | 4:17 PM
Share

বিষয়: “মোদিও ‘বহিরাগত’, মমতাও ‘বহিরাগত’, সংকীর্ণতা বাসা বাঁধছে কি উদারমনা বাঙালির মনে?”

কৌস্তভ মিত্র, বেলঘরিয়া, কলকাতা

পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানায় রাজনীতির অন্যতম মূল ভিত্তি ছিল আন্তর্জাতিকতাবাদ। কিন্তু ২০১১ পরবর্তী সময়ে বাংলার রাজনীতি একটু একটু করে বদলেছে। মানুষও গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু গোল বাধল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ পরবর্তী সময়ে এসে। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন “মা-মাটি-মানুষের” জন্য, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের অজস্র অভিযোগ থাকলেও তারা কখনও মমতাকে ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে দেগে দিতে পারেনি, এহেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাতারাতি “মা-মাটি-মানুষ” স্লোগানটি শিকেয় তুলে নতুন করে ময়দানে নামলেন “জয় হিন্দ-জয় বাংলা”-র মতো স্লোগান নিয়ে।

আসলে বর্তমান রাজনীতির মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সিপিএম, কংগ্রেস থেকে লোক ভাঙিয়ে নিজেদের আরও শক্তিশালী করে তুলেছিল। এ বার বিজেপি বুঝল তাদের শক্তিশালী হতে গেলে তৃণমূল ভাঙিয়ে নিজের ঘর ভরাতে হবে। অতএব সেই কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। আমি নিজে কামারহাটির বাসিন্দা হওয়ার দরুন ২০১১ সালে দেখেছিলাম সুদূর ভবানীপুর থেকে এসে মদন মিত্র কী ভাবে কামারহাটির মানুষের “ঘরের লোক” হয়ে উঠেছিলেন। তার আগে কখনো মদন মিত্রকে কামারহাটিবাসী এলাকায় দেখতে পায়নি। অথচ তখন কিন্তু কেউ কামারহাটিতে ভূমিপুত্রের দাবি তোলেননি, কারণ তখনও রাজনীতির ফোকাসটা একটু আলাদা ছিল।

এ বারের ভোটে জনপ্রিয় স্লোগান হচ্ছে “খেলা হবে”। কিন্তু এই অদ্ভুত খেলা যা শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে তা আর কিছু না করুক, উদারমনা বঙ্গ-রাজনীতিকে বাস কন্ট্রাক্টরের ভাষায় বললে “পিছন দিকে এগিয়ে” নিয়ে যাচ্ছে। বিজেপি বরাবরই একটি স্বঘোষিত হিন্দুত্ববাদী দল। তারা মনে করে এই দেশ শুধু হিন্দুদের। কিন্তু গত দু’ বছরে এর পালটা তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে বোঝাতে শুরু করেছে এই রাজ্য শুধু বাঙালিদের। সমীকরণটা অনেকটা এরকম, হিন্দুত্ববাদ বনাম বাঙালি জাতীয়তাবাদ, হিন্দু-মুসলিমের লড়াই বনাম বাঙালি-অবাঙালির লড়াই। বিজেপি যখন একদিকে দাবি করছে এ দেশে মুসলমানরা ‘বহিরাগত’, মুসলমানদের উচিত বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে চলে যাওয়া। ঠিক তখন উলটোদিকে তৃণমূল দাবি করছে, এ রাজ্যে অবাঙালিরা ‘বহিরাগত’, অবাঙালিদের উচিত উত্তর প্রদেশ বা গুজরাটে চলে যাওয়া।

তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কলকাতা ছেড়ে মেদিনীপুরে লড়বেন বলে ঠিক করলেন, তখন বিজেপি বলতে শুরু করল কলকাতা নিবাসী মমতা মেদিনীপুরে ‘বহিরাগত’। গৌতম চট্টোপাধ্যায় অনেক যুগ আগেই বলেছিলেন, পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে বোকা বাক্সতে বন্দি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে দিন বোকা বাক্স পৃথিবীটাকে ছোট করলেও আমাদের ফোকাসটা আরও বড় করে দিয়েছিল। আর আজ, রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতি আমাদের ফোকাসটাকে ক্ষুদ্রতর থেকে ক্ষুদ্রতম করে দিচ্ছে। দুর্ভাগ্য এটাই ফোকাসটা হওয়ার কথা ছিল, গ্যাস-পেট্রোল-ডিজেলের দাম বনাম বিদ্যুতের দাম। লড়াইটা হওয়ার কথা ছিল, কর্মসংস্থান বনাম বেকারত্বের। কিন্তু…

(পাঠকের মতামত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত)

কেন পাঠক বলছি?

জনতাই সব জানে। আপনিই আসলে বোঝেন কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক। কার কী স্বার্থ? তাই ব্রান্ডেড বিশ্লেষক নয়, আপনার মতামতই তুলে ধরতে চায় TV9 বাংলা। এবার ভোটে আপনিই বিশ্লেষক।

লেখা পাঠানোর নিয়ম:

** ন্যূনতম ২৫০ শব্দের লেখা হতে হবে। সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দের বেশিও না হয়। ** Unicode- ফরম্যাটে পাঠাতে হবে লেখা। স্টোরি সংক্রান্ত একটি বা একাধিক ছবি পাঠাতে হবে। ** একটি শিরোনাম দিতে হবে ** আপনার ছবি, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর অব্যশই পাঠাবেন।

লেখার বিষয় প্রতি সপ্তাহে জানিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- পাঠক বলছি: সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট করলেও ধর্মনিরপেক্ষতা খোয়া যাবে না বামেদের, কেন জানেন?