ডেস্টিনেশন বেনারস: কোন কোন ঘাট মিস করবেন না?
বেনারসে প্রচুর ঘাট। কিন্তু যে তিনটে মিস করলে চলবে না, তারই হদিশ দেওয়ার চেষ্টা করলাম আমরা।
ডেস্টিনেশন বারাণসী অর্থাৎ বেনারস। না! শুধুমাত্র ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বেনারস যান ভ্রমণার্থীরা (travel), এমন নয়। বরং ছোট ছুটিতেও বেনারস বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন অনেকে। বেনারস বলতেই অলিগলি, রাবড়ি, বেনারসী শাড়ি, পান, ফেলুদা… লম্বা লিস্ট মনে পড়ে। তবে ঘাটের কথা ভুললে চলবে না। বেনারসে প্রচুর ঘাট। কিন্তু যে তিনটে মিস করলে চলবে না, তারই হদিশ দেওয়ার চেষ্টা করলাম আমরা।
১) দশাশ্বমেধ ঘাট
বারাণসীর গঙ্গার ঘাট বললে প্রথম কয়েকটা নামের মধ্যেই চলে আসে দশাশ্বমেধ ঘাট। ১৭৪৮-এ পেশোয়া বালাজি বাজিরাও নাকি এই ঘাট নির্মাণ করেন। ২৪ ঘণ্টা এই ঘাট জমজমাট থাকে। অগ্নিপুজো এবং গঙ্গা আরতি দেখতে ভিড় হয় দর্শকের। দশাশ্বমেধ ঘাট বারাণসীর প্রধান ঘাট। এটিই সম্ভবত বারাণসীর প্রাচীনতম ঘাট। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের কাছে অবস্থিত। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, ব্রহ্মা শিবকে স্বাগত জানাবার জন্য এই ঘাট তৈরি করেছিলেন এবং এখানে দশটি অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। এই ঘাটের কাছেই শূলটঙ্কেশ্বর, ব্রহ্মেশ্বর, বরাহেশ্বর, অভয়বিনায়ক, গঙ্গা ও বন্দিদেবীর মন্দির রয়েছে। এখানে প্রচুর তীর্থযাত্রী ভিড় জমান। দশাশ্বমেধ ঘাটে কোনও কোনও তীর্থযাত্রী সন্ধেয় শিব, গঙ্গা, সূর্য, অগ্নি ও সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডের উদ্দেশ্যে অগ্নিপূজার আয়োজন করেন। প্রতি মঙ্গলবার ও বিশেষ ধর্মীয় উৎসবে এই ঘাটে বিশেষ আরতির ব্যবস্থা করা হয়।
২) মণিকর্ণিকা ঘাট
মনিকর্ণিকা ঘাট একটি মহাশ্মশান। এটিই শহরের প্রধান হিন্দু শ্মশান। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, এই ঘাটে শিব বা তার পত্নী সতীর কানের দুল (মনিকর্ণিকা) পতিত হয়েছিল। পুরাণে এই ঘাটটির সঙ্গে তারকেশ্বর মন্দিরের যোগের কথাও বলা হয়েছে। তারকেশ্বর মন্দিরটি এই ঘাটেই অবস্থিত। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, এই ঘাটে যাঁকে দাহ করা হয়, তাঁর কানে শিব নিজে তারকব্রহ্ম মন্ত্র প্রদান করেন। সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখার জন্য আসেন দর্শক। আর গঙ্গা আরতি তো রয়েইছে।
আরও পড়ুন, মরুভূমিতে বেড়াতে যাবেন? উইশ লিস্টে রাখুন এই সব জায়গা
৩) অসি ঘাট
আসি ঘাট বারাণসীর সর্বদক্ষিণে অবস্থিত। বারাণসীর বেশিরভাগ দর্শনার্থীর কাছে ঘাটটি বিদেশী শিক্ষার্থী, গবেষক এবং পর্যটকদের বাস করার জায়গা হিসেবে পরিচিত। অসিঘাটে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকরা এই ঘাট থেকে গঙ্গায় ভ্রমণের জন্য নৌকায় চড়তে পারেন। এছাড়াও এই ঘাটে প্রতিদিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান হয়। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী মহাকবি তুলসীদাস অসি ঘাট থেকেই স্বর্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।