ক্রিসমাস ইভের ডিনার বা বড়দিনের লাঞ্চ, পার্টি হোক বাড়িতে, ইন্ডোর গেমস-গানবাজনা আর পেটপুজোয় জমুক উৎসব
ক্রিসমাস ইভের ডিনার হোক বা ক্রিসমাসের দিন লাঞ্চ, উৎসব হোক বাড়িতেই।
হাতে আর ২৪ ঘণ্টা। তারপরেই ক্রিসমাস ইভ। পরের দিন ‘বড়দিন’। যীশুর জন্মদিন উপলক্ষে সেজে উঠবে সারা বিশ্ব। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার যেন সবই আলাদা। রাস্তাঘাটে আলোর মালা রয়েছে বটে। কিন্তু তার গায়ে যেন লেগে রয়েছে বিষাদের শুরু। করোনার দাপট কমেছে ঠিকই। নিউ নরমাল জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছেন সকলে। কিন্তু গ্লানি কাটছে না কিছুতেই।
তবুও ক্যালেন্ডার যখন জানান দিচ্ছে সময়টা ডিসেম্বর মাসের শেষ কয়েকদিন, তখন উৎসব তো পালন করতেই হবে। থাকুক হাজার বিধিনিষেধ, সতর্কতার বেড়াজাল, তার মধ্যে থেকেই উপভোগের রাস্তা খুঁজে নেবে বিশ্ববাসী। আর বাঙালি তো চিরকালের হুজুগে। অতএব ক্রিসমাস ইভ হোক বা বড়দিন, আনন্দ-মজা-উপভোগে কোনও খামতি রাখলে চলবে না।
এই ক্রিসমাসে বাইরে নয়, আড্ডা জমুক বাড়িতেই-
ক্রিসমাস ইভের ডিনার হোক বা ক্রিসমাসের দিন লাঞ্চ, উৎসব হোক বাড়িতেই। গত কয়েক মাসে এমনিতেও চার দেওয়ালের মধ্যে থেকেই জীবনকে একটু অন্যরকম ভাবে যাপন করতে শিখে গিয়েছে আমবাঙালি। ভাবনারা ডানা মেলেছে, ঘরোয়া পার্টিই হয়ে গিয়েছে জমজমাট।
ক্রিসমাস ইভের ডিনার-
পরিবারের সদস্যদের নিয়েই এবার ক্রিসমাস ইভের ডিনার জমিয়ে ফেলুন। খুব ঘনিষ্ঠ কাউকে অবশ্য ডেকে নিতেই পারেন।
কী কী আয়োজন রাখবেন-
১। প্রথমেই ঘরের লুকটা একটি বদলে ফেলুন। হাল্কা আসবাবপত্রগুলো একটু এদিক-ওদিক করলেই ড্রয়িং রুম কিংবা ডাইনিংয়ের লুক অ্যান্ড ফিল বদলে যাবে।
২। সোফার কভার এবং কুশনের কভার বদলে দিন।
৩। আজকাল নানা রকমের রংবাহারি আলো কিনতে পাওয়া যায়। সেইসব আলো দিয়ে সাজিয়ে নিন ড্রয়িং রুম। এছাড়া সুগন্ধী মোম (জেল ক্যান্ডেল) ব্যবহার করতে পারেন।
৪। পছন্দের কাচের বাসনের সেট নামিয়ে ফেলুন ক্রিসমাস ইভের ডিনারের জন্য। একটা ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজকে সাজিয়ে রাখুন ডড়য়িং রুমে। বাড়ির ছোটদের জন্য রাখুন নানা রংয়ের র্যাপিং পেপার দিয়ে মোড়া উপহার, চকোলেট আর সান্তা টুপি।
৫। বাড়ির সদস্যদের একটু মন ভাল করার জন্য বিভিন্ন ইন্ডোর গেমের আয়োজন রাখতে পারেন। যেমন- লুডো, ক্যারাম, দাবা, তাস কিংবা অন্তাক্ষরী বা ডামসরাজ, সন্ধে জমানোর জন্য এইসবই যথেষ্ট। বেশ নস্ট্যালজিয়ার পথেও হেঁটে আসা যাবে।
৬। যদি বন্ধুদের ঘরোয়া পার্টি হয়, তাহলে অতি অবশ্যই ভাল একটা মিউজিক সিস্টেম বা ব্লুটুথ স্পিকার রাখুন। সেই সঙ্গে থাকুক পছন্দের গান। আর দলের কেউ গিটার বাজাতে পারলে কিংবা গাইতে পারলে তো সোনায় সোহাগা। চার দেওয়ালের ভিতরেই জমে যাবে সন্ধ্যা।
ক্রিসমাসের লাঞ্চ-
শীত বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে। রোদের তেজও ভালই। তাই ক্রিসমাসের লাঞ্চের আয়োজন হোক বাড়ির ছাদ কিংবা উঠোনে। যৌথ পরিবার হলে বেশ একটা ছোটখাটো পিকনিকও হয়ে যাবে। মজার বিভিন্ন খেলা, গানের লড়াই এইসব তো চলতেই পারে। সব মিলিয়ে ভালই কাটবে বড়দিন।
মেনু-
শীতকাল মানেই জমিয়ে ভুরিভোজের সময়। কেক-পেস্ট্রি থেকে পিঠে-পুলি-পায়েস আশেপাশে কত রকমের খাবার। তবে উৎসব যখন ক্রিসমাস তখন বাকি সব বাদ গেলেও কেক কিন্তু খেতেই হবে। সবই যখন ঘরে হচ্ছে তখন কেকেটাও বাড়িতে বানালেই ভাল হয়। সুযোগ থাকলে বানিয়ে ফেলুন চকোলেট, ভ্যানিলা কিংবা ফ্রুট অ্যান্ড নাট কেক। যাঁদের বেকিং-এর শখ রয়েছে তাঁরা কুকিজও বানাতে পারেন। শীতের দিনে কফির সঙ্গে খেতে দারুণ লাগবে।
ক্রিসমাস ইভের ডিনার রাখতে পারেন সাহেবি কায়দায়। কিংবা পছন্দের ডিশগুলোই খেতে পারেন। তা সে চাইনিজ হোক বা মোগলাই। সুরা প্রেমীরা তালিকায় রেড ওয়াইন রাখতে পারেন। তবে যাই খান না কেন একটা দারুণ ডেজার্ট কিন্তু মাস্ট। আইসক্রিম উইথ কেক কিংবা হট গুলাবজামুন কিংবা পছন্দের মিষ্টি, যা হোক, শেষপাতে মিষ্টিমুখ দরকার।
ক্রিসমাসের দিন ঘরোয়া পিকনিকের পরিকল্পনা থাকলে মেনুতে থাকুম একদম ভারতীয় খাবার। সকালে বাঙালির অতি প্রিয় লুচি বা কড়াইশুঁটির কচুরি, সঙ্গে যার যা পছন্দ। আলুর দম বা বেগুন ভাজা চেটেপুটে সাফ হবে সবই। সঙ্গে থাকুক নলেনগুড়ের সন্দেশ।
দুপুরে যাই খান না কেন মাংস-ভাত না খেলে উৎসব জমবে না। আজকাল অবশ্য পোলাও-মাটন কিংবা বিরিয়ানির পাল্লা বেশ ভারী। তাই রসনা তৃপ্তির জন্য যার যা ভাল লাগে তাই খান।
তবে উৎসব পালনের সময় কোভিড গাইডলাইন অবশ্যই মেনে চলবেন। মাস্ক-স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখবেন সবসময়। আর যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।