Baidyapur: প্রাচীন মন্দির ও বাংলার ইতিহাসে ঘেরা বৈদ্যপুর, কলকাতা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন এই গ্রামে

One Day Trip: একদিনের ট্রিপে অনায়াসে ঘুরে আসতেন পারেন বৈদ্যপুর থেকে। বর্ধমান ও হুগলী সীমান্তে অবস্থিত বৈদ্যপুরে রয়েছে একাধিক প্রাচীন মন্দির। শোনা যায়, বাংলার মধ্যযুগে বেশ নামডাক ছিল এই গ্রামের। তবে, আজ যদি বৈদ্যপুরে যান, দেখতে পাবেন অসংখ্য প্রাচীন মন্দির ও স্থাপত্য।

Baidyapur: প্রাচীন মন্দির ও বাংলার ইতিহাসে ঘেরা বৈদ্যপুর, কলকাতা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন এই গ্রামে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 09, 2023 | 3:19 PM

বাংলার মধ্যেই এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যা খুব একটা ঘুরে দেখা হয় না। হয়তো, সেসব জায়গার খোঁজ অনেকেরই কাছে থাকে না। তবে, অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা বাংলার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের খোঁজে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন প্রান্তে। আপনিও যদি তাঁদের দলে হন, একদিন হাতে সময় নিয়ে ঘুরে আসুন বৈদ্যপুর থেকে। বর্ধমান ও হুগলী সীমান্তে অবস্থিত বৈদ্যপুরে রয়েছে একাধিক প্রাচীন মন্দির। শোনা যায়, বাংলার মধ্যযুগে বেশ নামডাক ছিল এই গ্রামের। অসংখ্যা বৈদ্য পরিবারের বাস ছিল। অর্থাৎ, যাঁরা সেসময় চিকিৎসা করতেন। মনসামঙ্গল কাব্যেও লখিন্দরকে নিয়ে বেহুলা এসেছিলেন এই গ্রামে। তবে, আজ যদি এই গ্রামে যান, দেখতে পাবেন টেরাকোটার কাজের প্রাচীন মন্দির সহ জমিদার বাড়ির তৈরি অসংখ্য স্থাপত্য।

বৈদ্যপুরের প্রধান আকর্ষণ জোড়া দেউল। এটি হল নৃসিংহদেবের মন্দির। ডেভিড ম্যাক্‌কাচ্চনের মতে জোড়া দেউল ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু এএসআই-এর ফলকে জোড়া দেউলের প্রতিষ্ঠাকাল আনুমানিক ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দ উল্লেখ রয়েছে। যদিও এই প্রাচীন মন্দিরের স্থাপত্য দেখার মতো। ইট দিয়ে তৈরি আর মন্দিরের উপরে টেরাকোটার কাজ। স্থাপত্যের কারণে ১৯১৩ সালে এই দেউলকে মাহাত্ম্যপূর্ণ স্মারক ঘোষণা করা হয়েছিল।

জোড়া দেউল ছাড়াও এখানে অসংখ্য প্রাচীন মন্দির রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল, টেরাকোটার শিবমন্দির। এই শিবমন্দিরে গেলে আজও আপনি সেসব টেরাকোটার কাজ দেখতে পাবেন। ১৮০২ সালে তৈরি নবরত্ন ও আটচালা রীতির দুটোই শিবমন্দির রয়েছে। নবরত্ন মন্দিরটির প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা। আটচালা শিবমন্দিরের প্রবেশদ্বারের উপর ও দু’পাশের কুলুঙ্গির টেরাকোটা কাজগুলো আজও অক্ষত রয়েছে। এই মন্দিরের নির্মাতা হল গ্রামের জমিদার নন্দী পরিবার। ১৬৫৮ সাল নাগাদ এই নন্দী পরিবার বৈদ্যপুরে আসে। এই নন্দী পরিবারের তৈরি আরও অনেক স্থাপত্য রয়েছে বৈদ্যপুরে। মন্দির ছাড়াও নন্দী পরিবারের তৈরি রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ, কাছারিবাড়ি, বৈঠকখানা, দোলমঞ্চ, নহবতখানা ইত্যাদি আজও বর্তমান রয়েছে এই গ্রামে।

বৈদ্যপুরে গেলে দেখতে পাবেন নন্দীদের জমিদার বাড়িও। ব্যবসার জন্য দেহুড়া থেকে এই পরিবার বৈদ্যপুর গ্রামে এসেছিল। লবণ, মশলা, বাদাম ইত্যাদির ব্যবসা ছিল এঁদের। ১৮০০-১৮৩৫ সাল নাগাদ বৈদ্যপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে বসতিস্থান করে। আজও জমিদার বাড়ির দুর্গাদালানে প্রাচীন পুজো হয়। এ বছরও সেখানে দুর্গাপুজো হবে। তবে, নন্দী পরিবারের তৈরি অষ্টকোণাকৃতি রাসমঞ্চের নির্মাণ শৈলী দেখার মতো। অনেকটা উল্টা‌নো পদ্মের ন্যায় তৈরি। এটা ১৮৩৬ সালে তৈরি হয়। এখানে প্রতিবছর রাধাকৃষ্ণকে দোলনায় রাখা হয়। এছাড়া এখানে রয়েছে বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দির, নাটমন্দির, কুলদেবতা রাজরাজেশ্বর মন্দির, পঞ্চরত্ন শিবমন্দির ইত্যাদি।

একদিনের ট্রিপে অনায়াসে ঘুরে আসতেন পারেন বৈদ্যপুর থেকে। কলকাতা থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটারের পথ বৈদ্যপুর। রোড ট্রিপেও যেতে পারেন। এছাড়া হাওড়া থেকে বর্ধমান মেইনলাইনের ট্রেনে চেপে বৈঁচি স্টেশনে নামতে হবে। এই স্টেশনে নেমে টোটো চেপে আধ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন বৈদ্যপুর।