Dholahat Blast : ‘মাসের শেষে বাবুদের টাকা দিতে হত… খাওয়া-খায়ি আমি দেখেছি’, বড় অভিযোগ বাজি কারখানার মালিকের শ্বশুরের
Blast: ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাইছেন না অনেকেই। তবে এক ব্যক্তি স্পষ্ট বলেন, "কারখানা থেকে ১০ মিনিট দূরত্বে থানা, ১০ মিনিট দূরত্বে বিধায়কের বাড়ি। তাঁরা জানবেন না তা কী করে সম্ভব।"

শুভেন্দু দেবনাথ ও সুশোভন ভট্টাচার্যের রিপোর্ট
ঢোলাহাট: রাতেই মৃত্যু হয় সাতজনের। মঙ্গলবার সকালে আরও একজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। ঢোলাহাটের বিস্ফোরণ-কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে আট। এদিন সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক মহিলার। এই ঘটনার পর বিরোধীদের একটাই প্রশ্ন, লোকালয়ের মাঝে কীভাবে মজুত করা ছিল বাজি! পুলিশের নাকের ডগায় কীভাবে চলত এসব? শাসক দল কি কিছুই জানত না? বিস্ফোরণ-স্থলে দাঁড়িয়ে বণিক পরিবারের প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা যে অভিযোগ করলেন, তা ভয়ঙ্কর।
পড়ে আছে বারুদ ভর্তি বালতি, লুকিয়ে রাখছিল কারা?
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৮-১০ বছর ধরে চলছিল ওই বাজি কারখানা। এদিকে, পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, বাম আমল থেকে রয়েছে এই কারখানা। লাইসেন্স ছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। প্রশ্ন হল, লাইসেন্স থাকলেও বাড়ির মধ্যে বাজি মজুত করা ছিল কেন!
সোমবার রাতেই বিস্ফোরণে যে বাড়ির ৮ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে, যে বাড়ি কার্যত ভেঙে পড়েছে, তার থেকে বেশ কিছুটা দূরে রয়েছে কারখানা। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাজি তৈরির সামগ্রী থেকে শব্দবাজি সবই মজুত রয়েছে সেখানে। শুধু তাই নয়, বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মাঠের মাঝে রাখা কয়েকটি বালতি, সেগুলি বারুদে ভরা। পড়ে রয়েছে বারুদ ভরা একাধিক বস্তাও। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন, এইভাবে কি বারুদ লুকিয়ে রাখা হচ্ছিল? কারা করছিল এই কাজ?
‘শাসক দলের মদত ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না’
ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাইছেন না অনেকেই। তবে এক ব্যক্তি স্পষ্ট বলেন, “কারখানা থেকে ১০ মিনিট দূরত্বে থানা, ১০ মিনিট দূরত্বে বিধায়কের বাড়ি। তাঁরা জানবেন না তা কী করে সম্ভব।” আর এক বাসিন্দা বলেন, “শাসক দলের মদত ছাড়া এখানে একটা গাছের পাতাও নড়ে না।”
বিধায়ক সমীর জানা দাবি করেছেন, ওই কারখানার লাইসেন্স ছিল। এদিকে, বাসিন্দারা বলছেন, “লাইসেন্স যদি দেওয়া হয়েই থাকে, তাহলে তাদের নামেই এফআইআর করা উচিৎ।” অন্যদিকে, খোদ বিধায়কের নাম করেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন বাজি কারখানার মালিক চন্দ্রনাথ বণিকের শ্বশুর।
‘বাবুদের খাওয়া-খায়ি দেখেছি আমি’
মালিকের শ্বশুর কুশময় ভাণ্ডারি বলেন, “প্রথম যখন জানতে পারি, বলেছিলাম বাবা তোরা আগুন নিয়ে খেলা করিসনা। ও বলেছিল লাইসেন্স আছে। তারপর একদিন এসে দেখলাম অফিসাররা এল। খাওয়া দাওয়া করল।” কোন অফিসার, কাদের কথা বলছেন তিনি? ওই ব্যক্তি স্পষ্ট বলেন, “ঢোলা থানার পুলিশ অফিসার ছিলেন। বিধায়ক সমীর জানাবাবু ছিলেন। বাবুদের খাওয়া-খায়ি দেখেছি আমি।” টাকার নেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। ওই ব্যক্তি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট ছিল। দেখেছি অফিসাররা আসতেন। জামাইকে জিজ্ঞেস করলে বলত, মাসের শেষে বাবুদের দিতে হবে।” এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।





