Ranthambore National Park: এই শীতে রণথম্বোর বেড়াতে যাচ্ছেন? যেগুলি না জানলেই নয়

Wildlife in India: পর্যটকদের জন্য রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান খোলা থাকে অক্টোবর থেকে জুন মাস। তবে সেখানে যাওয়ার সেরা সময় হল অক্টোবর থেকে এপ্রিল। এই সময়ে আবহাওয়া থাকে আরামদায়ক, বাঘেদের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল।

Ranthambore National Park: এই শীতে রণথম্বোর বেড়াতে যাচ্ছেন? যেগুলি না জানলেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 28, 2023 | 3:55 PM

অরণ্যপ্রিয় পর্যটকদের কাছে রাজস্থানের রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান উদ্দীপনায় ভরপুর এক ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন। আর তার মূল কারণ হল, বন্যপ্রাণের বৈচিত্রের স্বর্গরাজ্য এই উদ্যান। আদিম মরুপ্রান্তরে গড়ে ওঠা বনভূমির বিস্তৃতি প্রায় ৩৯২ বর্গ কিলোমিটার। এখানে থাবা গেড়ে অপেক্ষা করে দুর্ধর্ষ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। পাশাপাশি রয়েছে অসাধারণ উদ্ভিদ ও অন্যান্য বন্য প্রাণীও।

ইতিহাসের পদধ্বনি

অষ্টম শতাব্দীতে চৌহান রাজবংশের অধীনে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে রণথম্বোর। রণথম্বোরের কেন্দ্রে রয়েছে রণথম্বোর দুর্গ। পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা এক প্রাচীন দুর্গ প্রাসাদ যা উদ্যানের সৌন্দর্যকে করে তুলেছে আরও রহস্যময়। একইসঙ্গে ওই প্রাসাদ এক দুর্দম রাজবংশের উত্থান ও ম্লান হওয়ার পরিচয় বহন করে। দুর্গটিকে ইতিমধ্যেই ইউনেস্কোর তরফে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

রণথম্বোরের বন্যপ্রাণ

রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার তো বটেই, তার সঙ্গে ধূর্ত লেপার্ড, স্লথ বিয়ার, হায়েনা এবং সম্বর, চিতল, নীলগাই-এর মতো নানা প্রজাতির হরিণের নিশ্চিন্ত আবাস এই উদ্যান। পক্ষী চিত্রগ্রাহকের কাছেও এই উদ্যান অত্যন্ত লোভনীয়। প্রায় ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে এই উদ্যানে যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখিও। পরিযায়ী পাখির টানেই বহু মানুষ প্রতিবছরই দেশ বিদেশ থেকে এই উদ্যানে পাড়ি জমান। আর এখানেই রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত বাঘ— মাচালি।

শ্রেষ্ঠ সময়

পর্যটকদের জন্য রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান খোলা থাকে অক্টোবর থেকে জুন মাস। তবে সেখানে যাওয়ার সেরা সময় হল অক্টোবর থেকে এপ্রিল। এই সময়ে আবহাওয়া থাকে আরামদায়ক, বাঘেদের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। গ্রীষ্মকালে এই উদ্যানে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভাল, কারণ সেই সময়ে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলে।

রণথম্বোর সাফারি জোন

রণথম্বোর ন্যাশনাল পার্ককে বেশ কয়েকটি সাফারি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকারই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও আকর্ষণ আছে। সেগুলি হল—

জোন ১: সহজভাবে বলতে হলে এই এলাকাটি বাফার জোন। এই এলাকাটির শাসনভার রয়েছে বাঘিনী নূরের হাতে। নূর দক্ষ থাবায় রাজ্য সামলানোর পাশপাশি তার শাবকদেরও প্রতিপালন করে।

জোন ২: যোগী মহল নামে ৩০০ বছরেরও পুরনো ফরেস্ট গেস্ট হাউজের জন্য বিখ্যাত এই এলাকা। এছাড়া এখানে রয়েছে ত্রিনেত্র গণেশ মন্দির। ফলে ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে এবং বন্যপ্রাণ— উভয়ের ছোঁয়া পেতে চাইলে বিকল্প নেই জোন ২-এর। এছাড়া এই জায়গায় রয়েছে টি১৯, টি২২, টি৭২, টি৫৭, টি২৮, টি৬০, টি৩৯ বাঘ।

জোন ৩: একাধিক জলাভূমি রয়েছে এই অংশে। এই কারণেই পাখি দর্শনপিয়াসীদের কাছে জায়গাটি আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

বিশেষ করে মালিক তালাও হ্রদের জল এবং অরণ্যের মিলিত নৈশব্দ্য জোন ৩-কে করে তুলেছে বিস্ময়কর সুন্দর। এছাড়াও এই জোনের অধীনে থাকা পদম তালাও, হাই পয়েন্ট, রাজবাগ এবং মান্দুকের কথাও আলাদাভাবে বলতে হয়।

জোন ৪: মাচালির বাস এই জোনে। জলের মধ্যে একটি কুমির মেরে সে বিখ্যাত হয়েছিল। পাথুরে এই এলাকার ভূদৃশ্য মনলোভা। অন্যান্য জোনের তুলনায় এই অংশে ভিড়ও কম থাকে। সিংহ দ্বার, মালিক তালাও, লক্কড় দা, আদিদান্ত, লাম্বি, তামাখান হল দ্রষ্টব্য জায়গা।

জোন ৫: জোন ৪-এর মধ্যে দিয়ে এই অংশে করতে হয় প্রবেশ। ফলে জোন ৪-এর কিছু দর্শনীয় জায়গাও ঘোরা হয়ে যায়।

জোন ৬-১০: সম্প্রতি এই অংশগুলি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই এলাকায় থাকে রণথম্বোরের হিংস্র বাঘ ফতেহ। স্বল্প পরিচিত এই এলাকাগুলি আবিষ্কার করার উত্তেজনাই অন্যরকম!

ঘোরাঘুরির আগে যে যে বিষয় মাথায় রাখবেন—

• অরণ্যে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক গাড়ি প্রবেশ করে। তাই জঙ্গলে ঢোকার জন্য আগে থেকে সাফারি কার বুক করে রাখবেন। বিশেষ করে মরশুমের সময় সাফারির জন্য গাড়ি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।

• সাফারিতে যাওয়ার জন্য যা যা নিয়ম রয়েছে তার সবগুলিই মেনে চলবেন। না হলে বিপদে পড়তে হতে পারে।

• এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন এমন একজন গাইড বুক করে রাখাও দরকার। তবে তার জন্য আলাদা করে অর্থ দিতে হতে পারে।

• মনে রাখবেন আপনি বন্যপ্রাণীর এলাকায় প্রবেশ করছেন। তারা গোলমাল পছন্দ করে না। তাই চিৎকার চেঁচামেচি একেবারেই করবেন না।

• হালকা রঙের সুতির পোশাক পরুন।

• শুধু বাঘ দেখবেন বলেই যাচ্ছেন এমন পণ করে বসবেন না। অরণ্যের নিজস্ব একটা সৌন্দর্য থাকে। তা উপভোগ করার চেষ্টা করুন।