Fireflies Festival: রহস্যময় ইন্দ্রজালে লক্ষাধিক জোনাকির রোশনাই! কোথায় পাবেন এমন প্রকৃতির শোভা?

Maharashtra: কংক্রিটের দুনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে জোনাকি। তাদের শান্তির জায়গায় হাত পড়েছে স্বার্থপর মানুষের। ফলে বিরক্ত হয়ে, নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পারি দিয়েছে দূর দেশে। সেই দেশে যাওয়ার পথ জানা নেই আমাদের।

Fireflies Festival: রহস্যময় ইন্দ্রজালে লক্ষাধিক জোনাকির রোশনাই! কোথায় পাবেন এমন প্রকৃতির শোভা?
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 01, 2022 | 5:20 PM

পরীদের দেশ কোথায়, ছোটবেলা থেকে সন্ধান করলেও তার উত্তর এখনও অমিল। তবে প্রকৃতির আপন পরীর আলো এখনও এই পৃথিবীতে বিদ্যমান। জোনাকি (Fireflies)। সাঁঝের আবির্ভাবের সাথে গ্রামের ঝোপঝাড়ে স্নিগ্ধ আলো নিয়ে জেগে উঠে জোনাকিরা! অন্ধকারে মিটিমিটি জ্বলতে থাকা এই আলোর গুচ্ছ হাজার বছর ধরে মানব মনে প্রশ্ন তুলেছে। জোনাকি এক রহস্যময়ী প্রাণী। সাগরের তলদেশে অনেক প্রাণী আছে, যারা আলো জ্বালতে পারে। কিন্তু স্থলভাগে শুধু জোনাকিরই আছে সেই ক্ষমতা। উজ্জ্বল এই কীটের রহস্য উদ্ঘাটন করতে এবার রওনা দিতে পারেন আরব সাগরের তীরে। লক্ষ লক্ষ জোনাকির মিটিমিটি আলোর সেই অপূর্ব স্বর্গীয় দৃশ্য যদি জীবনে একবার দেখতে চান তাহলে সেরা জায়গা এখন মহারাষ্ট্র (Maharashtra)।

বর্তমানে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গা শুরু হয়েছে ফায়ারফ্লাইস ফেস্টিভ্যাল। চলবে চুনের শেষ পর্যন্ত। রাজমাছি গ্রাম, সিদ্ধগড় ওয়াদি, প্রবালমাছি গ্রাম, ভান্ডারদারা, ঘাটঘর, কোথালিগড়, কোন্ডানে গুহা এবং পুরুষবাদী সহ স্থানগুলি মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের জন্য ক্যাম্পের আয়োজন করছে। যারা প্রকৃতির এই রোমাঞ্চকর অনুভূতিকে মনের কোটরে তুলে রাখতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ১ দিন/১ রাত থাকার দারুণ প্যাকেজ। রাতে ট্রেকিংস হাইকিং, ক্যাম্পিং ও জোনাকির আলোর মাঝে হেঁটে চলার মুহূর্তগুলি উপভোগ করতে পারবেন।

কোথায় কখন উত্‍সব হবে

পুরুষবাদী গ্রামে ট্রেক এবং ট্রেইলের পুরুষবাদী ফায়ারফ্লাইস ফেস্টিভ্যাল – হবে আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত।

লোনাভালার কাছে ট্রেক এবং ট্রেইলের ফায়ারফ্লাইস ট্রেক অ্যান্ড ক্যাম্প চলবে ২৫ জুন পর্যন্ত।

লোনাভালার কাছে রাজমাচি বাইক রাইড এবং ফায়ারফ্লাইস ফেস্টিভ্যাল হবে আগামী ৪ -৫ জুন। একই সময়ে ফায়ারফ্লাইস ফটোগ্রাফি বুট ক্যাম্পের আয়োজন হয়েছে ভান্ডারদারাতেও। অন্যদিকে, ভান্ডারদারা ফায়ারফ্লাইসের ক্যাম্পিং চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত।

মালশেজ ঘাটে ট্রেক এবং ট্রেইলে মালশেজ ঘাট ফায়ারফ্লাই ক্যাম্পিং হবে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত।

শহরে আলো ও দূষণ যেখানে কম সেখানে জোনাকির দেখা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রকৃতির মাঝেই শান্তি ও নিজেকে খুঁজে পেতে এমন অভিনব ও অভূতপূর্ব উত্‍সবে সামিল হতে হয়। মহারাষ্ট্রের এই সব জায়গাতে শহুরে আলো ও শব্দের ব্যাঘাত নেই। দূষণও অনেক কম। শহর থেকে একটু দূরে হলেও এমন অভিজ্ঞতা বারে বারে আসে না। এই বায়োলুমিনেসেন্ট বিটলের জন্য পশ্চিমঘাট অঞ্চল হল ব্য়তিক্রমী আবাসস্থল। জোনাকির আলো একটানা জ্বলে না। একবার জ্বলে এবং নেভে। সাধারণত সমুদ্রের সিগন্যাল লাইটগুলোও এভাবে জ্বলে আরে নেভে। তাই বলাই যায় জোনাকি এভাবে আলো জ্বালিয়ে নিভিয়ে অন্যদের কাছে সিগন্যাল পাঠায়। মানে ভাব বিনিময় করে। প্রজননের জন্যই জোনাকি মূলত আলো জ্বালে।

বর্ষার ঠিক আগে লক্ষাধিক সংখ্যায় পুরুষ জোনাকিগুলো উড়তে উড়তে আলো জ্বালে। অর্থাৎ সিগন্যাল পাঠায়। সিগন্যাল পাঠায় স্ত্রী জোনাকির উদ্দেশ্যে। স্ত্রী জোনাকিরা তখন ঝোপের আগায় কিংবা ঘাসের ওপর বসে থাকে। পুরুষ জোনাকির সিগন্যাল বা সঙ্কেত এসে ধরা পড়ে তাদের মস্তিষ্কে। স্ত্রী জোনাকিরা তখন সেই সঙ্কেতে সাড়া দেয়। নিজেরাও সঙ্কেত পাঠায়। সঙ্কেত লক্ষ করে ছুটে যায় পুরুষ জোনাকির কাছে। তারপর তাদের বন্ধুত্ব হয়। তারপর মিলন। প্রায় দুই মাস ধরে এরা সঙ্গম করে ডিম পাড়ে।

প্রসঙ্গত, কংক্রিটের দুনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে জোনাকি। তাদের শান্তির জায়গায় হাত পড়েছে স্বার্থপর মানুষের। ফলে বিরক্ত হয়ে, নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পারি দিয়েছে দূর দেশে। সেই দেশে যাওয়ার পথ জানা নেই আমাদের। মহারাষ্ট্রের এই সব জায়গায় গেলে তাদের আপন জায়গাগুলিকে কখনও নষ্ট করবেন না। বিরক্ত না করে রাতের অন্ধকারে ঝিকিমিকি আলোর রোশনাই উপভোগ করুন।