Whistling Village of India: শিসের সুর দিয়ে যায় মানুষ চেনা! দেশের কোন গ্রামে রয়েছে এমন প্রথা? যেতে পারেন এই মার্চেই

Meghalaya Tourism: এই গ্রামের মানুষ শিস দিয়ে ডাকেন একে অপরকে। শব্দ উচ্চারণের বদলে সুর করে নাম ডাকে। ভাবতে অবাক লাগছে? ভারতেই রয়েছে হুইসলিং ভিলেজের অস্তিত্ব।

Whistling Village of India: শিসের সুর দিয়ে যায় মানুষ চেনা! দেশের কোন গ্রামে রয়েছে এমন প্রথা? যেতে পারেন এই মার্চেই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 12, 2023 | 11:37 AM

জল-জঙ্গল-পাহাড়-ঝরনায় ঘেরা মেঘালয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। যদিও অমিত-লাবণ্যের সূত্রে ধরে শিলংয়ের সঙ্গে বাঙালির পরিচয় বহুদিনের। তবে, ‘শেষের কবিতা’য় মেঘালয়ের সেই গ্রামের কথা উল্লেখ নেই, যেখানে নামে নয়, মানুষ চেনে সুরে। যদিও নামে কি বা এসে যায়! তাই তো কংথং গ্রামের মানুষ শিস দিয়ে ডাকেন একে অপরকে। শব্দ উচ্চারণের বদলে সুর করে নাম ডাকে। ভাবতে অবাক লাগছে? এই গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে মেঘালয়ে। পর্যটকেরা বলেন হুইসলিং ভিলেজ। অর্থাৎ ‘শিসের গ্রাম’।

শিলং থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কংথং। এই গ্রামের বাসিন্দারা একে অপরকে নামে ডাকেন না। শিস দিয়ে সুর করে ডাকেন। স্থানীয়দের ভাষায় একে বলে জিঙ্গরই লবেই। নবজাতকের জন্মের পর মা যে ঘুমপারানিয়া গান গেয়ে ওঠেন, সেটাই হয়ে যায় শিশুর নাম। সেই সুরই হয়ে ওঠে নবজাতকের পরিচয়। প্রতিটা মায়ের গলা সুর আলাদা হয়। তাই সেই সুর চিনতে খুব বেশি সমস্যা হয় না।

যদিও কংথং গ্রামের প্রতিটা মানুষের দুটো করে নাম রয়েছে। একটা এই শিসের সুর। আর একটা খাতায়-কলমে ভাল নাম। সুতরাং, এক্ষেত্রে শিসের সুরকে ডাকনাম বললেও ভুল হবে না। আবার এই শিসের সুরও দু’প্রকার। একটা সংক্ষিপ্ত—খুব বেশি হলে ১০ সেকেন্ড। আর একটা দীর্ঘ—৩০ সেকেন্ডের সুর। সাধারণত বনে-জঙ্গলে এবং পাহাড়ের এই শিসের সুর ব্যবহার করা হয় একে অপরে ডাকতে।

কংথং গ্রামে কান পাতলা শোনা যায় পাখির ডাক। যদিও সেটা হল জিঙ্গরই লবেই। জন্মের পর থেকেই নবজাতকের কানের কাছে সেই সুর শিস দিয়ে বার বার শনানো হয়। সেখান থেকে জন্ম নেয় শিশু নাম। সুরের নাম। তারপর ধীরে ধীরে এই জিঙ্গরই লবেই পরিচিত হয়ে ওঠে সবার কাছে। এমনকী শিশুও নিজের জিঙ্গরই লবেই সবার আগে আওড়াতে শেখে। এই গ্রামের প্রতিটা শিশু স্কুল যায়। বড় হয়ে কাজের সন্ধানে বাইরেও যায়। কিন্তু গ্রামের মধ্যে তাকে ডাকা হয় জিঙ্গরই লবেইতেই। এই জিঙ্গরই লবেই যে তাঁদের প্রাচীন ঐতিহ্য!

বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে বেশ জনপ্রিয় এই হুইসলিং ভিলেজ। ইউনাইটেড নেশনস্ ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনের সেরা পর্যটন গ্রামের জন্য মনোনয়নও পেয়েছে এই গ্রাম। খাসি পাহাড়ের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত এই গ্রামে মেরেকেটে সাতশো মানুষের বাস। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও ভরপুর কংথং। মেঘালয়ের অন্যান্য গ্রামের মতোই হুইসলিং ভিলেজও মেঘে ঢাকা। সুতরাং, কংথং গেলে আপনি নিরাশ হবেন না। কিন্তু সঙ্গে একজন গাইড নেওয়া ভাল। তিনি বুঝিয়ে দিতে পারবেন শিসের সুর।

কংথং যাওয়ার সেরা সময় অক্টোবর থেকে এপ্রিল। শিলং থেকে গাড়ি ভাড়া করে সোজা পৌঁছে যেতে পারেন হুইসলিং ভিলেজ। ঘণ্টা তিনেক সময় লাগবে। এই হুইসলিং ভিলেজে রাত্রিযাপনের জন্য ট্রাভেলার্স নেস্ট এবং ব্যাম্বু হাট রয়েছে।