Chaitra Navratri 2022: নবরাত্রির এই ৯ দিনে কী কী ভোগ নিবেদন করা হয়, জানেন
Basanti Puja: চলছে নবরাত্রি। নবরাত্রির শেষ হয় বাসন্তী পুজো, অন্নপূর্ণা পুজো দিয়ে। এই ন'দিন কিন্তু বিভিন্ন রকম ভোগ নিবেদন করা হয়। আর এই ৯ রকম ভোগের মাহাত্ম্যও কিন্তু রয়েছে
পঞ্জিকা মতে চৈত্র মাসের নবরাত্রি তিথিতে চৈত্র নবরাত্রি পালিত হয়। ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে নবরাত্রি। এই নবরাত্রির হাত ধরেই আসে অন্নপূর্ণা পুজো, বাসন্তী পুজো। হিসেব মত আজ ষষ্ঠী। ১১ এপ্রিল সোমবার এই নবরাত্রির সমাপ্তি হবে।
ব্রহ্ম পুরাণ অনুযায়ী নবরাত্রির প্রথম দিন আদ্যাশক্তি প্রকট হন। তাঁর আদেশেই ব্রহ্মা চৈত্র শুক্লপক্ষের প্রতিপদা তিথিতে সৃষ্টির নির্মাণ শুরু করেন। মৎস্য পুরাণ অনুযায়ী চৈত্র নবরাত্রির তৃতীয় দিন বিষ্ণপ মৎস অবতার ধারণ করেন। এই নবরাত্রিতেই রামের রূপে নিজের সপ্তম অবতার নেন বিষ্ণু। এ কারণে এই নবরাত্রির মাহাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। এই ন’দিন দুর্গার নয়টি রূপে আরাধনা করা হয়। বলা হয় নবরাত্রিতে দুর্গার মন্ত্র জপ করলে বিশেষ মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। তবে এবার দেখে নিন পুজোর কোন দিন কী প্রসাদ নিবেদন করা হয়।
নবরাত্রির প্রথম দিন পুজো করা হয় মা শৈলপুত্রের। আর তাই এদিন বিভিন্ন ফলই সাজিয়ে দেওয়া হয় নৈবেদ্যতে। সৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। সেইজন্য এদিন ঘি আর দুধ দিয়ে কোনও প্রসাদ বানিয়ে তাও কিন্তু নিবেদন করা হয়। মনে করা হয় এতে রোগ জ্বালা দূর হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আর্শীবাদও পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় দিন মা ব্রহ্মচারিণীকে ভোগ দেওয়া হয়। এদিন চিনির তৈরি কোনও প্রসাদ নিবেদন করলে মনে করা হয় যাবতীয় রোগ, জ্বালা দূরে থাকে। সেই সঙ্গে সংসারের বিভিন্ন রোগ, কষ্টও দূর হয়ে যায়। এই চিনের ভোগ নিবেদন করলে সুখ-শান্তি পাওয়া যায়।
তৃতীয় দিন পুজো হয় চন্দ্রঘন্টার। এদিন দেবী দুর্গাকে দুধের তৈরি কোনও খাবার যেমন পায়েস, সুজি এসব দেওয়া হয়। এই প্রসাদ নিবেদনের মাধ্যে মানসিক শান্তি ফেরে। আর্থিক দিক থেকেও সুরাহা হয়।
চতুর্থীতে হয় মা কুষ্মাণ্ডার পুজো। এদিন মা দুর্গার চতুর্থ রূপের বন্দনা করা হয়। এছাড়াও প্রসাদ হিসেবে ভোগে মালপোয়া দেওয়া হয়। তবে পুজো শেষে বলা হয় তা গরীব মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে। এতে বিদ্যা-বুদ্ধি বাড়ে, মানসিক স্থিতি আসে। পড়ুয়াদের জন্য ভাল।
পঞ্চম দিনে হয় স্কন্দমাতার পুজো। দেবী ভগবতীর পঞ্চম রূপ স্কন্দমাতা। এছাড়াও তাঁকে স্কন্দমাতা বলার কারণ তিনি ব্রহ্ম স্বরূপ সনাতকুমারের মা। এদিনের নৈবেদ্যতে চাল-কলা সাজিয়ে দেওয়া হয়। এতে কর্মজীবনে উন্নতি হয় এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে অগ্রগতিও আসে।
ষষ্ঠীর দিনে মা দুর্গার বোধন হয়। এদিন মহর্ষি কন্যা কাত্যায়নীর আরাধনা হয়। ষষ্ঠীর দিন বোধন যেহেতু হয় তাই এদিন মধুপর্ক নিবেদন করা হয়। বলা হয় এই মধু নিবেদন করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। এতে সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি প্রাপ্তি ঘটে।
সপ্তমীর দিন কালরাত্রির পুজো করা হয়। এই মূর্তিকে অর্ধনারীশ্বর হিসেবে পুজো করা হয়। জ্যোতিষমতে এদিন গুড়ের নৈবেদ্য নিবেদন করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। এবং পরে এই নৈবেদ্য সবার মধ্যে বিলিয়ে দিন। এতে নানা সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাবেন।
অষ্টমীর দিন দেবীকে গুড়ের নৈবেদ্যর সঙ্গে নারকেলও নিবেদন করা হয়। এছাড়াও এদিন আরো নানা প্রসাদ, ফল, অন্নভোগ এসবও নিবেদন করা হয়। থাকে লুচি, পায়েস, মালপোয়া, মিষ্টান্ন। এদিন মহাগৌরীর পুজো হয়। অনেক বাড়িতেই এদিন অন্নপূর্ণা পুজো হয়।
নবমী নবরাত্রির শেষ দিন। এই মহানবমীর দিন হয় সিদ্ধিদাত্রীর পুজো। এছাড়াও অনেক জায়গাতেই এদিন কুমারী পুজো হয়। এদিন প্রসাদে গুড়ৃছোলা তো থাকেই। সেই সঙ্গে ভোগে ফল প্রসাদ, লুচি, খিচুড়ি, পোলাও, নাড়ু সবকিছুই কিন্তু থাকে। এদিন পুজো করলে ঘরের শান্তি বজায় থাকে। সেই আর্শীবাদ, সমৃদ্ধিও আসে। এদিন মায়ের পুজো করলেই কিন্তু সব সেবা সম্পূর্ণ হয়।