Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Vat Purnima Vrat 2021: স্বামীর মঙ্গল কামনায় পালিত হয় বট পূর্ণিমা ব্রত!

হিন্দু পুরাণ যেমন ভবিষ্যথরা পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ এবং মহাভারতে, সাবিত্রী ব্রত বা ভাত পূর্ণিমার মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। হিন্দু মতে, বটবৃক্ষ আদতে ত্রিমূর্তি-ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের প্রতীক। তাই সারাদিন উপবাস রেখে বটবৃক্ষকে পুজো করে স্বামীর জীবনরক্ষার জন্য ব্রত পালন করে থাকেন মহিলারা।

Vat Purnima Vrat 2021: স্বামীর মঙ্গল কামনায় পালিত হয় বট পূর্ণিমা ব্রত!
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 23, 2021 | 8:45 AM

হিন্দু মতে, স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায় ও পরিবারের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিবাহিত মহিলারা বট পূর্ণিমা ব্রত পালন করে থাকেন। হিন্দু শাস্ত্র মতে বহু ব্রত পালেনর উল্লেখ রয়েছে, তার মধ্যে এই ব্রত অন্যতম। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় এই ব্রত পালন করা হয়। দক্ষিণ ভারতে এই বিশেষ ও উল্লেখযোগ্য ব্রতকে আমন্ত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সাবিত্রী ব্রত বলে থাকে। আগামী বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার দিন সব বিবাহিত মহিলারা পরিবার ও স্বামীর কল্যান চেয়ে ব্রত ও উপবাস করে অনুষ্ঠান পালন করবেন।

তারিখ এবং সময়

২৪ জুন, বৃহস্পতিবার, রাত ২টো ২ মিনিটে ভাত পূর্ণিমার সময় শুরু হবে, স্থায়ী থাকবে সকাল ১০.৩৯ মিনিট পর্যন্ত। এই ব্রত পালনের ব্রহ্মা মুহুর্ত হল সকাল ৪টে ৪৮ মিনিট থেকে ৫.৩৬ মিনিট পর্যন্ত।

আরও পড়ুন: ঘরে শিবলিঙ্গ রয়েছে? কোথায়,কোনদিকে শিবের মূর্তি রাখলে সব অমঙ্গল দূর হবে

তাৎপর্য

হিন্দু পুরাণ যেমন ভবিষ্যথরা পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ এবং মহাভারতে, সাবিত্রী ব্রত বা ভাত পূর্ণিমার মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। জানা যায়, নরকের অধিপতি যম যখন সাবিত্রীর স্বামী সত্যবানকে নিতে এসেছিলেন, সেই সময় স্বামীর জীবন ফিরিয়ে দিতে যমকে কাতর অনুরোধ করেছিলেন সাবিত্রী। কিন্তু অপারগ যম সাবিত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে বলেছিলেন, কছিন ব্রত ও উপবাসের মধ্যে দিয়ে স্নামীর প্রতি নিষ্ঠা পরিবেশন করলে তিনি সত্যবানের জীবন ফিরিয়ে দেবেন। সাবিত্রীর ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে সত্যবানকে সঙ্গে না নিয়ে ফিরে যান মৃত্যুর দেবতা যম। এই দিন, মহিলারা বটবৃক্ষ গাছকে উপাসনা করেন। তার কারণ হিন্দু মতে, বটবৃক্ষ আদতে ত্রিমূর্তি-ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের প্রতীক। তাই সারাদিন উপবাস রেখে বটবৃক্ষকে পুজো করে স্বামীর জীবনরক্ষার জন্য ব্রত পালন করে থাকেন মহিলারা।

পৌরাণিক কাহিনি

জানা যায়, মাদ্রা নামে একটি রাজ্যের রাজা অশ্বপতি এবং রানী মালাভি দেবী সাবিত্রীর উপাসনা করতেন। দেবীর কৃপায় তাঁদের কোলে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে কন্যা, নাম রাখা হয় সাবিত্রী। ছোট থেকে দেবী সাবিত্রীর আরাধনায় মগ্ন থাকত ও। একদিন রাজা তাঁর মেয়েকে নিজের জীবনসঙ্গী খুঁজতে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি রাজ্যে তপস্বী জীবন যাপন করেছিলেন এবং পরে তিনি যখন বড় হন, রাজা, তার বাবা তাকে নিজেকে একজন স্বামী খুঁজতে বেরিয়ে যেতে বলেছিলেন। তিনি নির্বাসিত রাজার পুত্র সত্যবানকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। তবে সত্যবানকে স্বামী হিসেবে মেনে নেওয়ার সময় নারদ মুনি তাঁকে সতর্ক করেছিলেন যে সত্যবান এক বছরের মধ্যেই মারা যাবেন। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী শুনেও নিজের সিদ্ধান্ত অনড় ছিলেন সাবিত্রী। বিয়ের পরে তিনি স্বামীর সঙ্গে বনবাস যাপন করতে থাকেন। নারদমুনির কথা মতো, এক বছরের মধ্যেই মারা যান সত্যবান। এমন কঠিন পরিণাম মানতে পারেননি সাবিত্রী। তাই স্বামীর দেহ বটবৃক্ষের তলায় রেখে ব্রত ও সাধনাকে বেছে নেন তিনি। স্বামীকে বাঁচাতে নরকের অধিপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে অনুরোধ জানান। সাবিত্রীর প্রার্থনায় মুগ্ধ হয়ে যমরাজ তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। সত্যবানের প্রাণ না নিয়েই তিনি স্বর্গে ফিরে যান। মৃত্যুসজ্জা থেকে ফিরে আসেন সাবিত্রীর স্বামী সত্যবান। শুধু তাই নয়, সাবিত্রীর ভক্তিতে সাড়া দিয়ে তাঁকে পুত্রসন্তানের বর প্রদান করেন।

আরও পড়ুন: সত্যনারায়ণের নৈবেদ্য সাজানোর নিয়ম না মানলে হতে পারে অমঙ্গল!

পূজা বিধি

– সূর্যোদয়ের আগে মহিলারা জলের মধ্যে তিল ও আমলা দিয়ে স্নান সেরে নতুন পোশাক, চুরি, টিপ, সিঁদুর পরেন।

– এইদিন মহিলারা উপবাস রাখে। খাবার হিসেবে ফলের শিকড়, সবজির মূল খেয়ে থাকেন।

– বট পূর্ণিমার দিন বটগাছকে দেবতা হিসেবে পুজো করা হয়। তবে বট গাছ না পাওয়া যায়, তাহলে বিকল্প হিসেবে  বটগাছের একটি ডালকেও পুজো করা হয়ে থাকে। যদি তাও না পাওয়া যায় তাহলে একটি কাঠের প্রতিকৃতিতে হলুদ ও চন্দন দিয়ে সাজিয়ে পুজো করার নিয়ম রয়েছে।

-পুজোর সময় জল, ফুল, চাল, ছোলা বীজ , সুতো এবং বাড়িতে তৈরি বিশেষ খাবার বটগাছের তলায় রেখে দেবতাদের অর্পণ করা হয়।

– মহিলারা এদিন বটগাছে চারপাশে হলুদ ও লাল সুতো দিয়ে জড়িয়ে পরিক্রমা করেন।

– বট পূর্ণিমার দিন সাবিত্রী সত্যবানের ব্রতকথা পাঠ করেন বিবাহিত মহিলারা।

– এই দিন স্বামীর মঙ্গল কামনায় কিছু খাবার, টাকা-পয়সা, বস্ত্র দুঃস্থদের দান করা হয়।