Vat Purnima Vrat 2022: এদিন বটবৃক্ষ পুজো করলে স্বামী-সন্তান থাকে সুস্থ ও সবল! জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার গুরুত্ব কী?
Banyan Tree: হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় এই ব্রত পালন করা হয়। দক্ষিণ ভারতে এই বিশেষ ও উল্লেখযোগ্য ব্রতকে আমন্ত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সাবিত্রী ব্রত বলে থাকে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে বটবৃক্ষের (Banyan Tree) অপার মহিমা বলা হয়েছে।এই গাছ ত্রিমূর্তি, বাকলের মধ্যে বিষ্ণু, মূলে ব্রহ্মা এবং শাখায় শিবের প্রতীক। এই গাছটি দীর্ঘকাল নবায়নযোগ্য থাকে, তাই একে ‘অক্ষয়বত’ও বলা হয়। সৌভাগ্যবতীর বর পাওয়ার পাশাপাশি এই বটগাছটি স্বাস্থ্যের জন্যও পুজো করা হয়। আগামী ১৪জুন জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হবে বট পূর্ণিমা ব্রত (Vat Purnima Vrat)। এই দিনে বিবাহিত মহিলারা ষোলটি সাজের পর বটবৃক্ষের Vat Vriksh )পূজা করেন। হিন্দু মতে, স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায় ও পরিবারের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিবাহিত মহিলারা বট পূর্ণিমা ব্রত পালন করে থাকেন। হিন্দু শাস্ত্র মতে বহু ব্রত পালেনর উল্লেখ রয়েছে, তার মধ্যে এই ব্রত অন্যতম। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় এই ব্রত পালন করা হয়।
সাধারণত, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের বিবাহিত হিন্দু মহিলারা জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বট পূর্ণিমা ব্রত পালন করেন। এদিন বটবৃক্ষকে ঘিরে পুজো, ব্রত উত্সব পালন করেন বিবাহিত মহিলারা। ভগবান শিবও বটগাছের নিচে ধ্যান করতেন বলে জানা যায় বি্ভিন্ন পুরাণে। বটগাছ অনেক ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ। দেবতার মতো বিবেচিত বটবৃক্ষকে সকল ইচ্ছা পূরণের কেন্দ্র বলে মনে করা হয়।
তারিখ- এ বছর বট পূর্ণিমা ব্রত পালিত হবে ১৪ জুন। তিথি- পূর্ণিমা তিথি ১৩ জুন রাত ৯টা ২ মিনিট থেকে শুরু হবে। সমাপ্তি হবে ১৪ জুন বিকেল ৫টা ২১ মিনিটে।
তাৎপর্য
হিন্দু পুরাণ যেমন ভবিষ্যথরা পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ এবং মহাভারতে, সাবিত্রী ব্রত বা ভাত পূর্ণিমার মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। জানা যায়, নরকের অধিপতি যম যখন সাবিত্রীর স্বামী সত্যবানকে নিতে এসেছিলেন, সেই সময় স্বামীর জীবন ফিরিয়ে দিতে যমকে কাতর অনুরোধ করেছিলেন সাবিত্রী। কিন্তু অপারগ যম সাবিত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে বলেছিলেন, কছিন ব্রত ও উপবাসের মধ্যে দিয়ে স্নামীর প্রতি নিষ্ঠা পরিবেশন করলে তিনি সত্যবানের জীবন ফিরিয়ে দেবেন। সাবিত্রীর ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে সত্যবানকে সঙ্গে না নিয়ে ফিরে যান মৃত্যুর দেবতা যম। এই দিন, মহিলারা বটবৃক্ষ গাছকে উপাসনা করেন। তার কারণ হিন্দু মতে, বটবৃক্ষ আদতে ত্রিমূর্তি-ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের প্রতীক। তাই সারাদিন উপবাস রেখে বটবৃক্ষকে পুজো করে স্বামীর জীবনরক্ষার জন্য ব্রত পালন করে থাকেন মহিলারা।
পূজা বিধি
– সূর্যোদয়ের আগে মহিলারা জলের মধ্যে তিল ও আমলা দিয়ে স্নান সেরে নতুন পোশাক, চুরি, টিপ, সিঁদুর পরেন।
– এইদিন মহিলারা উপবাস রাখে। খাবার হিসেবে ফলের শিকড়, সবজির মূল খেয়ে থাকেন।
– বট পূর্ণিমার দিন বটগাছকে দেবতা হিসেবে পুজো করা হয়। তবে বট গাছ না পাওয়া যায়, তাহলে বিকল্প হিসেবে বটগাছের একটি ডালকেও পুজো করা হয়ে থাকে। যদি তাও না পাওয়া যায় তাহলে একটি কাঠের প্রতিকৃতিতে হলুদ ও চন্দন দিয়ে সাজিয়ে পুজো করার নিয়ম রয়েছে।
-পুজোর সময় জল, ফুল, চাল, ছোলা বীজ , সুতো এবং বাড়িতে তৈরি বিশেষ খাবার বটগাছের তলায় রেখে দেবতাদের অর্পণ করা হয়।
– মহিলারা এদিন বটগাছে চারপাশে হলুদ ও লাল সুতো দিয়ে জড়িয়ে পরিক্রমা করেন।
– বট পূর্ণিমার দিন সাবিত্রী সত্যবানের ব্রতকথা পাঠ করেন বিবাহিত মহিলারা।
– এই দিন স্বামীর মঙ্গল কামনায় কিছু খাবার, টাকা-পয়সা, বস্ত্র দুঃস্থদের দান করা হয়।