Eid al-Adha 2021: কোরবানি ঈদ কেন পালন করা হয়? এই ঈদের নানা বিধিনিয়মগুলি জানুন

ইব্রাহিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই দিনটিকে একটি পশু বলি হিসাবে উদযাপন করেন এবং আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করেন।

Eid al-Adha 2021: কোরবানি ঈদ কেন পালন করা হয়?  এই ঈদের নানা বিধিনিয়মগুলি জানুন
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 21, 2021 | 10:19 AM

ঈদ মানে আনন্দ। এ আনন্দ পৌঁছে যায় সবার ঘরে ঘরে। সবার জীবন হয়ে উঠে আনন্দময় ও উৎসবমুখর। ঈদুল আজহা ত্যাগ ও আনন্দের দিন। ইসলাম আনন্দ-উৎসবের এ দিনকে ইবাদত-বন্দেগি দ্বারা মাহাত্ম্যপূর্ণ করেছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উত্সব হল ঈদ-উল-আধা বা বাকরা ঈদ। যা সাধারণ ভাবে বখরি ঈদ নামে পরিচিত। করোনা আবহের সারা বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে মুসলিম ধর্মে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য উত্সব। আত্মবলিদানের উত্সব এটি। ইসলামিক ক্যালেন্ডারের শেষ নমাস ধু-আল-হিসার দশম দিনে বখরি ঈদ পালন করা হয়। এই বছর ঈদ আল আধা বা বখরি ঈদ ২০-২১ জুলাই পালিত হচ্ছে।

এই উত্সবটি হজরত ইব্রাহিমকে সম্মান জানাতে উদযাপিত হয়। যিনি আল্লাহর জন্য তাঁর ১৩ বছরের পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি দিতে প্রস্তুত ছিলেন। সেই সময় থেকেই ইব্রাহিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই দিনটিকে একটি পশু বলি হিসাবে উদযাপন করেন এবং আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করেন।

এই বিশেষ দিনে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলেন মুসলিমরা। এ দিনের জন্য রয়েছে কিছু নিয়ম, যা কঠোরভাবে মেনে চলেন মুসলিমরা।

করণীয়

স্নান করা : ঈদের নামাজের আগে স্নান করা অত্যন্ত আবশ্যিক। আবদুল্লাহ ইবনে ওমরে বর্ণিত রয়েছে, ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে স্নান করার নিময় রয়েছে।

ঈদগাহে যাওয়া : ঈদগাহে একপথ দিয়ে যাওয়া ও অন্যপথ দিয়ে ফেরার নিয়ম রয়েছে। সম্ভব হলে ঈদগাহে হেঁটে যাওয়াও সুন্নত।

তাকবির পাঠ করা : ঈদের দিন তাকবির পাঠের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালাকে বেশি স্মরণ করা সুন্নত কাজ। পুরুষরা এ তাকবির উঁচু আওয়াজে পাঠ করবে এবং, মেয়েরা নীরবে।

ঈদের নামাজ আদায় : ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। ঈদের নামাজের আগে ও ফজরের নামাজের পরে কোনও নামাজ নেই। ঈদের নামাজের কোনও আজান ও ইকামত নেই।

শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদের দিনে ছোট-বড় সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা সুন্নত। ঈদের দিনে সাহাবায়ে কিরামদের সম্ভাষণ ছিল ‘তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’।

কোরবানি করা: ঈদুল আজহার দিনে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব বা পূণ্যের কাজ। কোরবানির মাংস নিজে খাবেন, নিজের পরিবারবর্গকে খাওয়াবেন, আত্মীয়স্বজনকে হাদিয়া-তোহফা দেবেন ও গরিব-দুঃস্থকে দান করবেন। কোরবানির সব জিনিস তিন ভাগে ভাগ করা। ১. নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য এক ভাগ। ২. আত্মীয়স্বজনের জন্য এক ভাগ। ৩. দরিদ্রদের জন্য এক ভাগ।

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা : পশুর রক্ত, আবর্জনা ও হাড় থেকে যেন পরিবেশ দূষিত না হয়, সেদিকে প্রত্যেক মুসলমানের সতর্ক হওয়া উচিত। কোরবানি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত, আবর্জনা ও হাড় নিরাপদ দূরত্বে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিতে হবে। তাই ঈদুল আজহায় পশুর রক্ত, আবর্জনা পরিষ্কারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও উদ্যোগ গ্রহণ করে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ।

বর্জনীয়

ঈদের দিনে রোজা: ঈদের দিনে রোজা রাখা হারাম।

ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা

ঈদের নামাজ না পড়ে আনন্দ-ফুর্তি : অনেকে ঈদের আনন্দে মশগুল হয়ে নতুন জামা-কাপড় পরিধান, সেমাই, ফিরনি ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, ঈদের নামাজ আদায় করার কথা ভুলে যায়। অথচ এই দিনে ঈদের নামাজ ও কোরবানি করাই হচ্ছে মুসলমানদের মূল কাজ।

মুসাফাহা-কোলাকুলি এ দিনে জরুরি মনে করা : ঈদগাহে বা ঈদের দিন সাক্ষাৎ হলে মুসাফাহা ও মুআনাকা (কোলাকুলি) করতেই হবে। কারণ মুসাফাহা ও মুআনাকা করার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি হয়।

কোরবানির কোনও কিছু বিক্রি করা: কোরবানির মাংস, চামড়া ও এর কোনও অংশ বিক্রি করা যাবে না। অর্থাৎ বিক্রি করে নিজে উপকৃত হওয়া যাবে না। এমনকি কসাইকে পারিশ্রমিকস্বরূপ মাংস দেওয়া নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: রাখি বন্ধন কবে থেকে শুরু হল? এর নেপথ্যে পৌরাণিক ইতিহাস অনেকেরই অজানা!