কোথায় আর সচিন-যুবি! ধোনি জমানার এক যুগ পর চিপকে বিরাট ব্যর্থতা
এক যুগ পর ভারতীয় ক্রিকেটের গর্বের চিপকে নেমে এল লজ্জা। চতুর্থ দিনে ওয়াশিংটনের ব্যাট হাতে লড়াই। দিনের শেষে বল হাতে ঘূর্ণিঝড় অশ্বিনের। তবুও পঞ্চমদিনে ভারতীয় টপঅর্ডারের চরম ব্যর্থতায়, এক যুগ আগের চিপকের স্মৃতির ফিরল মেরিনা বিচের ধারে। নিদেনপক্ষে ব্রিসবেনের গর্বও নয়। ৬ জন ব্যাটসম্যান পেরোতেই পারলেন না এক অঙ্কের রান।
চেন্নাই: মঙ্গলবার সূর্য যখন মধ্যগগনে, তখন ব্রিসবেনে উদিত হওয়া ভারতীয় টেস্ট কীর্তি মেরিনা বিচে অস্তমিত হচ্ছে। আর্চারের বলে বুমরার খোঁচা যখন বাটলারের দস্তানাবন্দি হচ্ছে, তখন ব্রিসবেনের বীরগাথা এক নিমেষে চুপসে গেল চিপকে(Chepauk Stadium)। স্বপ্ন দেখা ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বপ্ন দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট হারাতে থাকে টিম ইন্ডিয়া। ফল ১৯২ রানেই শেষ ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস।২২৭ রানে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হার বিরাট(Virat Kohli) ব্রিগেডের।
শুভমন গিলের(Shubhman Gill) ৫০। ক্যাপ্টেন কোহলির ৭২। ব্যাস, শেষ আর্চার(Jofra Archer)-স্টোকসের(Ben Stokes) বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের যাবতীয় কারিকুরি। আর বিরাটদের টপঅর্ডার দেখে ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদরা তো টাইমমেশিন চেপে ফিরে গেলেন এক যুগ আগে।
২০০৮-য়ের ডিসেম্বর। এই চিপকেই তো ব্যাট হাতে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর(Sachin Tendulkar), যুবরাজ সিংরা(Yuvraj Singh)।
প্রতিপক্ষ ছিল সেই ইংল্যান্ডই। দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য সে বার ধোনির ভারতের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮৭ রান। মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে সেই রান তুলে পিটারসনের ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছিল ধোনির ভারত। ভারতের মাটিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের ইতিহাসের তালিকায় ১ নম্বরে ধোনির (Mahendra Singh Dhoni)দলের ২০০৮-য়ের সেই কীর্তিই।
৩৮৭ রান তাড়া করতে নেমে মাস্টার ব্লাস্টারের অতিমানবীয় ১০৩ নট আউটের ইনিংস এখনও ক্রিকেট লোকগাথায়। ৮৫ রানে অপরাজিত থেকে দুরন্ত সঙ্গত ছিল যুবরাজের। বড় রান এসেছিল গম্ভীর-সেওয়াগের চওড়া ব্যাট থেকে।
এক যুগ পর ভারতীয় ক্রিকেটের গর্বের চিপকে নেমে এল লজ্জা। চতুর্থ দিনে ওয়াশিংটনের ব্যাট হাতে লড়াই। দিনের শেষে বল হাতে ঘূর্ণিঝড় অশ্বিনের। তবুও পঞ্চমদিনে ভারতীয় টপঅর্ডারের চরম ব্যর্থতায়, এক যুগ আগের চিপকের স্মৃতির ফিরল মেরিনা বিচের ধারে। নিদেনপক্ষে ব্রিসবেনের গর্বও নয়। ৬ জন ব্যাটসম্যান পেরোতেই পারলেন না এক অঙ্কের রান।
৩ জন ব্যাটসম্যান আউট শূন্য রানে। এই ইংল্যান্ডে গ্রেম সোয়ান বা পন্টি পানেসর নামের কোনও জুজু নেই। স্পিন বলতে বেস-লিচের মত অনামী জুটি। সেই লিচের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন রাহানে-পূজারারা।৪ উইকেট লিচের।
আর ৩৮য়েও বল হাতে একইরকম ভয়ঙ্কর জেমস অ্যান্ডারসন (James Anderson)। জিমির ঝুলিতে ৩ উইকেট। আর তাতেই মেরিনা বিচের পাশেই ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের সলিল সমাধি।
২০১৭ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাটিতে টেস্ট হারল ভারত। অ্যাডিলেড টেস্টে লজ্জার ৩৬-য়ের পর পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন বিরাট। সেখান থেকে রাহানের ক্যাপ্টেন্সি অস্ট্রেলিয়ায় ইতিহাস গড়ে রাহানের ভারত। বাবা হওয়ার পর চিপকেই ছিল ক্যাপ্টেন কোহলির কামব্যাক টেস্ট। ফিরেও লজ্জার হার থেকে মুক্তি পেলেন না বিরাট। আর এই হারের পর থেকেই প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, রাহানে-কে এখন স্টপগ্যাপ অধিনায়ক হিসেবেই ভাবা হবে?