AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Nitish Rana, KKR: নাইটদের নতুন নেতা নীতীশ, সঠিক সিদ্ধান্ত, নাকি ঝুঁকি নিয়ে ফেলল কিং খানের টিম?

KKR, IPL 2023 : এখনও অবধি ব্যাটিংয়ে তাঁর যা পারফরম্যান্স, নেতৃত্বের চাপে আরও অবনতি হলে? অধিনায়ক খুঁজতে গিয়ে মিডল অর্ডারে যেটুকুও বা ভরসা দিচ্ছিলেন ব্যাট হাতে, সেটাও না হাতছাড়া হয়!

Nitish Rana, KKR: নাইটদের নতুন নেতা নীতীশ, সঠিক সিদ্ধান্ত, নাকি ঝুঁকি নিয়ে ফেলল কিং খানের টিম?
Image Credit: KKR
| Edited By: | Updated on: Mar 27, 2023 | 8:14 PM
Share

দীপঙ্কর ঘোষাল

অধিনায়ক বাছাইয়ের মাপকাঠি কী হতে পারে? টিমের সেরা পারফর্মার, টিমকে তাতাতে পারার ক্ষমতা, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কোয়ালিটি, যে কোনও কঠিন পরিস্থিতিতেও সামনে থেকে লড়াই করার মানসিকতা। কয়েক সপ্তাহ ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরে ঘোরাফেরা করছিল একটাই প্রশ্ন, কবে হবেন টিমের অধিনায়ক? শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন। কেকেআর (KKR) টিম ম্যানেজমেন্ট যদিও আশ্বাস দিচ্ছে, পরের দিকের ম্য়াচগুলিতে পাওয়া যেতে পারে শ্রেয়সকে। বোর্ড সূত্রের খবর, বোর্ডের তরফে অস্ত্রোপচারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এ বছর ঘরের মাঠে ওডিআই বিশ্বকাপ। অস্ত্রোপচার হলে বিশ্বকাপেও শ্রেয়সকে না পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। শ্রেয়সের পরিবর্তে আর কে ক্যাপ্টেন হতে পারতেন? কোন অঙ্কে নীতীশ রানাকেই (Nitish Rana) ক্যাপ্টেন করা হল। এই সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক! নাকি হঠকারি একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স? উত্তর খুঁজল TV9Bangla

কোন পাঁচ কারণে নীতীশ অধিনায়ক?

  1. কলকাতা নাইট রাইডার্সের নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে রাখা হয়েছিল আন্দ্রে রাসেলকে। নতুন মরসুমে প্রস্তুতির শুরু থেকে কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সঙ্গে আলোচনায় দেখা গিয়েছে রাসেলকে। নাইটদের প্রাণভোমরা যে রাসেল, সন্দেহ নেই। সব অর্থে ম্য়াচ উইনার। রাসেলই কি কেকেআরের অধিনায়ক হচ্ছেন, প্রশ্ন ছিল। নেতৃত্বের বাড়তি চাপ রাসেলের স্বাভাবিক খেলার প্রতিবন্ধকতা হতে পারে। সম্ভবত এই ভাবনা থেকেই নেতৃত্বের দৌড় থেকে সরিয়ে রাখা হয় রাসেলকে।
  2. কলকাতা শিবিরে আর এক ম্য়াচ উইনার সুনীল নারিন। শুধু বোলিং নয়, অলরাউন্ডার হিসেবে দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। প্রয়োজনে ওপেন করেছেন, মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছেন। দল যে ভূমিকায় চেয়েছে, ভরসা দিয়েছেন। কেন নারিন ক্যাপ্টেন নন? নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা কম থাকা, আবু ধাবির টি-টোয়েন্টি টিমে নেতা হিসেবে সাফল্য় না পাওয়া কারণ হতে পারে।
  3. সাকিব আল হাসান কেন নেতা হলেন না? জাতীয় টিম কিংবা ফ্র্য়াঞ্চাইজি, নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ভরপুর সাকিবের। কিন্তু কেকেআরের প্রথম একাদশে বিশ্বের অন্য়তম সেরা অলরাউন্ডারের জায়গাই নিশ্চিত নয়। স্কোয়াডে নারিন রয়েছেন। কোন কন্ডিশনে খেলা হবে, তার উপর নির্ভর করে সাকিবকে খেলানো হবে কিনা। জাতীয় দলের ম্য়াচ থাকায় পুরো আইপিএলে নাও পাওয়া যেতে পারে তাঁকে।
  4.  নেতৃত্বের দৌড়ে সেরা বিকল্প হতে পারতেন টিম সাউদি। জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন এই কিউয়ি পেসার। সব টিমকেই বিদেশি কোটা মেনে চলতে হয়। সাউদিকে সব ম্য়াচে খেলানো নাও হতে পারে। যে কারণে ভাবনা থেকে তাঁকে হয়তো বাদ দেওয়া হয়েছে।
  5. এমন একজনকে নেতা হিসেবে খোঁজা হচ্ছিল, যিনি টিমে নিয়মিত, ভারতীয় এবং মেকশিফট নেতা হিসেবে কাজ চালিয়ে দিতে পারেন। অর্থাৎ, শ্রেয়স আইয়ার যদি চোট সারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে ফিরে আসেন, তা হলে নীতীশকে সরাতে সমস্যা হবে না টিম ম্যানেজমেন্টের। তিনি যদি দারুণ কিছু করেন, তবেই চাপ। টিমের সিনিয়র হিসেবে নীতীশ টিম ম্যানেজমেন্টের পার্ট। কিন্তু নীতীশ এটাও ভালো করে জানেন, শুধু নেতা হলেই চলবে না, তাঁকে ধারাবাহিক হতে হবে। পারফর্ম করতে হবে নিয়মিত।

এ তো গেল, কোন যুক্তিতে নীতীশ রানা কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হলেন। কিন্তু প্রশ্ন যে তাও থেকে যাচ্ছে। নীতীশকে নেতা নির্বাচন কি সঠিক? যাঁর ব্য়ক্তিগত পারফরম্য়ান্সও সমীহ জোগানোর মতো নয়, তাঁকে নেতা বাছা হলে টিমকে টানতে পারবেন কিনা, মোটিভেট করতে পারবেন কিনা টিমমেটদের, তা নিয়েও যে থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রেও থাকছে কিছু যুক্তি। তাই তুলে ধরা হল।

  1. কলকাতা নাইট রাইডার্সে এ বার কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কোচ হিসেবে তাঁর সাফল্য় ঈর্ষণীয়। ফ্র্য়াঞ্চাইজি ক্রিকেটেও তিনি কতটা সাফল্য় পাবেন, টুর্নামেন্ট না এগোলে বলা কঠিন। নীতীশ ক্য়াপ্টেন হলেও ‘ডেভিস কাপ’ ধাঁচে টিম চালাবেন কেকেআর ক্যাপ্টেনই। অর্থাৎ, নন প্লেয়িং ক্য়াপ্টেন থাকবেন চন্দ্রকান্তই।
  2. ২০১৮ সাল থেকে টানা কলকাতা নাইটার্সে খেলছেন নীতীশ রানা। কেকেআরে প্রথম মরসুমে ১৫ ম্য়াচে তাঁর রান ৩০৪। হাফসেঞ্চুরি মাত্র ১টি। ২০১৯ সংস্করণে ১৪ ম্য়াচে (১১ ইনিংস) তাঁর অবদান ৩৪৪। গত দুই সংস্করণের কথাই ধরা যাক। ২০২১ সালের আইপিএলে ১৭ ম্য়াচে (১৬ ইনিংস) তাঁর অবদান ৩৮৩ রান। হাফসেঞ্চুরি মাত্র ২টি। গত বারের আইপিএলে ১৪ ম্য়াচে ৩৬১। হাফসেঞ্চুরি ২টি। কেরিয়ার গড় ২৮ এর একটু বেশি, স্ট্রাইকরেট ১৩৪-এর সামান্য় বেশি। পার্টটাইম স্পিন বোলিংও করেন নীতীশ রানা। কেকেআরের জার্সিতে ১৭ ম্য়াচে তাঁর শিকার ৭ উইকেট। ম্যাচ উইনার হিসেবে ভাবা হলেও কখনওই তেমন ভরসা দিতে পারেননি।
  3. ব্য়ক্তিগত পারফরম্য়ান্সের নিরিখে নীতীশ রানা সমীহ জাগাতে পেরেছেন? তবু তাঁকে অধিনায়ক করার দুটো কারণ হতে পারে, দিল্লির হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা, ২০১৮ থেকে টানা কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলা। এখনও অবধি ব্য়াটিংয়ে তাঁর যা পারফরম্য়ান্স, নেতৃত্বের চাপে আরও অবনতি হলে? অধিনায়ক খুঁজতে গিয়ে মিডল অর্ডারে যেটুকুও বা ভরসা দিচ্ছিলেন ব্য়াট হাতে, সেটাও না হাতছাড়া হয়!
  4. ২০২১ সালে জাতীয় টিমে প্রথম বার ডাক পেয়েছিলেন নীতীশ। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচ মিলিয়ে ১৫ রান করেছিলেন বাঁ হাতি ব্যাটার। সেই শুরু সেই শেষ। তারপর আর তাঁকে দেখাই যায়নি জাতীয় টিমে। ২৯ বছরের নীতীশ রানা নিজের কেরিয়ার গ্রাফ কি বদলাতে পারবেন এ বার?