Rohit Sharma: দারিদ্র ও অনিশ্চয়তায় কেটেছে ছেলেবেলা, ‘হিটম্যান’-এর জীবনের এই দিক জানতেন?

জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। বাড়িতে সুন্দরী স্ত্রী, ফুটফুটে কন্যা। ঝাঁ চকচকে, পরিপূর্ণ জীবন রোহিত শর্মার। যা দেখে আজকের 'হিটম্যান'-এর অতীত জীবন সম্পর্কে ধারণা করতেও পারবেন না। জানেন কি, ছেলেবেলার অধিকাংশ সময়টাই অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন রোহিত।

Rohit Sharma: দারিদ্র ও অনিশ্চয়তায় কেটেছে ছেলেবেলা, 'হিটম্যান'-এর জীবনের এই দিক জানতেন?
মা-বাবার সঙ্গে রোহিতImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 6:18 PM

কলকাতা: নাগপুর থেকে মুম্বইয়ের ডোম্বিভেলিতে চলে এসেছিলেন শর্মা দম্পতি গুরুনাথ ও পূর্ণিমা শর্মা। দুই সন্তানকে মানুষ তো করতে হবে। কিন্তু সেই সামর্থ্য কোথায় পেশায় কেয়ার টেকার গুরুনাথের। এদিকে ছেলেরা বড় হচ্ছে। ভর্তি করতে হবে স্কুলে। মুম্বইয়ে (Mumbai) আসার পর দুই ছেলে রোহিত ও বিশালকে দাদু-দিদা ও কাকার কাছে রেখে আসেন। ডোম্বিভেলির এক কামরার ঘরটিতে চারজনের স্থান সঙ্কুলান হত না। সপ্তাহান্তে বোরিভেলির দাদুর বাড়ি থেকে রোহিত ও বিশাল ডোম্বিভেলিতে আসার অনুমতি পেতেন। দারিদ্র আর অনিশ্চয়তা, ছেলেবেলাটা এভাবেই কেটে গিয়েছে বর্তমান ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma)। ক্রিকেট জীবনের সাফল্য ও বিলাসবহুল জীবন অতীতের সব কষ্ট মুছে দিয়েছে। কারণ ডোম্বিভেলির এক কামরার ঘরের বাসিন্দা শর্মা দম্পতির বড় ছেলেটি কোনওদিন স্বপ্ন দেখতে ভোলেননি।

১৯৮৭ সালের ৩০ এপ্রিল নাগপুরে রোহিতের জন্ম। সেইসময় একটি ফার্মের কেয়ার টেকার ছিলেন গুরুনাথ শর্মা। স্ত্রী পূর্ণিমার সময় কেটে যেত দুই ছেলেকে মানুষ করতে। দেড় বছর বয়সে নাগপুর থেকে মুম্বইয়ে এসে দাদু দিদার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন রোহিত। ভর্তি হন মুম্বইয়ের স্কুলে। মুম্বইয়ের স্কুলগুলিতে ক্রিকেট নিয়ে ক্রেজ অজানা নয়। সবাই চায় ব্যাটকে ছড়ি বানিয়ে সচিন তেন্ডুলকর, সুনীল গাভাসকর হয়ে বাইশ গজে রাজত্ব করতে। কচি বয়স থেকে স্বপ্নের বীজটা বপন হয়ে গিয়েছিল রোহিতের অন্দরে। বাড়ির সদস্যরাও ক্রিকেটপ্রেমী হওয়ায় সারাদিন ক্রিকেট নিয়েই চলত আলোচনা। খেলাটির প্রতি রোহিতের ঝোঁক দেখে ১৯৯৯ সালে একটি ছোটখাটো মানের ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তির জন্য আর্থিক সাহায্য করেন কাকা ও তাঁর বন্ধুরা। শুরু হয়ে যায় ‘ক্রিকেটার রোহিত’ তৈরির সফর।

বর্তমানে ‘হিটম্যান’ নামে পরিচিত রোহিত কোচ দীনেশ লাডের তত্ত্বাবধানে শুরুটা করেছিলেন অফ স্পিনার হিসেবে। ছাত্রের প্রতিভা দেখে কোচ স্বয়ং স্কুল পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন। সে সময় ভালো কোচিং ও আধুনিক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক স্কুলে। কিন্তু সে তো প্রচুর টাকার ব্যাপার! পরিবারের আর্থিক অবস্থার জন্য ইতস্ততবোধ করেছিলেন রোহিত। সেবারও মুশকিল আসান হয়ে এসেছিলেন দীনেশ লাড। কোনওভাবে রোহিতের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে ফেলেন। এতে চার বছরের জন্য নিখরচায় কোচিং নিতে পারতেন রোহিত। ব্যাট হাতে রোহিতের দক্ষতা এড়ায়নি কোচের চোখ। তাঁর পরামর্শে ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করেন রোহিত শর্মা।

স্কুলজীবনে সাধারণত ৮, ৯-এ ব্যাট করতে নামা রোহিতকে হঠাৎই ওপেনিংয়ে তুলে আনেন কোচ দীনেশ লাড। কোচের ভরসার মর্যাদা দিয়েছিলেন। প্রথম আন্তঃ স্কুল ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে করেন অপরাজিত ১২০ রান। এই চার বছরে ব্যাটিংয়ের খুঁটিনাটি টেকনিক শেখার দিকে মনোযোগ দেন। জহুরির চোখ জহর না-চিনলে আজকের রোহিতকে কি পেত ভারতীয় ক্রিকেট?